রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০০৭

ব্লগীয় সালতামামি ২০০৭

কোন মন্তব্য নেই :
এক বছরের বেশী সময় ধরে সামহোয়্যারইনের "বাঁধ ভাঙার আওয়াজ" ব্লগের সদস্য। ঠিক মনে নেই কি ভাবে এ ব্লগের সন্ধান পেয়েছিলাম, খুব সম্ভবত গুগলের সার্চ করতে গিয়েই! ভালোলাগা থেকেই শুরু। লেগে আছি ব্লগেই হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও।

১।

বাংলায় টাইপ করার কোনরকম পূর্ব অভিগ্যতা না থাকায় প্রথম প্রথম প্রচন্ড সমস্যা হতো। ৩ শব্দের এক বাক্য টাইপ করতে সময় লাগতো ৩ মিনিট। হাঁটি হাঁটি পায়ে পায়ে শুরু করলাম লেখা। এ সময় বেশ সাহায্য পেয়েছিলাম ব্লগার এস এম মাহবুব মুর্শেদের কাছ হতে। তার উদ্ভ্রান্ত ইয়াহু থেকে বিশাল এক মেইল পেয়েছিলাম যা অনেক কাজে এসেছিলো। অনেক কৃতগ্যতা মামুর কাছে।
প্রথম পোস্টের প্রথম কমেন্ট ছিলো শাওনের কাছ হতে, যা পরে অতিথি হয়ে গিয়েছিলো সামহোয়্যারইনের ইউনিকোড কারসাজিতে। কৃতগ্যতা শাওনের কাছ হতেই। শাওনের হাত খুলে লিখে যাবার আহবানে সারা দিতে গিয়ে হাত-পা-মুখ খুলে সেই যে লেখা শুরু করলাম, সে লেখা চলছেই। মাঝে সাজে ব্যক্তিগত-পেশাগত-পড়াশোনা-সাংসারিক ব্যস্তাতায় লেখার চেষ্টা কমে গেলেও বন্ধ থাকেনি।

২।

ব্লগের মাধ্যমে অনেকের সাথেই পরিচিত হবার সৌভাগ্য হয়েছে যা ব্লগের না আসলে কখনই সম্ভব হতো না।
জামাল ভাস্কর, মৌসুমের মতো সাহসী ও সাদা মানুষকে পেয়েছিলাম ব্লগের মাধ্যমেই।
প্রত্যুৎপন্নমতিত্য এবং তিমুরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ব্লগের মাধ্যমেই, ব্লগের মাধ্যমেই বন্ধুত্বের সুচনা যা ব্যক্তিগত জীবনেও বন্ধুত্বের সূচনা করেছে।
শুভ ভাইয়ের মমতা-ভাতৃত্ব-ভালোবাসার সন্ধান পেতামই না যদি ব্লগে না আসা হতো।
গুরু আরিফ জেবতিকের স্বেচ্ছা শীষ্যত্ব গ্রহনও ব্লগের মাধ্যমেই।
ঝড়ো হাওয়ার বাসায় গিয়ে মমতা-ভালোবাসার আঘাতে জর্জরিত হবার সৌভাগ্য হতো না ব্লগে না আসলে।
ভাস্করদার বাসায় রাগইমনের সাথে সামনা সামনি দেখা করার সৌভাগ্য-দূর্ভাগ্য দুটোই হয়েছে, মনে হয়েছে ভদ্রমহিলা খোলা মেলা মনের হলেও মাথায় কিন্চিত সমস্যা আছে।
ব্লগ জীবনের প্রথম অংশগুলোতে কৌশিকদার গালা-গালীতে জর্জরিত হতে হলেও সেই মানুষটির হাস্যজ্বল আচরনের সাথে পরিচিত হতে পারতাম না ব্লগে আসলে।
অন্ধকার ভাইয়ের সাথে দেখা হবার সৌভাগ্য ব্লগের মাধ্যমেই। আজিজের অন্তরে উনার সৌজন্যে পেটপূজা বা শর্মা খাবার কথা ভুলো কি ভাবে? ত্রিভুজ ছাগলের সাথে পরিচিত হবার সময় আবিস্কার করলাম দুপেয়ে একজন কিভাবে ব্লগে ছাগলের মতো আচরন ও লেখা লেখি করতে পারে। আস্তমেয়ের সাথে পরিচয় ব্লগে, সামনাসামনি দেখাও হয়েছে। তাকে দেখে অবাক হয়েছি একজন মানুষ কিভাবে ইসলামকে জামাতে ইসলামীর সাথে গুলিয়ে ফেলে এবং কিভাবে বিভ্রান্ত হয়ে যায় !! ছোট বোনের মতো দেখি আস্তকে,যদিও তার রাজনৈতিক চেতনার সাথে আপোষ করার দূর্ভাগ্য কোনোদিনই হবে না।
মাশা, আবু সালেহ, জানতে চাই, মাশিদের সাথে পরিচিত হলেও আলাপ করা হয়নি।
ফয়সাল আরেফিন "অণৃন্যের" সাথে দোস্তালী থাকলেও তার সাথে দেখা করতে পারিনি দোস্তের কোন এক অজানা কারনে।
আড্ডাবাজের সাথে দেখা করার থাকলেও উনার ডিগবাজীতে সেটা সম্ভব হয়নি।
অনেক শখ ও স্বপ্ন ছিলো বিষন্ব মানব নাজমুল আলবাব মামুর সাথে দেখা করার জন্য সিলেট যাবো, সম্ভব হয়নি। মনের টান যখন রয়েছে তখন ইনশাল্লাহ দেখা হবেই মামু ও উনার বাবাইয়ের সাথে।
আর অনেকের সাথেই আলাপ আছে মেসেন্জারে, ঘনিস্ঠতা হয়নি।
অনেকের সাথেই ফোনালাপ হয়েছে , যেমন; জ্বীনের বাদশা, ইরতেজা।

৩।

ব্লগে আসা মুলত বাংলার প্রতি পাগলপরা টান থেকেই। বাংলা লেখা ও পড়া থেকে দূরে থাকার যুগের বেদনা কিছুটা হলেও দূর করেছে বাঁধ ভাঙার আওয়াজ ব্লগ। ব্লগে মুলত লেখেন শখের অপেশাদার লেখকরা (যারা ব্লগার হিসেবেই পরিচিত হতে ভালোবাসেন ) যাদের অনেকেই প্রবাসী। দেশে বসেও অনেকেই লিখছেন। মনের যা আসে তাই লেখার চেষ্টা করেছি। হয়তো আনাড়ী সব লেখা মানোর্ত্তীন্ন হয়নি, তবুও নিজের স্মৃষ্টিতে নিজেই মুগ্ধ হয়েছি।



চার



অণৃন্য, বিপ্লব রহমান, মাসুম ভাইয়ের জীবন্ত সংবাদ প্রবাহ যেমন তাৎক্ষনিক সংবাদ পেতে সাহায্য করে ঠিক তেমনি আরাফাতুলের হেবো গল্প বেশ মজা দেয়।
তবে ব্লগে তথ্যবহুল লেখার প্রচুর অভাব লক্ষ্য করেছি। তারপরো অনেক লেখা পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে যা ব্লগে না আসলে কখনই সম্ভব হতো না।
আরিফ জেবতিক, শুভ ভাইয়ের আষেগময় কিন্তু কঠিন যুক্তিময় লেখাগুলো পড়তে পেরেছি। ভ্যালেরি মুভমেন্টের সময় আরিফ জেবতিকের লেখা ও নেতৃত্ব মনে থাকবে অনেক কাল।
জামাল ভাস্কর সম্ভবত ব্লগের একমাত্র বামপন্থি, ‌উনার অনেক লেখাই মাথার উপর দিয়ে গেলেও ভাবার প্রেরনা যুগিয়েছে প্রতিনিয়ত। রাজনীতি ও সমাজ নিয়ে উনার স্পস্ট অবস্থান ও কথন ভালো লেগেছে। প্রথম অবস্থায় একবার রাপাং খাপু নামে এক ব্লগারের সাথে উনার বিতর্ক উপভোগ করেছি অনেক।
পিয়াল ভাই এবং হাসান মোরশেদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা তথ্যবহুল লেখাগুলো সবসময় নিজের চেতনাকে জাগ্রত করতে সাহায্য করেছে। তবে মতের মিল না থাকায় এদের অনেকই আমাকে জামাতপন্থি বা সন্দেহভাজন বা মোল বলেছেন যা নিজেকে অনেকটুকুই আহত করেছে ( সম্ভবত এ ধারনা উনারা এখনো ধারন করেন !)।
তীরন্দাজ ভাইকে আমার প্রচন্ড সাদা মনের, বাস্তবমুখী , সাহসী ও সচেতন ব্লগার বলে মনে হয়েছে, যা তার ভক্তে পরিনত করেছে।
কৈশরের স্বপ্নের লেখক মাসকাওয়াথ আহসানকে ব্লগে পেয়ে কৈশরকে ফীরে পাই প্রতিনিয়ত।
সাদিকের কিছু লেখা ভালো লাগলেও তার কিছু লেখা তার অপরিপক্কতার প্রমান করেছে।
পাগলা হোসেইনের স্পস্ট বচন মুগ্ধ করে প্রতিনিয়ত। আমি যে তার এক ফ্যান সেটা মনে হয় সে জানে না ! আজ জানালাম।
ফাহমিদ ভাইয়ের পুরাতন লেখাগুলো নতুন করে পড়ার সৌভাগ্য হচ্ছে।
মিরাজ ভাইয়ের লেখা পড়ছি।
ডটেড রাসেলের রাসেলের লেখক ক্ষমতায় মুগ্ধ হই যদিও এই মানুষটি ব্লগ জীবনের প্রথম অংশে নোংড়া গালাগালী করে কস্ট দিয়েছিলো অনেক যা কখনই ক্ষমা করতে পারবো না। ডটেড রাসেলের মাঝে লেখক ক্ষমতায় ইর্ষান্বিত হয়েছি সব সময়ই, তবে এ প্রতিভাকে মনে হয় সে নিজেই ধ্বংশ করে ফেলছেন।
কৌশিকদা বা আড্ডাবাজের লেখা স্বভাবসুলভ মধ্যবিত্ত সুলভ। সময়ে আগুন ঝড়ালেও সেটা সময়মতোই গর্তে লুকিয়েছে। জলপাই শাষনের প্রারম্ভে আরিফ জেবতিক বা জামাল ভাস্করের স্পস্ট অবস্থান দেখা গেলেও আড্ডাবাজ বা কৌশিকের মতো ব্লগারকে চুপ মেরে থাকা অবাক করেনি।
মুখফোরের লেখাগুলো আসলেই মারাত্মক তবে মুখফোরের পেছনের লেখককে কেনো জানি ভালো লাগেনি কখনই।
সুমন চৌধুরি ওরফে সাধক শংকুর রাজনৈতিক লেখার সাথে সাথে বিভিন্ন রসালো রেসিপি আমার মতো খাদ্য প্রেমিককে প্রেমায়িত করেছে। অপবাকের উপন্যাস আকৃতির রাজনৈতিক বিশ্লেষন পড়লেও ভালো লাগেনি, বড্ড একঘেয়ে।
ব্লগের সিরিয়াস ব্লগার রেজওয়ান ভাইয়ের ব্লগ সবময়ই ফলো করেছি ও করবো।
ব্লগার চোরকে দারুন মিস করি। ভালোলাগা-অপছন্দ-ভালোবাসা মেশানো এক ব্লগার। চোরের লেখাম কমেন্ট, কবিতা, তীব্র কিন্তু সরস কমেন্টগুলো ব্লগের সম্পদ হয়ে থাকবে। ‌উনিও ব্লগে ছেড়ে চলে গিয়েছেন তবে অন্য নামে কমেন্ট করেন বলে আমার ধারনা। ব্লগ একটি নেশা !!
আরেক সরস কিন্তু আগুন ব্লগার ধূসর গোধূলীকে মিস করি প্রতিনিয়ত।
আরো অনেকেই ব্লগ থেকে চলে গিয়েছেন, যাদের খুব একটা মিস করি না।

আস্তমেয়ের লেখক ক্ষমতা বা প্রতিভায় মুগ্ধ হলেও তার বিভ্রান্ত ধারনা দেখে অনেকসময় রেগেছি। ইসলামকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে জামাত প্রীতি মানতে পারিনি কোন সময়ই। তার লেখাকে অনেকসময়ই অন্যের দ্বারা লেখা মনে হয়েছে বিশেষ করে রাজনীতি ও ধর্ম নিয়ে লেখাগুলোকে। মাঝে মাঝে অবাক হই একজন মানুষ এতো প্রমান, এতো যুক্তির পরও কিভাবে অন্ধভাবে জামাতকে সমর্থন করেন। আল্লাহ উনার হেদায়েত করুন।

ত্রিভুজ , আশরাফ হোসেন , বিজলীর খড়ি বা ফজলে ইলাহীর মতো জামাতী ভন্ড, নব্য রাজাকারদের লেখা পড়তে না চাইলেও পড়েছি। ভাঙা কলের গানের মতো মিথ্যাচার পড়তে না চাইলেও শত্রুপক্ষের কথা জানতে সে সব পড়েছি ও কিছু ক্ষন পর পর টয়লেটে গিয়ে থুথু ফেলে এসেছি। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন।

পাঁচ

সাহিত্যের প্রতি অনাগ্রহ মূলত ব্লগের কবিতা-গল্ল-উপন্যাসের প্রতি তেমন একটি আকর্ষন করে না।
তারপরো নজমুল আলবাব, আনোয়ার সাদাত শিমুলের লেখা সবচাইতে বেশী টেনেছে, ব্লগের প্রিয় লেখক উনারা। জানা কিন্তু অজানা কারনে এরা আর লেখেন না এখানে।
অমিত আহমেদের লেখা পড়েছি, কোনটা দারুন, কোনোটা ভালো লেগেছে আবার কোনোটাবা মোটামুটি। অন্যতম পছন্দের লেখক।
মোহাম্মদ জুবায়েরর লেখা পড়েছি, তবে মাঝে মাঝে তা এতো ঝুলে গিয়েছে যে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছি।
হাসান মোরশেদের লেখা তেমন একটা আকর্ষব করেনি, যদিও উনার লেখনির স্টাইল অনুসরন করার চেষ্টা করি আমি।
মাহবুব মোরশেদের লেখা পড়েছি তবে সবগুলো ভালো লাগেনি। পোমো প্রজন্মের লেখা বলেই হয়তো !
পথিকের কবিতা বা রাগ ইমনের পাগলামী উপভোগ করতে পারি নাই।
শেখ জলিল ভাইয়ের সাথে পরিচয় উনার লেখার প্রতি আকৃষ্ট করেছে। অনেক মায়া নিয়ে উনি লেখেন।
ব্রাত্য রাইসুকে ক্ষেপানো খুব সহজ বলে উনাকে ক্ষেপিয়ে মজা পেয়েছি অনেক তবে ‌উনার কবিতা মিস করিনি।
মাশার লেখা দারুন লাগে, তবে আজ কাল উনি আর লেখেন না ব্লগে।‌

আমি যাদের কথা বলছি তার মুলত প্রথম দিককার লেখক/ব্লগার। নতুন অনেকেই এসেছেন যাদের লেখা পড়ি তবে তাদের কথা আসবে আগামী বছরে।


ছয়
সামহোয়্যারইন ব্লগে ব্লগিং শুরু করার আগে মুলত ব্লগিং করা হতো না। ব্লগস্পটে যা কিছু ছিলো তা মুলত দিনলিপি যা ইংলিশেই লেখতাম। সামহোয়্যার ইনে সন্ধান পাবার প্রথমদিকটায় মুলত পড়া হতো বেশি। ব্লগিং সম্পর্কে ছোট্ট কিন্তু দারুন এক উপকারী কিছু টিপস ছিলো শোহাইল মোতাহির চৌধুরির ব্লগে। সেটা এখনো অনুসরন করি।
সবার লেখাই পড়তাম, এখনো পড়ি। যখন লেখা শুরু করলাম তখন কমেন্ট পেতে খব ভালো লাগতো, এখনো লাগে। তবে ব্লগে কিছু ব্লগারকে দেখতাম সবার ব্লগে কমেন্ট না করতে " গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল জাতীয় নাক ঊঁচু ব্লগার"; এটা এখনো দেখা যায়।
অনেকসময়ই কমেন্টগুলো মুল পোস্টের চাইতেও সমৃদ্ধ হয়ে যায়। পোস্ট - কমেন্ট যোগ করে দারুন একটা ব্যাপার । বাঁধ ভাঙার আওয়াজ ব্লগের মুল আকর্ষনই সম্ভবত কমেন্ট বা মিথোস্ক্রিয়া। সেটা অনেক সময়ই ভব্যতার সীমা ছাড়িয়ে যায় । সেটা অতীতেও ছিলো এখনো আছে। মুলত কমেন্ট - পোস্ট পড়ে একজন ব্লগারের মনন- নীতি- আদর্শের অনেকটুকুই ধারনা পাওয়া যায়। একজন মধ্যবয়স্ক লোক যখন

শর্ষেই মাঝেই যে ভুত

২টি মন্তব্য :
বেশ অনেক বছর আগের কথা। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে , পরেরজন শুশুরবাড়ী ও অন্যরা স্কুলে। ঢাকায় ছোট্ট একটি ভাড়া বাসায় সবাই মিলে মিশে থাকছি। বাবা পেটের তাগিদে বৃহত্তর ফরিদপুরের ছোট্ট এক জেলায়, মা সংসার সামলান।

২ মহিলার একজন ক্ষমতায়।
পিতার মৃত্যুবার্ষিকীতে এলাকায় যাবেন।
বাবা ছিলেন জেলা টিকটিকিদের সর্দার। এলাকায় তুমুল ব্যস্ততা। এসএসএফ,ডিএফআই,এসবি,এনএসআই এর ব্যস্ততা। এলাকা সরগরম। পিজিআর এর সুইপিং শেষ, সব কিছু ঠিকঠাক। সবাই প্রতিক্ষায়।
প্রধানমন্ত্রি আসছেন।

এদিকে চায়ের দোকানের মালিক পুকুরের পানিতে খুঁজে পেলো নিরীহ কিছু তার।
কান টানলে মাথা আসে, তার টানতে আসলো বোমা।
দুবার সুইপিং করেও পিজিআর কিছু পেলোনা !!
এতো এতো ওয়াচারের মাঝেও কিভাবে সম্ভব? তাহলে কি শর্ষের মাঝেই ভুত?

এসএসএফ এর কিছু অফিসারের কোর্ট মার্শাল, জলপাইয়ের প্রবল চাপে তাও প্রহসনে পরিনত।
এদিকে টিকটিকিদের অবস্থা ত্রাহিত্রাহি। হরকতুল জিহাদের মুফতি হান্নানের কারখানা থেকে জংধরা রিভলভার, কিছু তার উদ্ধার। বাবাকে টানা দুবছর টেবিল-চেয়ার ছাড়া ঘুড়তে হোলো, আধা বেতনে। এখনো প্রমানিত হয়নি আসলে কে ছিলো সে ঘটনার আড়ালে। অনেক কিছু বলা গেলেও বলা আর হয়ে উঠে না।

২০০৪ সেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রির উপর গ্রেনেড হামলা, বেঁচে গেলেন। এবারো প্রমান হোলো না কে আছে এসবের পেছনে। তদন্ত চলছেই....পাকিস্তানে বেনজিরকে হত্যাকরা হোলো আত্মঘাতী বোমায়। পেছনের কারা আছে সেটা প্রমানিত হবে না কোনদিনই কিন্তু জানা আছে কারা আছে পেছনে।

সত্যকি অধরাই রয়ে যাবে?
নাকি শর্ষেই মাঝেই যে ভুত?
কতকিছু জানা, জানানো আর হয়ে উঠে না।

ঈদ কাহানী

কোন মন্তব্য নেই :
বিবাহপুর্ব - বিবাহ পরবর্তী জীবনের মাঝে আকাশ পাতাল বুঝতে পারছি।
আগে অর্ধ ভুক্ত থাকতাম , এখন পেট পুড়ে খেতে পারি;
জামা কাপড় ইস্ত্রি কাকে বলে সেটা জেনেও জানতাম না, এখন জামা কাপড় ইস্ত্রি করতে হয়;
পি.সির সামনে বসে টেবিলে পা তুলে মহা আনন্দে সিগারেট টানতে পারতাম, এখন বাহিরে গিয়ে টানতে হয়।
মাঝে মাঝে কস্টের আনন্দে গেয়ে উঠি " আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম........ "

বাসে একাকী অনেকগুলো ঈদ করতে বাধ্য হলেও এবারে দুজনে টানা দুবার ঈদ করলাম।
এবারের ঈদ টাও দারুন হোলো। গতবারের মতো তাড়াহুড়ো করতে হয়নি, পান্জাবি-পাজামা তৈড়িই ছিলো।

সকালে উঠেই নামাজ পড়তে গেলাম, একাই। বউ বেচারীকে সার্জারীতে যেতে হয়েছিলো।
নামাজ শেষে সুন্দরী সুন্দরী লেবানিজ -টার্কিশ মেয়েদের দেয়া ইয়াম্মি সব মিস্টি মিস করবে না কোনো বেকুবই। মিস্টির সাথে মেয়ে ফ্রি। ভাগ্যিস সাথে বউ ছিলো না। আমি আবার খেতে দারুন ভালোবাসি। আলহামদুল্লিলাহ, প্রত্যেকটা মিস্টিই ট্রাই করেছি। তবে কোলাকুলির সুযোগ হয়নি। জীবনে আরেকটা আফসোস রয়েই গেলো।

বিকেলে সাউথ কোস্টে গেলাম এক বন্ধুর সাথে। "বেটমেনস বে" বলে ছোট্ট একটি শহড়। টানা ২ ঘন্টার ড্রাইভ। রাস্তা দারুন হলেও অসংখ্য আঁকা বাঁকা ও বিশাল সব পাহাড় টপকানো, সাথে তুমুল বৃষ্টি , কিছু রাস্তা হাড়ানো।
রাস্তার আশে পাশের দৃশ্যগুলো অসাধারন। বিশাল বিশাল র‌্যান্চ , কোনোটা গরু - কোনোটা বা ভেড়া। মাঝে মাঝে ছোট্ট কিছু শহড়। সিনেমায় দেখা ওয়েষ্টার্ন শহড়গুলোর মতোই।

বৃষ্টির জন্য বেটমেনস বে তে বেশীক্ষন থাকা সম্ভব হয়নি, ফেরার তাড়া ছিলো। ৬০০ কিলোমিটার ড্রাইভ করে বাসায় যখন পৌঁছুলাম তখন রাত ১০ টা, চরম ক্লান্ত।
মাঝে এক কান্ট্রি ষ্টেশনে কফি বিরতি।

ঈদের পরেরদিন এক বন্ধুকে দাওয়াত খাওয়ালাম। পোলাও-মুরগির রোস্ট- রুই মাছ ভাজা এবং ছাগলের মাংস। আমার রান্না করা ছাগলের মাংস নাকি দারুন হয়েছিলো !! জনাব, আমার ঢোল আমি পিটাচ্ছি না, এটা জনগণের দেয়া সার্টিফিকেট। ভাবছি; ব্লগের ছাগলগুলো মাংস কিভাবে রান্না করবো !! ভুনা না রেজালা না কাবাব?

ক্যানবেরায় ওপেন হাউস বলে একটি বিষয় চালু আছে। ওয়েব সাইটে ওপেন হাউস লিস্ট দেয়া হয়। সবাই লিস্ট ধরে বাসায় বাসায় ঘুরে বেরায়, পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে। এমনি এক ওপেন হাউসে আজ এক আংকেলের বাসায় বেড়াতে গেলাম স্বস্ত্রীক। অনেকের সাথেই দেখা হোলো, তবে বাসায় ঢুকেও চোখ চলে গেলো যথারীতি খাবারের টেবিলের দিকে। বিশাল আয়োজন। খাবার টেবিলে গিয়ে হামলে পড়লাম, কতটুকু খেয়েছিলাম মনে নেই। বিকেলে বাসায় আসার আগে আংকেল বললেন আমি নাকি কিছুই খাই নি। অনুরোধের ঢেঁকি গিলে আমি আবার তিন প্লেট খেলাম। গুনেছি, সব মিলে ১২ পদ ছিলো। বাসায় এসে দেখি পেট ফুলে ঢোল।

সামনে আরো কিছু দাওয়াত আছে। ব্লগার অমিত আসছেন ক্যানবেরায়, ক্রিসমাস পার্টি, ৩১ এ সিডনী ভ্রমন, সেখানে কিছু দাওয়াত। অনেক দাওয়াত অনেক খাবার।‌

চিন্তায় আছি অনেক। সম্ভবত ভুঁড়ি বাড়ছে।

রবিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০০৭

বিজয় দিবসের ডেবিট ক্রেডিট

কোন মন্তব্য নেই :
বছর ঘুরে আরেকটি বিজয় দিবস।প্রতিটি বিজয় দিবসেই হিসেবের খাতা খুলে বসি; কি পেয়েছি ,আর কি পাইনি। হিসেবে খাতায় না পাওয়ার পরিমাণটাই বেশী। লাল সবুজ পতাকা - স্বাধীন দেশ হয়তো অনেক বড় পাওয়া। তারপরো অনেক হিসেব বাকী রয়ে যায়।ফাইনাল একাউন্ট মেলাতে পারি না। ডেবিট-ক্রেডিটের হিসেব মেলানো আর হয়ে উঠে না।

চোখে রঙিন চশমা পরে দেশকে রঙিন দেখতে চাই, ভুলে যাই দেশের সেই সব সাধারন নাগরিকদের কথা যারা দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে স্বাধীনতার ৩৬ বছর পরও। পোশাকে সুগন্ধি ঢেলে দেশের দূর্গন্ধ ঢাকতে চাই, ভুলে যাই বস্তিবাসী সেই সাহসী মুক্তিযোদ্ধাদের কথা যারা একবেলা খাবারের জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলে একমুঠো ভাতের জন্য জীবন সংগ্রামে ব্যস্ত।

ভন্ডামীর লেবাস ধরে নিজেকে সুখী প্রমানিত করতে চাই, বস্তি উচ্ছেদ করে শহরকে সুন্দর দেখাতে চাই।

মুক্তবুদ্ধি-মুক্তমনার কথা বলে কবিতা লিখি, সমাজ পরিবর্তনের কথা বলে গলা ফাটাই কিন্তু ভুলে যাই সেই সব সাহসী সন্তানদের কথা যারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন।

সংবর্ধনার নামক প্রহসনে একটি কাগজের টুকরো বা নীলক্ষেত থেকে বানানো ৫০ টাকা মেডেল গলায় পড়িয়ে দিয়ে আত্মতৃপ্তিতে ভুগি, পরমুহুর্তেই ভুলে যাই কি অবস্থায় আছে সেই সব সন্তান হারা - স্বামী হারা মা-বোনেরা।

রাজনীতি জন্য, মুক্ত বুদ্ধির ব্যবসার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করি। ক্ষমতা যাবার অস্ত্র হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা-মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহারকারী। আজকাল মুক্তিযুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে মুক্তবাজার অর্থনীতির হাতিয়ার হিসেবে।

স্বাধীনতার বিনিফেসিয়ারী হিসেবে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবী করি। নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সৈনিক হিসেবে দাবী করি। আবার পত্রিকার পাতায় যখন নিউজ আইটেম হিসেবে ৭১ এর কোনো সাহসী সন্তানের জীবন সংগ্রাম বা অনাহারের খবর ছাপা হয় তখন বিবেক এক ঘন্টার জন্য জাগ্রত হয়। লিখে ফেলি কোন কলাম-ব্লগ বা কবিতা। সময়ে সেটাও ভুলে যাই। উহ্ আহ্ করে কস্ট অনুভব করি। কষ্ট বিলাস!

যুদ্ধাপোরাধীর যখন জাতীয় পতাকা লাগানো গাড়ি হাঁকিয়ে যায় চেয়ে চেয়ে দেখি। বিচার দাবী করি যুদ্ধাপোরাধীদের। আবার সুবিধাবাদীর মতো এদের সাথে বসেই আন্দোলনের রুপরেখা তৈড়ি করি, ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপোরাধীদের বিচারের কথা ভুলে যাই। ক্ষমতা হাড়ালে ক্ষমতার লোভে - রাজনীতির চালে দাবী করি বিচারের। সময়ে সেটা আবারো ভুলে যাই। রাজনীতির ঘেরাটোপ থেকে বিবেককে মুক্ত করতে পারি না। একটুও সাহসী হতে পারি না।

প্রতিটি বছর ঘুরে ২৬ শে মার্চ আসে, ১৬ ডিসেম্বর আসে। আমাদের শীত নিদ্রা ভাঙে। আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ি কলম যুদ্ধে। কিন্তু পাশে এসে দাঁড়াই না জীবন সংগ্রামে পরাজিত মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে। একজন সাহসী সন্তানের পরাজয় যে আমাদেরই পরাজয় সে ধ্রুব সত্য ভুলে যাবার ভন্ডামী করি।

আজকাল বিজয় দিবস-স্বাধীনতা দিবস যেনো হয়ে গিয়েছে বানরের রুটি ভাগ করার মতো। আওয়ামী লীগের স্বাধিননতার কাহিনী শুধুই বংগবন্ধু কেন্দ্রিক, বিএনপির মেজর জিয়া কেন্দ্রিক। আমরা নিজেদের মতো ইতিহাস রচনা করি। মাঝ খান থেকে ইচ্ছে করেই চেপে যাই স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিগুলোর কথা। দুধ কলা দিয়ে সাপ পুষি আমরা। জামাতকে আন্দোলনের সংগী বানাই, সরকারের অংশীদার বানাই। দুধ কলা দিয়ে পোশা সাপ যে আজ পূর্নবয়স্ক সাপ, ছোবল মারা জন্য ফোঁস ফোঁস করছে সেটা দেখেও দেখি না।অবাক হতেও হই না । এটাই নিষ্ঠুর পরিনাম।

কালসাপকে আঁতুর ঘরেই মেরে ফেলার চিরন্তন সত্য আমরা ভুলে গিয়েছিলাম। রাজাকার-আলবদর-আল শামস-শান্তি কমিটির পান্ডাদের হাতের অস্ত্র উদ্ধার না করে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র নিয়ে নিয়েছিলাম। সংক্ষিপ্ত আদালতের মাধ্যমে বিচার না করে আমরা সেই সব স্বাধীনতা বিরোধীদের সুযোগ করে দিয়েছিলাম দালাল আইনের মতো হাজারো ফাঁকওলা আইনের সাহায্য নেবার। শুধু আইন তৈড়ি করলেই হয় না , সে আইনের শক্ত-দৃড় প্রয়োগ থাকতে হয়। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ - ১৫ অগাস্ট এ সময়টুকুতে আমাদেরই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা সত্বেও স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার কতটুকু করতে পেরেছিলো সেটা ভেবে দেখতেও দেখি না। জেনারেল জিয়া এসেতো শুরু করলেন গনতন্ত্র প্রতিস্থার নামে স্বাধীনতাবিরোধীদের পুর্নবাসন। একে এক সরকার পরিবর্তন হয়েছে। পূর্নবাসন চলেছে। সেই পুর্নবাসীত কালসাপ আজ প্রতিস্টিত অপশক্তি, ছোবল দেবার জন্য প্রতিক্ষায়। আমরা চেয়ে চেয়ে দেখি।

স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপোরাধী যে কালসাপকে আমরা দুধ-কলা দিয়ে পুষেছি সেই কাল সাপ আজ যৌবন জ্বালায় জ্বলছে। তারা মহাসুখেই আছে। তারা আজ প্রতিষ্ঠিত শক্তি।

মুক্তিযুদ্ধের বিনেফিসিয়ারী হিসেবে আমি বা আমরাও মহাসুখেই আছি। আমাদের খড়ের কুঁটির আজ প্রাসাদ হয়েছে, সাইকেল হয়েছে দামী বিএমডব্লিউ, কেরানী থেকে আমরা সেক্রেটারী হয়েছি।

কিন্তু সুখে নেই ৭১ এর সেই সব সাহসী সৈনিকরা যারা জীবন সংগ্রামে পরাজিত সৈনিক।‌ তাদের ভিক্ষার থলের সামনে দিয়েই সদর্পে মিছিল করে যায় ৭১ এর পরাজিত কালসাপরা, পতাকা উড়িয়ে গাড়ি হাঁকায় আল বদর প্রধান, তারা চেয়ে চেয়ে দেখে, অক্ষম ক্রোধে বিক্ষুব্দ হয়, আবারো ভুলে যায় পেটের আগুন নেভানোর সংগ্রামে। তাদের সন্তানদের হতে হয় আমাদের কারখানার শ্রমিক। তাদের মেয়েদের হতে হয় আমাদের শয্যাসংগীনি। আমাদের সুখের বিনিময়ে তারা বেছে নিয়েছে দূঃখ।

যে জাতি তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মান দিতে জানে না সে জাতি একটি ভন্ডা জাতি। আর আমি সেই ভন্ড জাতির ভন্ড নাগরিক।

বস্তির অন্ধকার ঘরে যেই সাহসী যোদ্ধার আগুন চোখ জ্বল জ্বল করে জ্বলতে থাকে আরেকটি ৭১ এর প্রতিক্ষায়, আর আমরা বাকার্ডি হাতে চিয়ার্স বলে হেঁকে উঠি বিজয় দিবস উদযাপনে।
জয়বাংলা
--------------------------
আমার এ লেখাটি জীবন সংগ্রামে পরাজিত মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্য নিবেদিত যাদের কথা পত্রিকা ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যায় না।
ক্ষমা চাই হে সাহসী মানব।

শুক্রবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০০৭

বুঝিয়া বলিও, বলিয়া বুঝিও না বন্ধু আমার - শত্রু আমার

কোন মন্তব্য নেই :
মোহাম্মদ বিড়াল আর টেডিবিয়ার মোহাম্মদ,
বাংলাদেশ থেকে সুদান। ধর্মানুভূতিতে আঘাত,
ধর্মান্ধদের উম্মাদনা, সাধারন মানুষের কষ্ট , আঁতেলের আঁতলামী, সাইক্লোপের মানবতার বাণী।
চক্রাকারে চলছেই।

এটাকি ঠিক নয় যে, মুসলমানদের কাছে মুহাম্মদ(সাঃ) একজন পরম সম্মানীয় মানুষ। উনাকে নিয়ে যখন কোনো রকম বাজে কমেন্ট করা হয় বা মজা করা হয় সেটাতে হয়তো উনার সম্মান কমে যায় না তবে উনাকে যারা সম্মান করেন ও পছন্দ করেন তাদের মনে কষ্ট লাগে, আবার কারোবা ধর্মানুভুতীতে আঘাত হানে।

আমার লেখার উদ্দেশ্য ধর্মানুভূতীতে আঘাত হানে কি হানে না অথবা এতে উনার সম্মান কমে যায় কি যায় না, সেটা নয়।
লেখার ‌উদ্দেশ্য , যারা বলেন তারা কি ভেবে বলেন না উদ্দেশ্যমুলক ভাবে বলেন !!

ভ্যাটিকানের পোপ যখন মুসলমাদের নিয়ে বাজে কমেন্ট করেন (আমার ব্যক্তিগত মতামত) তখন কি মনে হয় কি উনি ভুলে গিয়েছিলেন তার বক্তব্য মুসলমানদের অনুভুতীতে আঘাত হানতে পারে?
ডেনমার্কের কার্টুনিস্ট যখন মুহাম্মদ(সাঃ) কে নিয়ে ব্যাংগ কার্টুন আঁকেন তখন কি জানতেন না এটা মুসলমানদের ধর্মানুভুতীতে আঘাত হানতে পারে ?

যখন বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের নিয়ে বাজে কমেন্ট করা হয় মুক্তবুদ্ধি বা বাক স্বাধীনতার নামে তখন ঠিন একই যুক্তি নিয়ে কি মানবতার বিরুদ্ধে বা অন্য কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে ( যেমনঃ ইহুদি ) কথা বলা যাবে? যদি বলা হয় তবে সেটা হবে এন্টি -সেমেটিক, মানবতা বিরোধী, বর্বর ইত্যাদি ইত্যাদি।

কোনো ধর্ম-জাতি বা বর্নকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করার সময় ভেবে দেখতে হয় সেই মন্তব্য বা ছবি যাতে সেই ধর্ম-জাতি-বর্ণ সংশ্লিস্ট কারো অনুভুতিতে আঘাত না হানে।

কিছু দিন আগে সিডনীতে এক চিত্র প্রদর্শনীতে জেসাসের ছবির সাথে লাদেনের ছবি ব্যবহার করে নিয়ে তুমুল বিতর্ক, ছবিতে লাদেনের সাথে জেসাসকে দেখানোতে জেসাসকে অপমানিত করা হয়েছে ! তুমুল প্রতিবাদের মুখে ছবিটি সরিয়ে নেয়া হয়। লাদেনের ছবির সাথে জেসাসকে ব্যবহার করলে যদি জেসাসের অপমান হয় তবে মোহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে নোংরা কার্টুন আঁকলে সমস্যা হয় না । আজব সব ভন্ডামী।

আমার লেখা কোনো জাতি-ধর্ম-বর্নকে উদ্দেশ্য করে নয়। উদ্দেশ্য সেই সব লেখক-সাংবাদিক-রাজনৈতিক বা সাধারন মানুষকে উদ্দেশ্য করে যারা বুঝেই হোক আর না বুঝেই হোক বাজে, নোংরা ও উস্কানীমুলক বক্তব্য দেন। সেই সাধারন ব্রিটিশ ভদ্রমহিলা বা প্রথম আলোর কার্টুনিস্ট আরিফ হয়তোবা সরল মনে টেডিবিয়ারকে মোহাম্মদ নামে ডাকার ছাত্রদের আব্দারকে সরল মনে আস্কারা দিয়েছিলেন বা কার্টুন এঁকেছিলো। কিন্তু সবাই কিন্তু সেই ব্রিটিশ মহিলা বা আরিফ না ।

যারা এসব করেন, তারাকি ভুলে যান তাদের এসব মন্তব্য সাধারন ধর্মবিশ্বাষীদের ধর্মানুভুতীতে আঘাত হানতে পারে ?
একটি ধর্মকে অপমানিত করতে পারে ?

এরা জানেন ও জেনে শুনেই এসব করেন। হিংসা-যুদ্ধ তৃষ-ঘৃনা ছড়িয়ে দেবার জন্যই এসব করেন।

বুঝিয়া বলিও, বলিয়া বুঝিও না বন্ধু আমার - শত্রু আমার

রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০০৭

Read These Beautiful Lines Which I Enjoyed

কোন মন্তব্য নেই :
To realize The value of a sister:
Ask someone Who doesn't have one.

To realize The value of ten years: A
sk a newly Divorced couple.

To realize The value of four years:
Ask a graduate.

To realize The value of one year:
Ask a student who Has failed a final exam.

To realize The value of nine months:
Ask a mother who gave birth to a still born.

To realize The value of one month:
Ask a mother who has given birth to A premature baby.

To realize The value of one week:
Ask an editor of a weekly newspaper.

To realize The value of one hour:
Ask the lovers who are waiting to Meet.

To realize The value of one minute:
Ask a person Who has missed the train, bus or plane.

To realize The value of one-second:
Ask a person Who has survived an accident.

To realize The value of one millisecond:
Ask the person who has won a silver medal in the Olympics.

Time waits for no one. Treasure every moment you have. You will treasure it even more when you can share it with someone special.

To realize the value of a friend:
Lose one.

YES, READ THE LAST LINE ONCE MORE........ EXCLUSIVELY FOR U AND U ONLY.......

সোমবার, ১৫ অক্টোবর, ২০০৭

ঈদ কাহিনী

৩টি মন্তব্য :
এবার উইকেন্ড থাকাতে অস্ট্রেলিয়ার আকাশে এবার একবারই চাঁদ দেখা গিয়েছে। ভাগ্য ভালো উইকডেইজ ছিলো না, নাহলে অস্ট্রেলিয়ার আকাশে ২ টি ঈদের চাঁদ উঠতো, আমরা ২ টি ঈদ করতাম, ২ বার ঈদের সেমাই খেতাম, ২ বার হাতে মেহেদী দিতাম।
আফসোস; সে স্বপ্ন পূরন হোলো না।

সকালে উঠে পান্জাবী পাইতো গেনজি পাই না, গেন্জি পাইতো অন্তর্বাস পাই না । সবকিছু যখন হাতের কাছে পাবার পর পরি-মরি করে লাচ্চা-সেমাই খেয়ে মসজিদের উদ্দেশ্য ছোঁটন। বউয়ের আদেশ ছিলো নামাজের আগে ঝাল কিছু , মানে পোলাও-মাংস স্পর্শ করা যাবে না। উনার চোখের আড়ালে সে আদেশও ভংগ করলাম। ঈদ বলে কথা!

নামাজ পড়তে গিয়ে দেখলাম আরেক ঘটনা। ১৩ তাকবীরের ঈদের নামাজ, দেশে থাকতে পড়তাম ৬ তাকবীরের নামাজ , ক্যানবেরা এসে ১২ তাকবীর, এবার ১৩ তাকবীর। আশা করছি আগামী ঈদে ১৪ তাকবীরের নামাজ পড়বো, সুম্মা আমীন।

মসজিদে সামনের দিকে ছেলেরা, পেছনের দিকে মেয়েরা। ঈদে মেয়েরা দারুন সেজেছিলো, আমি চাহিয়া চাহিয়া দেখি, সব হূর পরী। ঈদের নামাজ শেষে বউ বলে পেছন ফীরে কি দেখছিলে !! আমি উদাস নয়নে বল্লাম তোমাকে খুঁজছিলাম, ওতো সুন্দরীর মাঝে হাড়িয়ে ফেলেছিলাম তোমাকে । বউতো আমার পুরা টাসকী ।

নামাজ শেষে দারুন সব মিস্টি, টার্কিশ-পাকি-আরবী দারুন দারুন সব মিস্টি। টার্কিশ-লেবানিজ মেয়েদের মতোই ইয়াম্মি। কয়টা যে সাবরেছিলাম সে মনে নেই। ভাগ্য ভালো ছোট বেলার মতো মিস্টি খেয়ে পান্জাবীতে হাত মুছিনি। মহা কেলেংকারী হয়ে যেতো তাহলে। এমনিতে আমার নাকি দূর্নাম আছে, আমি নিজে খাই আবার পান্জাবীকেও খাওয়াই।

ঈদের নামাজের পর যথারীতি কোলাকুলি। ভাবছিলাম ঈদের দিন , সবাই ভাই-ভাই বোন বোন। পেছনের দিকে গিয়ে হুরদের সাথেও কোলাকুলি সেরে নেই, কথায় আছে না হেলায় সুযোগ হাড়াতে নেই। তবে লেবু পোলাদের স্বাস্থ্য দেখে সাহসে কুলোয়নি। আরেকটা দীর্ঘ নিঃশ্বাষ ।

এখানে বসন্ত উতসব হচ্চে, "ফ্লোরিয়েড"। ১২ লাখ টিউলিপের এক ঐতিহাসিক জলছা। বউ সহ সেখানে ঘুরে দো জাহানের অশেষ সোয়াব কামিয়াব করে, ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে বাসায় প্রত্যাবর্তন। বাসায় এসে আবার পোলাও-মাংস-কোরমা। এবার নিজের রান্না করা ( আসলে বউ রান্না করেছে, আমি পেঁয়াজ কেটেছি, পোলাওয়ের চাল ভেজেছি। সেটাও কি কম কথা !! )।

ঈদ শেষে সিনেমা দেখা ( বাংলা সিনেমা ছাড়া কি ঈদ সম্পুর্ন হয় !! , সেই যে বিটিভিতে ঈদের সময়কার বাংলা সিনেমা)।

দারুন এক ঈদ করলাম। বউ সহ প্রথমবারের মতো। একটু বেশী পোলাও-কোরমা খাওয়া হয়ে গিয়েছে মনে হচ্ছে।
ভুঁড়ি কি আরেকটুকু বাড়লো ?

বুধবার, ১০ অক্টোবর, ২০০৭

আক্রান্ত আহত বাংলার অন্তর্জাল

কোন মন্তব্য নেই :

বাকস্বাধীনতা মানুষের গ্ররুত্বপূর্ণ একটি অধিকার। কথা বলার এবং কথা শোনার অধিকার এবং গোপনীয়তার নিশচ্য়তা দিয়েছে বাংলাদেশ সংবিধান তার ৪৩ ধারার মাধ্যমে। এ নিশ্চয়তাও এখন হুমকির মুখে।

বিটিআরসি বাংলাদেশের সব আইএসপির কাছে একটি চিঠি (BTRC/E&O/ISP-Gen.(302)/2007-1697) পাঠিয়েছে যেখানে তারা চেয়েছে:

* তারা কার কাছ থেকে কত ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করছে, চুক্তির কপি সহ সেসব তথ্য।
* কর্পোরেট/ডেডিকেটেড/শেয়ার্ড ক্লায়েন্টদের নাম, ঠিকানা ও আইপি
* পুরো ব্যন্ডউইদথ এবং প্রতিটি ক্লায়েন্টের অনলাইন এমআরটিজি ইউসেজ গ্রাফ (যার মাধ্যমে কে কোন সাইটে ব্রাউজ করেছে সব তথ্য জানা যাবে), ইউআরএল এড্রেস এবং প্রতিটি ইউজারের আইডি এবং পাসওয়ার্ড ।
* সব ইউজারের জন্যে পরিপূর্ণ সাবস্ক্রিপশন ফর্ম।
* আইএসপিকে মানা করা হয়েছে এমন ইউজারদের কানেকশন না দিতে যারা ওই ব্যন্ডউইদ্থ অন্যান্য লোকেশনের ইউজারের কাছে অর্থের বিনিময়ে শেয়ার করে।
* আইএসপিকে বলা হয়েছে প্রতিটি ইউজারদের নাম ঠিকানা সংরক্ষন করতে (প্রি-পেইড স্ক্রাচ কার্ড বা সাইবার ক্যাফের ক্ষেত্রে কি হবে তারা তা বলেনি)।

উপরোক্ত বিষয়গুলো ১৫ দিনের মধ্যে না মানলে আইএসপির লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

এ ব্যপারে বিটিআরসির কোনো ব্যাক্ষা নেই, আছে শুধু অর্ডার।

আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন কি ঘটতে যাচ্ছে ভবিষ্যতে !
তারা আইএসপির মাধ্যমে প্রতিটি উইজারদের তথ্য সংগ্রহ করবে, এমআরটিজি গ্রাফের ইআরএল, আইডি/পাসওয়ার্ড থাকলে যে কোন স্থান থেকে এইসব ইউজারদের ইন্টারনেট কার্যক্রম মনিটর করা যাবে। আপনার ঠিকানা থাকায় আপনি থাকবেন তাদের মনিটরিং এর মধ্যেই। আপনার ইমেইল পড়ে ব্যবসার গোপন তথ্য অন্যরা জেনে যাবে।

ই-বাংলাদেশে ই-বাংলাদেশের রিপোর্ট এক আইএসপি প্রভাইডার বলেছে এরকম ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হলে এবং বাসায় সার্চ হলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ভয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ করে দেবে। আইএসপিদের ব্যবসা গুটাতে হবে। ইন্টারনেট ব্যবহার করাটাই যেন একটি অপরাধ হয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষের কাছে।

এটি একটি বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন। আমেরিকা এবং জার্মানীতে ইন্টারনেট সার্ভেইল্যান্স নিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক চলছে সংসদে। এটি হতে হলে অবশ্যই গনতান্ত্রিক সরকারের সংসদ থেকে আইন পাশ করে হতে হবে। কিন্তু বিটিআরসি কি ক্ষমতার বলে এই ব্যক্তিগত স্বাধীনতার উপরে হস্তক্ষেপ করছে এ প্রশ্ন নিশ্চয়ই সাধারন নাগরিক হিসেবে আমরা করতে পারি। অবশ্য তথাকথিত তত্বাবধায়ক ওরফে অনির্বাচিত অন্তর্বতীকালীন আদতে ছায়া সামরিক সরকারের কাছ থেকে মানবাধীকার বা বাক স্বাধীনতা আশা করা আর অরন্যে রোদন একই কথা।

১) আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ব্রাসেলস ইউনিভার্সিটির আইনের অধ্যাপক আহমেদ জিয়াউদ্দিন বলেছেন "এটি বাংলাদেশ সংবিধানের ৪৩ ধারার সুস্পস্ট লঙ্ঘন"।
২) ব্যারিস্টার সুলতানা কামাল, মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ও ভূতপুর্ব এডভাইজার, কেয়ারটেকার সরকার বলেছেন "এমনিতেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে টেলিট্যাপিং হয়, বিভিন্ন জনের উপর নজরদারী হয় কিন্তু সেটি করা হয় সৌজন্য রেখে সরাসরি নয় কারন সেটি তাহলে অগনতান্ত্রিক হবে। এখন তো এইভাবে এই সব অগনতান্ত্রিক পদ্ধতিকে ন্যায্যতা দিয়ে দেয়া হচ্ছে।"

কিছুদিন আগে বিবিসি বাংলা প্রভাতী অনষ্ঠানে এভাবেই মত প্রকাশ করেন উপরোক্ত দুজন বিশিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব।

আগেই বলা হয়েছে বিটিআরসির মেমোর কথা যেখানে আইএসপিদের কাছ থেকে ইন্টারনেট ইউজারদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী (যেমন নাম-ঠিকানা, ইন্টারনেট ব্যবহার লগ, আইডি-পাসওয়ার্ড) চেয়েছে। কিছুদিন আগে বিবিসি বাংলায় পরিক্রমায় অনুষ্ঠানেএ খবরের সত্যতা স্বীকার করা হয়। আইএসপি এসোসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয় যে সরকার দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ডাটাবেজ তৈরি এবং আইএসপির মাধ্যমে তাদের ইন্টারনেট ব্যবহার মনিটরের উদ্যোগ নিয়েছে।

বিটিআরসি এক্ট ২০০১ এর ২০০৬ সালের একটি সংশোধনী (৯৭ ধারা) অনুযায়ী আইন-শৃঙ্খলা বাহীনিকে সর্বময় ক্ষমতা দেয়া হয় আড়িপাতার জন্যে। এই সংশোধনীটি অবশ্য বিটিআরসির মুল উদ্দেশ্য টেলিযোগাযোগের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার নিশ্চয়তা প্রদানের অঙীকারকে লঙ্ঘন করে (বিটিআরসি এযাক্ট ২০০১ প্যারা ৩০(১)(f))। কিন্তু এজন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আলাদা সেল না বসিয়ে আইএসপিদের বাধ্য করা হচ্ছে এই মনিটরিংয়ে। ফলে এইসব ব্যক্তিগত তথ্য অন্য কোন তৃতীয় পক্ষের কাছে চলে গিয়ে সাধারন ব্যবহারকারীরা হয়রানীর স্বীকার হবেন কিনা সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেই আড়িপাতার আইন রয়েছে কিন্তু সেটি করা হয় সন্দেহভাজন ব্যাক্তিদের ক্ষেত্রে, অনেক সময় কোর্ট অর্ডারের মাধ্যমে। কিন্তু এভাবে ঢালাও ভাবে সবার ব্যাক্তিগত আইডি পাসওয়ার্ড জানতে চাওয়ার পেছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা সেটি ক্ষতিয়ে দেখার অবকাশ রয়েছে।

আইএসপি যে মনিটরিং করে সেটাকে ইউসেজ এবং এবিউজ মনিটরিং বলা যায়। ইন্টারনেট স্পীডের কতখানি ব্যবহার করল, অর্থাৎ কতখানি ডাউনলোড এবং আপলোড করল এই তথ্য গুলো ইউসেজ তথ্য বলা যায়। আর এবিউজ হল, আপনি পর্ণো সাইটগুলোতে যাচ্ছেন কিনা, পি২পি ব্যবহার করে কোন ইল্লিগাল গান বা মুভি ডাউনলোড করছেন কিনা এগুলো।
পুরো ব্যন্ডউইদথ এবং প্রতিটি ক্লায়েন্টের অনলাইন এমআরটিজি ইউসেজ গ্রাফ (যার মাধ্যমে কে কোন সাইটে ব্রাউজ করেছে সব তথ্য জানা যাবে), ইউআরএল এড্রেস এবং প্রতিটি ইউজারের আইডি এবং পাসওয়ার্ড।

মনিটরিং নতুন কিছু না। সব ISPই এই কাজ করে। সরকার করলে কেন তাহলে প্রতিবাদ?
প্রধান কারন এর রাজনৈতিক ব্যবহার।

ISP মনিটরিং ডেটা দিয়ে বিলিং করে। সরকার এই ডেটা দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা বা নিয়ন্ত্রনে ব্যবহার করতেই পারে, যেটা আমাদের দেশে মনে হয় অস্বাভাবিক নয় (সব চ্যানেল যখন বিটিভি হয়ে গেছে তখন আমাদের শেষ ভরসাটা কিন্তু ইন্টারনেট)।

কনটেন্ট মনিটরিং হল আপনি কোথায় কি লিখছেন। কাকে কি ইমেইল করছেন। এইসব মনিটরিং করা। এগুলো কোন আইএসপি করে না। আর সরকারের এইটাই উদ্দেশ্য বলে আন্দাজ করা হচ্ছে।

তাছাড়া প্রাইভেসীও এরসাথে জড়িত। আপনার ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, ব্যক্তিগত তথ্য, আপনার প্রেম ভালোবাসার কথা এসব কেন সরকার হাতাবে?

সরকার যদি বলে, যে তারা কনটেন্ট মনিটরিং করবে না। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায় তাহলে কেন তারা ব্যক্তিগত তথ্যের এক্সেস চাইবে? তথ্যগুলো দিয়ে কি করবে তাও কোথাও স্পষ্ট নয়।
এখানেই লংঘিত হয় ব্যক্তি স্বাধীনতা, এভাবেই ধর্ষিত হয় গণতন্ত্র।

আরেক ভাবে তুলনা করা যায়। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার সাথে তুলনা করলে মিলটা স্পষ্টতর হয়।

মনে করেন সংবাদপত্রে সাংবাদিক একটা লেখা লেখেন। সাংবাদিককে এক্ষেত্রে ইন্টারেনেটে একজন ব্লগার বা ইমেইল কারী সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।

আবার সম্পাদক আইএসপিদের মত একটা ভুমিকা পালন করেন। লেখাতে খারাপ কিছু যাচ্ছে কিনা, ম্যাটারের আকৃতি বা কোয়ালিটি কেমন হচ্ছে এসব সম্পাদক দেখেন।

এখন সরকার বলল সংবাদ প্রকাশের আগে তাদের পক্ষের একজনের কাছ থেকে পরীক্ষা করিয়ে সাইন নিতে হবে। সেক্ষেত্রে সম্পাদক সম্পাদনার পর তাদের কাছে পাঠায় এবং তারা বলে দেয় কোনটা তাদের বিপক্ষে যাচ্ছে এবং বাদ দিতে হবে। ঠিক একই ভাবে ইন্টারনেট মনিটরিং করলে একই ব্যাপার ঘটে।

সংবাদ পত্রে তারা যে রেস্ট্রিকশন দিয়েছে এটা তারই সমতুল্য।

বেশ কিছু উদ্বেগজনক সংবাদ আসছে দেশ থেকে। অনেকের বাড়ীতেই RAB যাচ্ছে চেক করতে সে ভিওআইপির ব্যবসা করে কিনা তাই। আমার খটকা লেগেছিল কারন যে একজন সাধারন ইউজার, তার সাথে কেন এমন হবে?
সাধারন ইউজারের বাসায় ভিওআইপি সংক্রান্ত কিছু না পেয়ে কম্পিউটার চেক করেছে -এম এস এন মেসেন্জার ও স্কাইপের কন্টাক্ট লিস্ট চেক করেছে। সন্দেহ হচ্ছে তারা নিজেও কি নিশ্চিত কিনা তারা কোথায় কি খুঁজতে এসেছে।

উর্ধতন এক বিটিআরসির কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে বিটিআরসি সাহায্য করছে RAB কে অবৈধ ভিওআইপি অপারেটরদের ধরতে। কিন্তু সাধারন ইউজারদের বাসায় কেন যাচ্ছে তারা তা সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে পারেন নি।

কিন্তু ব্যাপারটি আসলে এত সহজ কিছু নয়। আসলে ভিওআইপির কথা বলে হয়ত ইন্টারনেট ইউজারদের কার্যকলাপ মনিটর করা হচ্ছে।

দেশের ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এখন এক ক্রান্তিকালের মাঝ দিয়ে যাচ্ছে। দৈনিক আজকের কাগজ বন্ধ হয়ে গেলো, দৈনিক সমকাল চরম অর্থনৈতিক সংকটে, দৈনিক যায় যায় দিন বন্ধ হয় হয় অবস্থা, দেশের সর্বপ্রথম নিউজ
চ্যানেল সিএসবি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে আচমকা, একুশে টিভি ও এনটিভিকে নোটিশ দিয়ে মুখে তালা দিতে বলা হয়েছে। সংবাদপত্রগুলো সংবাদ ছাপাতে বাধ্য হচ্ছে আইএসপিআর এর প্রেসক্রিপশনমতো, টিভি চ্যানেলগুলো সংবাদপ্রচার করছে আর্মি হেডকোয়ার্টারের নির্দেশমতো।
বাংলাদেশের সব সব টিভি চ্যানেলই এখন বিটিভি, সব সংবাদপত্রই সরকারের প্রেসনোট। একমাত্র বাকী ছিলো ইন্টারনেট, সেখানেই নজরদারী !! এ যেনো কফিনে শেষ পেরেক ঠোকা।

আমার প্রায়ই মনে হয় আমরা কি নেংটা হওয়া এবং নেংটা করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি?

যদিও আমাদের পোশাকের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটে গেছে
কিন্তু কিছু কিছু জায়গা কিছু মেশিন বসানো আছে সিকিউরিটির নামে যেটার পেছনে বসলে কাপড় পরা মানুষকে কাপড় ছাড়াই দেখা যায়।
সেইসব জায়গায় আমাদেরও যেতে হয় মাঝেমাঝে।
জেনে কিংবা না জেনে।

শুধু কারো না দেখার জায়গায় ছিল কানে কানে কথা... বলা
কিন্তু...
মোবাইলের কথা এখন অন্যরা শুনতে পায়,
কুরিয়ারের চিঠি খুলে চেক করে,
ইমেইল....

জয় গোস্বামীর কবিতাটা মনে আছে সবার?

'ততক্ষণই কলংক ভয় মুখে ঝেঁটার বাড়ি
যতক্ষণ না সবার সামনে নেংটো হতে পারি...'
_____________________________
সংকলিত,মৌলিক নয়।
রেজওয়ান ভাই ও মাহবুব লীলেনের কাছে ক্ষমা প্রার্থী তাদের লেখা থেকে আইডিয়া ও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই টুকলিফাই করাতে।

রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০০৭

গল্পঃ যন্ত্রমানব

কোন মন্তব্য নেই :
সদ্য ইস্ত্রি করা সাদা সার্টের সাথে হালকা ছাই রঙের স্যুট পরা মাহমুদের অবাক হবার পালা। এত্ত সুন্দর টয়লেট ! ঢুকেই মনেই হয় না যে সে টয়লেটে এসেছে। এখানে আবার টয়লেটকে বলে ওয়াশরুম।

ঝকঝকে আয়নায় আলতো হাতে চুল ঠিক করেছে আর ভাবছে এখানে চাকুরিটা হলে কতো কিছুই না সে করবে। প্রথমেই বাবার ঘরের খাটটা বদলাতে হবে। একটা নতুন ফ্যানও কিনতে হবে।

"হ্যালো, আমি মাহমুদ, আপনি ?"বলেই হাত বাড়িয়ে দেয় সে একটু আগেই ওয়াশরুমে ঢোকা ছেলেটার দিকে। ছেলেটা তার সাথেই ইন্টারিভিউয়ে এসেছে। আজ ইন্টারভিউয়ের লাস্ট ফেইজ।

"আমি জিসান", নিরাসক্ত ভংগিতে হাত বাড়িয়ে দেয় সে মাহমুদের দিকে।আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং এ এম.বি.এ , দু বছর কাজ করেছি স্কয়ারে, বি.আই.এম থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা , ইন্টারভিউয়ে স্কোর করেছি ৯৯.৫ /১০০ । হড়বড়িয়ে বলেই মাহমুদ তাকালো জিসানের দিকে।

"ইউটি-অস্টিন '০৫ এলামনি, দু বছর কাজ করেছি স্টেটসে। ৯৭/১০০ "
একমাত্র প্রতিদ্বন্ধির এমনতরো কাঠকোঠ্ঠা উত্তর শুনে মাহমুদ তো অবাক।
জিসান বার বার ঘড়ি দেখছে। একটু পরেই জানা যাবে কে পাচ্ছে চাকরিটা।

"আচ্ছা , কিছু শুনতে পারছেন ??" বলেই মাহমুদ ছুঁটে গেলো পাশের টয়লেটের দিকে। বুঝতে পারছে কিছু একটা হচ্ছে সেখানে । দরজা ভেঙে ঢুকতেই দেখে হালকা পাতলা গরনের একলোক গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
"ওহ মাই গড" বলে চিৎকার করে উঠলো মাহমুদ।
"ধরুন, ধরুন , আমি উঁচিয়ে ধরছি আপনি ফাঁসা খুলে ফেলুন " এক নিশ্বাসে এ কথা বলেই মাহমুদ জড়িয়ে উঁচু করে তুল্লো লোকটিকে। জিসান একরাশ অনিচ্ছা নিয়ে লোকটির ফাঁসা খুলতে লাগলো।

লোকটিকে নামিয়ে মাহমুদ লোকটিকে জড়িরে ধরে মেঝেতে নামিয়ে ধরে বলে উঠলো জিসান আপনি কি এখনি বাহিরে গিয়ে কাউকে বলবেন হাসপাতালে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করতে। জিসান হাত ঘড়ি দেখে বল্লো "আর ১ মিনিট পরই ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে যেতে হবে। এরা নিঃশ্চই লেট কামার দের চাকরি দেবে না।"

মাহমুদ কিছু না বলেই লোকটির পাশে বসে পড়লো, জড়িয়ে ধরে নিজের মায়ের কথা ভাবছে। মাও এভাবে একদিন গলায় ফাঁস দিয়েছিলো। আজ আর এ লোকটিকে মরতে হোলো না। তাকিয়ে দেখে জিসান নেই।
*******
মাহমুদ তাকিয়ে দেখছে ওয়াশরুমের দরজা খুলে সিইও ঢুকলেন। অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে যে লোকটি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলো সেও দাঁড়িয়ে গলায় হাত বুলোচ্ছে, মুখে বিব্রত হাসি।
সিইও কাছে এগিয়ে এসে কাঁধে হাত দিয়ে বল্লেন " থ্যাংক ইউ মাই সান, ইউ আর রিয়েলি এ রিয়েল ম্যান"।
মাহমুদ কিছুই বুঝতে পারছে না। কি হচ্ছে এসব ?
দরজা খুলে জিসান ঢুকতেই সিইও বল্লেন " সব কিছুই সাজানো , ইন্টারভিউয়ের অংশ হিসেবেই এটি একটি নাটক "।
মাহমুদ হাসি মুখে সিইওর দিকে তাকালো। ভাবছে বাবার নতুন খাটের সাথে সাথে একটা নতুন ফ্রিজ কিনলে কি রকম হয় !

সিইও জিসানের দিকে হাত বারিয়ে বল্লেন " ওয়েলকাম মি.জিসান ইউ আর আওয়ার নিউ ব্রান্ড ম্যানেজার , ওয়েলকাম টু ব্যাট বাংলাদেশ ", উই নিড রোবট নট হিউম্যান বিইং"।
---------------
কিছুদিন আগে নরওয়ের একটা শর্ট ফিল্ম দেখেছিলাম, গল্পের আইডিয়াটা সেখান থেকেই পাওয়া।

শুক্রবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৭

এলিজি টু রুবি আক্তার

কোন মন্তব্য নেই :
সমকালের শেষের পাতায় ছোট্ট ১ কলামের একটি নিউজ। বড্ড অবহেলায় ছাপা একটি নিউজ। রুবি আক্তার রাতের সিফট শেষে বাড়ী ফেরার পথে ধর্ষিত হোন। একদল সন্ত্রাসী রুবিকে পথিমধ্যে থেকে অপহরণ করে জামগড়া গফুর মন্ডল স্কুল এন্ড কলেজের মাঠে নিয়ে গিয়ে পালাত্রক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষ ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার পর সন্ত্রাসীরা লাশ সেখানে ফেলে রেখে যায়।

১৬৫০ টাকার বেতনের এক শ্রমিক ধর্ষিত হয়ে মারা যাবার খবর বিশাল করে ছাপার কি আছে !! আরে বাবা এতে অবাকের কি আছে ? গার্মেন্টসের এক শ্রমিক ধর্ষিত হয়ে মারা গিয়েছেন , এতো নিত্যদিনের ঘটনা।

শেরাটনে বিজিএমইএ এর ১৬৫০ টাকা প্রতি প্লেটের বার্ষিক ডিনার পার্টিও এর চাইতে বড় কভারেজ পায়। আর পাবেই না কেনো !! বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ফরেন কারেন্সি আনছেন উনারা। পত্র-পত্রিকায় লাখ টাকার বিগ্যাপন দেন উনারা। এরাই দেশের শাষক, এরাই জাতির বিবেক , এরাই সুশিল সমাজ।
আর এই শ্রমিকরা কি করে ? দুই দিন পর পর বকেয়া বেতন বোনাসের জন্য আন্দোলন করে। বড্ড অবুঝ এরা। বড্ড বিশৃংখল এরা।
রুবি আক্তাররা রাত দিন কাজ করেন। নিয়মিতই ওভার টাইম। শিপমেন্ট ধরতে হবে না !! তবে বেতনটাই শুধু নিয়মিত হয় না, এই যা। প্রতিবাদ করলেই ছাঁটাই।

বেতন পান ১৬৫০ (মালিক পক্ষের আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তোলা সর্বনিম্ন বেতন ১৬৫০ টাকা )। তাও যদি নিয়মিত পান !!

ছোট্ট এক রুমে ৪/৫ জনে গাদাগাদি করে থাকা। ভাগা-ভাগী করে আলু-চাল-ডালের খিচুড়ী যাদের নিয়মিত মেনু ( বিশ্বাষ হয় না, টংগি-সাভার-মিরপুর-আশুলিয়া বা অন্যান্য যে সব জায়গায় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বেশী সে সব এলাকার মুদির দোকানীদের জিগ্যাসা করতে পারে, তারা কি বেশী বিক্রি করেন গার্মেন্টস শ্রমিকদের কাছে)।

মাইল-মাইল হেঁটে কাজে যাওয়া ( কয়টা গার্মেন্টসের নিজস্ব ট্রান্সপোর্ট আছে?) বৃষ্টি নেই, বাদলা নেই , কাজে যেতেই হবে। নইলে ছাঁটাই। এপয়েন্টমেন্ট লেটার আবার কি জিনিস এরা জানলেও জানে না।

কারখানায় প্রোডাকশন ম্যানেজার-লাইন সুপারভাইজারদের খবরদারী , সেক্সুয়াল এবিউজ (বিতর্ক আসতে পারে, তবে এটাই নোংরা সত্য)।

রাস্তায় পাড়ার ছেলেদের নোংরা ইভ টিজিং। মাঝে সাজে পাড়ার ছেলেদের লাগানো (এর চাইতে ভালো শব্দ খুঁজে পাচ্ছি না বলে দূঃখিত)। না লাগাতে দিলে রুবি আক্তারের মতো গণধর্ষন ! পূরুষের নোংরা চোখ এড়ানোর জন্য বোরখা পরেও রক্ষ্যা নেই। পুরুষ যদি চোখে পর্দা না পরে নারী হাজার পর্দা পরুক না কেনো রক্ষা তাদের নেই।

এতো কিছুর পরোও রুবি আক্তাররা টাকা জমান। ছোট্ট বোনের জন্য লাল টুকটুকে শাড়ি বা বাবার জন্য সাদা সস্তা জামা কেনেন বা মায়ের জন্য মিলের ছাপা শাড়ি। টুকটুক করে টাকা জমান ভবিষ্যতের জন্য।

রক্ত পানি করে যে শার্টের জন্য এরা যে ১ সেন্ট (অনেকে বলেন ১৭ সেন্ট) পান, সেই শার্ট বিক্রি করে মালিকরা লাভ করেন ১ ডলার।

রুবি আক্তাররা বৃষ্টির পানিতে ভেজেন,
রুবি আক্তাররা টিয়াস গ্যাসে কাঁদেন,
রুবি আক্তাররা গুলি খান,
রুবি আক্তাররা একাকী কাঁদেন,
রুবি আক্তাররা ধর্ষিত হোন,
রুবি আক্তাররা খুন হোন,
ঠিকানা হয় অজানা।

আজকের খবরটা পড়ে মনটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছে। নিয়মিত এ রকম খবর পড়তে পড়তে অভ্যাস হয়ে গিয়েছে, বিবেক ভোঁতা হয়ে গিয়েছে, তবুও কেমন জানি লাগছে। রুবি আক্তার যদি আনিসুল হকের মেয়ে হতো বা লতিফুর রহমানের মেয়ের মতো ধর্ষিত ও খুন হতো তবে পত্রিকার পাতায় পাতায় কতো বিশাল খবরই না হতো। রুবি আক্তাররা আসলেই অচ্যুত এ দেশে। আজতো রুবি আক্তার যদি আমাদেরই কারো ছোট্ট আদরের বোন বা আমাদেরই কারো প্রেয়সী হতে পারতো।

রুবি আক্তার বয়স ১৮,
হেলপার , এনভয় গার্মেন্টস।
স্থায়ী ঠিকানাঃ ঘিওর, মানিকগঞ্জ ।
অস্থায়ী ঠিকানাঃ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ।
ভবিষ্যত ঠিকানাঃ অজানা।

"রুবি আক্তার" অজানা বোন আমার। ব্লগের পাতায় লেখা ছাড়া আর কিচ্ছুই করতে পারি না আমি। বড়ই অসহায় আমি। গলাবাজী , কলমবাজী করা ভন্ড আমি। তোমার এ চরম অপমান ও হত্যার বিচার তুমি পাবে কি না জানি না, তবে পরজন্মে পাবেই পাবে। এই কামনা করা ছাড়া এই অসহায় মানুষটির আর কিছুই করার নেই।

রুবি আক্তারের প্রতি আমার এই এলিজি।
ভালো থেকো রুবি আক্তার।
ভালো থেকো।

রবিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০০৭

শিকার

কোন মন্তব্য নেই :
ছোট্ট বেলা থেকেই শিকারের প্রতি প্রচন্ড ঝোঁক। এয়ারগান দিয়ে হাতে খড়ি , রাইফেল দিয়ে শেষ।

বয়স কতোই বা হবে তখন , এই ১০ কি ১১ বছর হবে আমার তখন। উত্তর বংগের এক কোনায় ছোট্ট এক অজপাড়া গাঁয় থাকি তখন। একবার রংপুর থেকে কিছু অতিথি আসলেন "আইনত নিষিদ্ধ" পাখি শিকারে। গন্তব্যঃ তিস্তার চর। উনারা ছিলেন সমাজের অতি গন্য-মান্য ব্যক্তি, আইনের উর্ধে।চখা-চখি, রাজহাঁস দিয়ে শিকার শুরু বিশাল সাদা বক দিয়ে যার শেষ ।

ছইয়ে ডাকা ছোট্ট নৌকায় তিস্তার চরে চরে ঘুড়ে বেড়ানোর কথা এখনো মনে আছে। কবিগুরু নৌকায় থাকলে হয়তো ২/১টা কবিতা নামিয়ে ফেলতেন, কিন্তু আমাদের ছিল রক্তের নেশা। বন্দুকের গুড়ুম গুড়ুম শব্দ রক্তে আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছিলো।

সারাদিন শিকার শেষে পরিতৃপ্ত মনে স্থানীয় চেয়ারম্যানের বাড়ীতে বিশাল বিশাল রুই মাছ ভাজা, ঝাল খাসীর মাংস , সাথে গরম গরম সরু চালের ভাত খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলি আমরা, কিন্তু মনোঃকষ্টে ভুগি রাজহাঁস শিকার না পাবার দূঃখে।

বাসায় এসে গরম গরম ভাতের সাথে চখার মাংসের ভুনা। সাথে এক টুকরো পাতি লেবু। অসাধারন।

অনেক শিকার করেছি জীবনে। হাতের সই অসাধারন ছিলো একসময়। হাতে অস্ত্র উঠলে অন্য রকম কিছু মনে হতো নিজেকে। খুনের নেশা চেপে যেতো। আসলেই অস্ত্র মানুষকে পরিবর্তন করে দেয়।
--------------
বিঃদ্রঃ আমি এখন আর শিকার করি না, প্রচন্ড ঘৃনা করি এ জিনিসটাকে। তবে ঢাকায় থাকলে মাঝে মাঝেই অস্ত্রটাতে মাঝে সাঝে হাত বুলাই পরম মমতায়, নিজের মাঝে পরিবর্তনটা টের পাই ঠিক তখনই। নিজের কাছেই নিজেকেই ভয় লাগে তখন।
আসলেই অস্ত্র মানুষকে পরিবর্তন করে দেয়।

বুধবার, ২২ আগস্ট, ২০০৭

দেখা রাম দেখে যায় , খেলারাম খেলে যায়

কোন মন্তব্য নেই :
চলছে গুলি ,
চলবে গুলি,
আবারো ঝরছে রক্ত।
আবার মরবে মানুষ।
মানুষ মরলে কি এসে যায় ?

চলছে কাঁদোনো গ্যাস,
চলবে কাঁদানো গ্যাস,
আবারো কাঁদছে মানুষ।
আবারো কাঁদবে মানুষ।
মানুষ কাঁদলে কি এসে যায় ?

আবারো জ্বলবে আগুন,
ধ্বংস হবে কিছু।
কিচ্ছু এসে যায় না !!

আবারো আসবে জয় ,
সে জয় লুন্ঠিতও হবে।

কি এক নিরন্তন খেলা !!
এ এক আজব লীলা খেলা !!!
মামু, এ এক আজব লীলা খেলা।

দেখা রাম দেখে যায় , খেলারাম খেলে যায়।
আমরা শালা ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা,
দুই ছাগলে দুদু খায়,
আমরা দেখি,দেখেই খুশিতে নাচি।
খুশ হো খুশ হো।
তাক ধিনা ধিন।
শালার জীবন,
হায়রে বাংলাদেশ!!

মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০০৭

সিভিল মিলিটারি সংঘাত , প্রসংগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কোন মন্তব্য নেই :
সিভিল - মিলিটারি সংঘাতের আরেকটি বহিঃপ্রকাশ দেখা গেলো গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ক্লাস ৮ পাস করে ভর্তি হওয়া সৈনিক বা এইচ.এস. সি পাস করে মিলিটারি একাডেমিতে যাওয়া অফিসার ক্যাডেটরা সব সময়ই এক ধরনের হীনমন্যতায় ভোগে বলে আমার ধারনা।এই হীনমন্যতা দূর করার জন্য প্রশিক্ষনের সময় তাদের হাঁটুতে এমন এক ধারনা ঢুকিয়ে দেয়া হয় যেনো তারা সর্বশ্রেষ্ঠ, শ্রেষ্ঠতর তাদের ব্লাডি সিভিলিয়ান বাবা-ভাইয়ের চাইতে।

ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করে দেবার ছাগলীয় পন্থায় বিশ্বাষী করে তোলা হয় তাদের।

অন্ধ ভাবে অর্ডার মানার শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা হয় তাদের।

ক্যান্টনমেন্ট নামক ছাগলের খোয়ারে যুধবদ্ধভাবে বেড়ে ওঠা জলপাইওলাদের ব্লাডি সিভিলিয়ানদের হতে দূরে রাখা হয় যাতে তার যুদ্ধে চরম নৃষংশতা দেখাতে পারে। এই এরাই যখন নিজের দেশকে যুদ্ধক্ষেত্র ভেবে নিজের মানুষদেরকেই শত্রু ভেবে ঝাঁপিয়ে পরে তখন এদের আসল চেহারা ও চরিত্র বের হয়ে পরে। যার উদাহরন আবারো দেখা গেলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বাংলাদেশের অতীতের সামরিক শাষনের সাথে বর্তমান সামরিক শাষনের তুলনা করকেই অনেক অনেক মিল বের হয়ে আসে।

দেশ বাঁচাবার মিস্টি মিস্টি কথা বলে ক্ষমতায় আসা ,
দেশ বাঁচাবার কথা বলে সংবিধাননে ধর্ষন করা,
গনতন্ত্র বাঁচাবার কথা বলে গনতন্ত্রকেই গলা টিপে মারা,
দেশের রাজনৈতিক নেতাদের দূর্নীতিবাজ বলে জেলে ঢোকাবার ছেলে ভোলানো খেলা খেলা ,
আবার সেই রাজনৈতিকদের নিয়েই দলগঠন করে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন করা,
অর্থনীতির বারটা বাজিয়ে দৃশ্যমান কিছু উন্নয়ন কাজ চালিয়ে মানুষকে ধোঁকা বানানো,
সবই তো চলছে।

তবে ভবিষ্যতই বলে দেবে বাংলাদেশের ভাগ্যে কি আছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের ঘটনা একটি ছোট্ট সূচনা বলেই মনে করছি আমি। অতীতে বিভিন্ন সময়ে যতো বিশাল আন্দোলন গড়ে উঠেছিলো তার সূতিকাগার ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। জলপাইওলাদের দাঁত- নখ বের হবার সূচনা হলো সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। আফসোস !!

আমার ধারনা বর্তমান সামরিক সমর্থিত তথাকথিত তত্বাবধায়ক সরকার এটা সামলিয়ে উঠতে পারবে।
তবে মানুষের মনে যে ডাগ রেখে গেলো সেটা কি দূর করতে পারবে আদৌ??

বাংলার মানুষ বেত হাতে জেনেরেল দেখেছে অনেক, সেই জেনেরালদের পশ্চাতদেশে বাঁশ প্রবেশ করাতেও ভুল করেনি বাংলার মানুষ।

মানুষ খুব কম সময়ই ইতিহাস হতে শিক্ষা গ্রহন করে, এবারের উর্দিওলারাও শিক্ষা গ্রহন না করেই সেই একি পথ হাঁটছে।
মাঝখানে দেশ ও সাধারন মানুষের অবস্থা খারাপ।
এটা চলতেই আছে, ১৯৭১ , ১৬ ডিসেম্বর - ২০০৭ , ২১ অগাস্ট।
সময়তো কম হোলো না। আর কতো !!

বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট, ২০০৭

বঙ্গবন্ধুর কিছু ছবি

কোন মন্তব্য নেই :




এখন শুধুই কি স্মৃতি ??
অন্তরে চির জাগরুক রবে তুমি ,
স্বাধীনতার স্বপ্ন মানব ,
জাতির পিতা,
তোমার হত্যার প্রতিশোধ নেবেই একদিন বীর বাঙালী।।






সোমবার, ১৩ আগস্ট, ২০০৭

ভাবনা

কোন মন্তব্য নেই :
"একজন রাজাকার সবসময়ই একজন রাজাকার "
"একজন মুক্তিযোদ্ধা সবসময়ই একজন মুক্তিযোদ্ধা নয়"

বাক্য দুটো মনে ধরেছে। ভাবছি........................

১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করা কবি আল মাহমুদের আজকের ভূমিকা আর ৭১ এ নিরাপদ অবস্থানে থেকে পায়ের আওয়াজ মার্কা লেখা সৈয়দ হক বা ঢাকায় বসে দৈনিক পাকিস্তানে চাকুরি করা প্রয়াত কবি শামসুর রাহমান এর বর্তমান ভূমিকা।
মানুষের কতো পরিবর্তন !!

৭১ এ যে মানুষ অস্ত্র হাতে পাকি পশু মারতে গিয়েছিলেন সেই মানুষই আজ জামাত-শিবিরের কথা বলেন,
শিবিরের জলশায় কবিতা পড়েন ,
নিহত শিবির কর্মির উদ্দেশ্যে কবিতা লেখেন,
তাকে শহীদ বলে আক্ষ্যা দেন।

আজ সৈয়দ হক স্বাধীনতার কবিতা লেখেন ,
জয়বাংলা বলে শ্লোগান দেন ,
গনআদালতের উদ্যোক্তা হয়ে রাস্ট্রদ্রোহীর আসামী হন।

সময়ের পরিক্রমায় আর কতো যে দেখবো ।

এটা কি মানুষের পরিবর্তন ?
এটা কি সুবিধাবাদী নীতি ?
এটা কি উপলব্ধি?
না অভিজোযন ?

বর্তমান ভুমিকার জন্য কি অতীত মুছে যাবে ?
নাকি অতীতের জন্য বর্তমান?

রবিবার, ১২ আগস্ট, ২০০৭

মাথা ব্যাথা

কোন মন্তব্য নেই :
মানুষ বলিয়া থাকে , মাথা থাকিলেই নাকি মাথা ব্যাথা হইয়া থাকে।
কিন্তু আমার তো মাথাই নেই ,
তবে মাথা ব্যাথা কেনো ?
গলার সামান্য উপরে বিরল কেশ মুন্ডিত মাথা নামক এক বস্তু আছে বটে তবে সেটাকে মাথা বলিতেই লজ্জা লাগে।

মানুষের মাথার ভেতরে গ্রে ম্যাটার নামক কি এক বস্তু আছে বলে শুনেছি,
আমার মাথায়ও সেটা আছে নিশ্চয়ই।
তবে তা হতে এমন কিছু এ ধরাধাম এমন কিছু পায়নি যে তাহাকে মাথা বলিয়া কেনোইবা নিজেকে নিজেই লজ্জা দেবো !!
মাথা না বলিয়া মস্তকই বলি তাহা হইলে !!
মস্তক বলিতেই আমার বৃদ্ধ নানীর কথা মনে আসিলো,
উনি মস্তক বলেন।
এই যেমন গরুর মস্তক, মুরগীর মস্তক।
এখন যুক্ত করিতে হইবে মাহবুব সুমনের মস্তক।

মানুষের মস্তক হইতে কতোইনা স্মৃষ্টিশীল জিনিস আবিষ্কৃত হয়।
আমার মস্তক হইতে যতোসব ফালতু জিনিস।
সেই ফালতু মস্তকেই ব্যাথা অনুভব করিতেছি বিগত কদিন যাবৎ।

বড্ড পেরেশানীতে রহিয়াছি।
প্রচন্ড ব্যাথা হইলে কথা ছিলো, কেমন যেনো ঝিম ধরা ব্যাথা।
মাঝে মাঝে মনে হইতেছে সারা পৃথিবী ঘুড়িতেছে।
ভাগ্য ভালো বমি বমি ভাবের উদ্রেক হইতেছে না।
নইলে জনগন বলিতে থাকিতো " মাহবুব সুমন গর্ববতী "।

আসলেই মাথা ব্যাথা।
চরম বিরক্তিকর।
কিছুই ভালো লাগিতেছে না।

সোমবার, ৬ আগস্ট, ২০০৭

শেকড়

৪টি মন্তব্য :
কথায় কথায় My Country বলি দেখি দেখে একবার আমার এক হাউসমেট বলেছিলো, কেনো বলি !

অনেক ইন্ডিয়ানকেই বলতে দেখেছি " ইন্ডিয়া " বা চায়নিজকে কথায় কথায় " চায়না " বলতে।
তাহলে আমি শুধুই " বাংলাদেশ " না বলে কেনোই বা My Country বলি বার বার !!

আসলই কেনো বলি ?
মাঝে মাঝে ভাবী, কেনো ?

অনেক অনেক দিন আগের কথা , অস্ট্রেলিয়ান আর্মির এক ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের সাথে আলাপ হচ্ছিলো। আমার দেশ জানতে চাইলে যখন বলেছিলাম বাংলাদেশ তখন উনি বলেছিলেন আমি কি অস্ট্রেলিয়াকে ভালোবেসে এখানে থাকতে চাই ?
আমি ইতস্ততা করে বলেছিলাম; আসলে ভালোবাসা নয় , অর্থনৈতিক কারনই মুখ্য।

উনি উনার ইংলিশ বাবার কথা বলছিলেন। সেই ইংলিশ বাবা ৫০ বছর ধরে অস্ট্রেলিয়া , তবুও ইংলেন্ডকেই My Country বলেন সব সময়। সেই অস্ট্রেলিয়ান আর্মি অফিসার হেসে হেসে বলেছিলেন তার Old dad ইংলিশ হলেও উনি পাক্কা অজি। উনি এটাও বলেছিলেন আমার পক্ষে কোনোদিনই অস্ট্রেলিয়াকে My Country বলা হবে না। My Country বাংলাদেশই রয়ে যাবে।
হয়তো আমার পরবর্তি প্রজন্ম বলবে তারা "অজি "।

শেকড়, শেকড়।
শুভ ভাই এজন্যই বলেন " শেকড় পোঁতা রয়েছে বাংলা মায়ের নরম মাটিতে "। এ শেকড় কচুরিপানার শেকড় নয় যে পানিতে ভেসে বেড়াবে।

বাংলার শেকড় থেকে একদিন শাখা শেকড় বেরুবে। সে শেকড় অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রসারিত হবে।
আর আমি পিতৃ শেকড় এ মাটিতে প্রসারিত হতে পারবো না।
এটাই পরম সত্য।

চিরটাকাল স্বপ্নই দেখে যাবো পেছনে রেখে আসা বাংলা মাকে।
হয়তো ফেরত যাবো , হয়তো না।
সে স্বপ্ন কি পূরন হবে না ?
হবে।

আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি

কোন মন্তব্য নেই :

আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি
নির্মলেন্দু গুণ

সমবেত সকলের মতো আমিও গোলাপ ফুল খুব ভালোবাসি,
রেসকোর্স পার হ’য়ে যেতে সেইসব গোলাপের একটি গোলাপগতকাল আমাকে বলেছে, আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।

শহীদ মিনার থেকে খ’সে পড়া একটি রক্তাক্ত ইট গতকাল আমাকে বলেছে
আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।

সমবেত সকলের মতো আমিও পলাশ ফুল খুব ভালোবাসি,
‘সমকাল’ পার হয়ে যেতে যেতে সদ্যফোটা একটি পলাশ গতকাল কানে কানে আমাকে বলেছে,
আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।

শাহবাগ এ্যভিন্যুর ঘূর্ণায়িত জলের ঝর্ণাটি আর্তস্বরে আমাকে বলেছে
আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।

সমবেত সকলের মতো আমারো স্বপ্নের প্রতি পক্ষপাত আছে,
ভালোবাসা আছে শেষ রাতে দেখা একটি সাহসী স্বপ্ন গতকাল আমাকে বলেছে,
আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।

এই বসন্তের বটমূলে সমবেত ব্যথিত মানুষগুলো সাক্ষী থাকুক,
না-ফোটা কৃষ্ণচূড়ার শুষ্কভগ্ন অপ্রস্তুত প্রাণের ঐ গোপন মঞ্জরীগুলো কান পেতে শুনুক,
আসন্ন সন্ধ্যায় এই কালো কোকিলটি জেনে যাক -
আমার পায়ের তলার পুণ্য মাটি ছুঁয়ে
আমি আজ সেই গোলাপের কথা রাখলাম, আজ সেই পলাশের কথা রাখলাম,
আজ সে স্বপ্নের কথা রাখলাম।

আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি,
আমি আমার ভালোবাসার কথা বলতে এসেছিলাম।

বুধবার, ১ আগস্ট, ২০০৭

আজরাইলের ডাকে ইস্রাফিলের শিঙা

২টি মন্তব্য :
০০ ঘন্টা , ১ জুলাই ২০০৭
তীব্র আর্তনাদ করে উঠলো খুলনার পিপলস জুট মিলের হুইসেল,
পুরো একঘন্টা জুড়ে বাজবে এ হুইসেল,
এটা সিফট চ্যাব্জের হুইসেল ছিলা না,
এটা ছিলো মিলের মৃত্যু নিশ্চিত করে দেয়া চিরাচরিত রীতি।
আজরাইলের ডাকে ইস্রাফিলের শিঙা।

আজ থেকে পুরোপুরি বেকার হয়ে গেলো ৩৩৩৯ জন শ্রমিক।
পাওনা পরিশোধের পর শ্রমিকদের ছেড়ে চলে যেতে হবে মিল কোয়ার্টার থেকে। শুরু হবে আরেকটি অনিশ্চিত জীবন।
শীগ্রই বন্ধ হয়ে যাবে মিল স্কুল।
পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাবে ১৫০০ ছাত্র-ছাত্রীর পড়াশোনা।

কি আর হবে এসব অসহায় শ্রমিকের !
কি আর হবে স্কুলের ছেলে-মেয়েদের !

৩০ বছরে হাড় ভাঙা পরিশ্রমের পর হুতো চলে যেতে হবে রিক্ত হাতে সেই চির চেনা গাঁয়ে,
নয়তো রিকশা চালানো,
হয়তো ভিক্ষে করা,
নয়তো ছিনতাই-ডাকাতিতে নেমে পড়া।

কেউ দেখার নেই এদের ?
কেউ না।

ধনিক শ্রেনীর সুশিল প্রতিনিধি গীতি আরা বলেছেন " আল্লাহ দেখবেন এদের"
গরিবের আল্লায়ই ভরসা। আজকাল আল্লাহও দেখেন না এদের।
মোল্লারা বলে , আল্লাহ নাকি পরীক্ষায় ফেলেছেন এসব মানুষদের ঈমান পরীক্ষার জন্য "।
নেতারা বলেন "দুনিয়ার মজদুর এক হও "।

গীতি আরারা বলবেন আর এরা শুনবেন,
গীতি আরারা মিল প্রশাষনের নামে লুটবেন অর্ধশতাব্দি ধরে আর এরা সেই লুটের নিরব সাক্ষি হবেন,
গীতি আরারা আইএমএফ এর কথায় নাচবেন আর এরা চাকুরি হতে ছাঁটাই হবেন।
অথচ এদের ঘামে-রক্তেই গীতি আরাদের সমৃদ্ধি। এখন এরাই আল্লাহর মাল।

দেখারাম দেখে যায় খেলারাম খেলে যায়।

রবিবার, ২৯ জুলাই, ২০০৭

দ্রব্যমুল্যের উর্ধগতি ও সামরিক ছাগলের ম্যাতকার

কোন মন্তব্য নেই :
সারা পৃথিবীতেই নতুন সরকার আসলেই নানা রকম প্রতিশ্রুতির বন্যা বয়ে যায়। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রায় ৩৬ বছরে বাংলা মাতো কম দেখেনি।

সরকারের পর সরকার,প্রতিশ্রুতির বন্যা,
একজন মধুর নহর বইয়ে দেন তো আরেকজন দুধের নদী।
আর আমরা সাধারন পাবলিক বসে বসে দেখি আর আঙুল চুষি,
মাঝ মধ্যে হাওয়াই মিঠাই।
আমাদের পিঠে কাঁঠাল ভেঙে তারা প্রাসাদ গড়ে,
আর আমরা সেই প্রাসাদের সামনে "ফটু" তুলি !

বর্তমানের সামরিক সমর্থিত নপুংশক সরকার ও এর ব্যতিক্রম নয়।
নানা রকম প্রতিশ্রুতির বন্যা দিয়ে তার মিডিয়া ভাসিয়ে দিচ্ছে আর সকল সরকারের সময় সুবিধাভোগী "সুশিল (?) সমাজ ছাগলের তৃতীয় বাচ্চার মতো লাফাচ্ছে, দুধের ভাগ যদি একটু পাওয়া যায় !!

দ্রব্যমুল্য যে ম্যালথাসের সুত্রকেও ফেল মেরে দিচ্ছে সে খবর কি আছে ?

উনারা নানা রকম অভিজান শুরু করেছেন।
বিডিআর কে দিয়ে বাজার চালু করেছেন,
আনসারকে দিয়ে ন্যায্য মুল্যের দোকাল চালু করেছেন।
কিন্তু যে শালার যে লাউ সেই কদুই রয়ে গিয়েছে।
ছাগল দিয়ে তো আর হাল চাষ হয় না।

বন্যার পদদ্বনি শোনা যাচ্ছে,
রমজান মাস ' সংযমের মাসে ' মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের দামা বাড়াবার প্রতিযোগীতা আসছে,
আমদানী বন্দি সিন্ডিকেটের হাতে।
সিন্ডিকেট না ভেঙে কিভাবে নিত্যপ্রয়ৌজনীয় দ্রব্যের মুলবৃদ্ধি বন্ধ করা যাবে সে বিকার নেই সরকারের।

" উৎপাদক - ফড়িয়া - পাইকার- আড়তদার - খুচরা বিক্রেতা - ভোক্তা "এ চক্র ভাঙবে কে ?
গ্রামের চাষী যে জিনিস বিক্রি করে ১ কেজি চাল কেনেন সেই একি পন্য ঢাকায় বসে তারই ছেলে ৫ গুন দামে কেনে।
মাঝ খানে লাভের গুড় খেয়ে যায় মধ্যসত্বভোগীরা। দাম কমবে কি ভাবে ?

সড়ক পরিবহন সেক্টর পুরোপুরি বেসরকারীকরন করাতে এক শ্রেনীর পরিবহন ব্যবসায়ীদের কাছে বন্দি সরকার ও উৎপাদক শ্রেনী।
রেল পরিবহনকে যে কাজে লাগানো যায় সেটা কি ভাবছে সরকার ?

আমদানী শুল্ক কমাতে হবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের। এ খানে আমদানী শুল্ক না কমিয়ে কমানো হয় বিলাস দ্রব্যের। মাঝে মাঝে মনে হয় আমলাদের বুদ্ধি মাথায় না থেকে থাকে মধ্যপ্রদেশে। আফসোস।

মিষ্টি কথায় চিড়ে ভেজে না। যতোই সিপিডির সাথে বসে বড় বড় লেকচার ঝাড়া হোক না কেনো খেলার মাঠে তার প্রয়োগ না দেখাতে পারলে পাবলিক গ্যালারীতে বসে থাকবে না।

দূর্নীতি দমন অভিজান , সংস্কার ইত্যাদি ইত্যাদি হ্যান তেন যতোই বাতচিত করা হোক না কেনো মানুষের পেটে ভাত না থাকলে সেই সব বাক্য বানি হিব্র ভাষার মতোই অবোধ্য হয়ে যাবে।

অর্থনীতিকে সচল ও সবল না রেখে আর যাই হোক দেশে শান্তি আনা যাবে না।
বাঙলার মানুষ অতীতে এরকম অনেক দেখেছে,
সামরিক বুটের শব্দ থেকে গালভরা ম্যাতকার শুনেছে।
তারপর এক সময় ঠিকই ছাগলকে খোয়াড়ে পাঠিয়েছে।
এবারো তাই হবে।

শনিবার, ২৮ জুলাই, ২০০৭

ঠাকুরগাঁ , আমার ছোট্ট শহর, আমার শৈশব

কোন মন্তব্য নেই :
ঠাকুরগাঁ , আমার ছোট্ট প্রিয় শহর।
বাংলাদেশের ম্যাপের এককোনায় লুকিয়ে থাকা ছিমছাম ছোট্ট একটি শহর।

বাবার ছিলো বদলির চাকুরি। একবার সবাইকে পাঠিয়ে দিলেন ঠাকুরগাঁয়।৩ রুমের ছোট্ট একটি টিনের বাসায় থাকতাম সবাই মিলে। আম্মু , আমরা ৩ ভাই বোন, প্রায় সমবয়সী ছোট দুই চাচা, এক ফুফু আর আমার গ্রেট "কাকা"। কাকার ছিলো বিশাল এক মটরবাইক। পুরো শহরে কাকার মতো এতো বড় মটরবাইক আর কারো ছিলো না। সেটা নিয়ে আমারো ছিলো অনেক গর্ব। বাসার টিনের চালে বৃষ্টির শব্দে শান্তির ঘুমের কথা এখনো ভুলতে পারি না।

বাসার সামনে সামনে বিশাল এক মাঠ। বিকেলে সবাই মিলে টেনিস বল দিয়ে বোমবাস্টিং বা সাত চাড়া খেলা। মাঝে মাঝে একটু আধটু মারামারি !!

গুড্ডি ওড়ানোর কথা বলতেই হয়। সারাটা দিন ধরে সুতায় মান্জা দেয়া। (মানজা দেবার কতো যে তরিকা ছিলো !!) গুড্ডি কাটা কাটির মহাযুদ্ধ (আসলেই মহাযুদ্ধ), ভোকাট্টা গুড্ডির পেছনে পাগলের মতো ছুটে বেড়ানো, একটা গুড্ডি পেলে বীরের মতো সবাইকে দেখানো, আবার নিজের গুড্ডি কাটা গেলে কাঁদা । কি দারুন দিন ছিল সব।

সাইকেল চালানো শিখেছিলাম সেখানে। বয়স কতোই বা তখন। এই ৫ কি ৬। সাইকেলের সিটে বসতে পারতাম না। হাফ প্যাডেলে সাইকেল চালিয়ে সারা শহর ঘুরে-বেড়ানো। আহ, দারুন দিন ছিলো সেসব।

সে সময় ঠাকুরগাঁয় পড়তাম ফুলকুড়ি নামে ছোট্ট একটি কিন্ডারগার্ডেনে । টুকটুকে হলুদ রঙের ইউনির্ফম। হেডমিসট্রেসের নামটা মনে নেই, উনার মেয়ের সাথে ছিলো আমার হাড্ডা হাড্ডি লড়াই। সেটা মাঠে নয়, পড়াশোনায়। ও হতো প্রথম আর আমি দ্বিতীয়। আমার আর প্রথম হওয়া হলো না সেখানে।

শুক্রবারে যে মসজিদে মিলাদ হতো সেই মসজিদে দল বেঁধে ছুটে যেতাম। কোথায় নামাজ, চোখ ও মন পরে থাকতো তবারকের দিকে। মিলাদ শেষ হতেই তবারক নিয়ে হুড়োহুড়ি।

দুজন স্যারের কাছে পড়েছিলাম সসময়। জন্মদিনে জীবন স্যারের দেয়া ঝিনুকের গিফটের কথা ভুলতে পারি না। অসীম স্যারের কাছে পড়েছিলাম কিছুদিন। স্যারের প্রিয় বাই সাইকেলের প্রতি ছিলো দারুন লোভ। চুরি করে কতো যে চালিয়াছি ! স্যার পরে কলকাতা চলে যান। অসীম স্যার ছিলেন বিখ্যাত কার্টুনিস্ট শিশির ভট্টাচার্যের ছোট ভাই।

একবার বাড়ী থেকে পালিয়াছিলাম। অনেককেই দেখতাম বাড়ী হতে পালাতে, আর আমি পালাবো না !! সে কি হয় ? আম্মু একবার দুষ্টুমির জন্য মার লাগালেন। আর আমি সেই মার খেয়ে বাসার পেছন দেয়াল দিয়ে সোজা পালালাম। এক্কেবারে গ্রামের বাড়ী। পড়নে ছিলো হাফ প্যান্ট ও সাদা স্যান্ডো গেনজি। গ্রামের বাড়ী যেতেই দাদা পুকুরে জাল ফেল্লেন, পালানোর পুরষ্কার । গরম গরম মাছের ভাজা। বিকেলে কাকা আমাকে ঠাকুরগাঁ নিয়ে আসলেন। তখন আম্মুর কি আদর। এখনো ভুলিনি।

সেই ছোট্ট শহর আর সেই ছোট্ট নেই। ছোট থেকে বড় হয়েছে। নতুন নতুন বাড়ী হয়েছে, কাঁচা রাস্তা হয়েছে পাকা । লোক জন বেড়েছে। তবে প্রিয় শহর প্রিয়ই রয়ে গিয়েছে।

বয়স বেড়েছে , পুরোনো বন্ধুরা পুরোনোই রয়ে গিয়েছে। এখনো সবাই এক সংগে দেখা হলে সেই আগের বয়সে ফীরে চলে যাই। মাঝে মাঝে মনে হয় টাইম ট্রাভেল করে যদি ফীরে চলে যাওয়া যেতো শৈশবের সেই সব দিনগুলোতে।

কোথায় গেলো সেই সব দিন !!

শুক্রবার, ২৭ জুলাই, ২০০৭

দিনের খেরোখাতা , জুলাই ২৭

কোন মন্তব্য নেই :
সকালে ঘুম থকে উঠতে মহা আলসেমী হয় আজ কাল। ডে অফ ছিলো আজ। তবুও প্রতিদিনকার মতো মতো সকাল ৮ টায় এলার্ম সেট করে রেখেছিলাম মোবাইলের এলার্মে। ৮ টায় এলার্ম বেজেছিলো কিন্তু টের পাইনি। ঘুম যখন ভাঙলো তখন ১১ টা বাজে !!

বিছানা থেকেই সুঘ্রান পাচ্ছিলাম ভুনা খিচুরীর। একেতো শীতের সকাল তার উপর আলেসমী। ঘুম থেকে উঠেই সোজা ডায়নিং টেবিলে। গোগ্রাসে ভুনা খিচুরী সাথে ডিম ভাজা। মনে হচ্ছিলো অনেকদিন এরকম খিচুরী খাইনি।

আজ বউকে সাথে নিয়ে সপ্তাহের কাঁচা বাজার করলাম। অন্য দিন গুলোতে এতো তাড়া হুড়ো থাকে যে শান্তিতে বাজারটাও করা হয়ে উঠে না। বেলকোনিনের ফ্রেস ফ্রুট মার্কেটে গিয়েছিলাম। এক গাদা মাছ কিনেছি। মাঝারি সাইজের একটি অস্ট্রেলিয়ান স্যামন, ব্লু ম্যাকারেল, মুলেট ও ছোট মাছ। ইচ্ছে ছিলো বেশ কয়েকরকম শাক কিনবো। কিন্তু কেনা হলো পালঙ শাক/ ইংলিশ স্পিনাচ , পাক-চোয় নামের এক এশিয়ান শাক।

সন্ধ্যায় প্রিয় ভিশন নামের এক সংঘটনের কিক-অফ অনুষ্ঠান ছিলো। বাসায় বাজার সদাই রেখে ছুট লাগালাম সেখান। অনেক বাঙালীর সাথে দেখা হলো সেখানে। সংগঠনটি মূলত এদেশে জন্মগ্রহন করা বা এদেশে বড় হওয়া অজি-বাংলাদেশী ছেলে-মেয়েদের জন্য হলেও সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়েছি।

হট চিলি সস দিয়ে চারকোল চিকেন খেয়ে বাসায় যখন ফীরে এলাম তখন বাজে ৭:৩০ ।

কিচেনে এখন মাছ ভাজা হচ্ছে, ইয়াম্মি.....

বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০০৭

আড়াই মাসে দেখা বাংলাদেশ, একটি ক্ষুদ্র চিত্র ১

1 টি মন্তব্য :
এপ্রিল ২০ থেকে জুলাই ৩ ,
প্রায় আড়াই মাস টানা কাটালাম বাংলাদেশে এবার। প্রতি বছরই দেশে যাবার মহাব্যায়বহুল ভালো অভ্যাস থাকাতে বাংলাদেশের পরিবর্বতনটা চোখে খুব একটা পড়ে না,চোখে পড়ে না ঢাকার পরিবর্তন বা আত্মীয় স্বজনদের মাঝে পরিবর্বতনটুকু। তবে চর্মচক্ষুতে না পড়লেও মনের চোখে অনেক কিছুই ধরা পরে।

বাংলাদেশে জীবন যাত্রার ব্যায় প্রচন্ড বেড়েছে। কিন্তু সেই হারে বাড়েনি মানুষের আয়। আয় ও ব্যয়ের এ বিশাল ফারাকে মানুষের নাভিঃশ্বাষ অবস্থা,বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্যদের। নিম্মবিত্যদের আয় না বাড়লেও জীবনযাত্রার নুন্যতম চাহিদাটুকুই মেটানো অনেকক্ষেত্রেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমুল্যের ক্রমাগত উর্ধগতির সাথে পাল্লা দিতে না পেরে দারিদ্রসীমার নিচ হতে আরো নিচে চলে যাচ্ছে তারা। যদিও সিপিডি বা সরকারের থিংক ট্যাংক এসব স্বীকার করছে না বা করবে না, যদিও তারা এটা জানে ভালো ভাবেই।

মধ্যবিত্যদের অবস্থা আরো করুন বলা যায়, করুন বলছি এ কারনে যে আমিও এই শ্রেনী হতে আসা একজন মানুষ। এ শ্রেনীকে যতো মাছ হতে দেখতে পাই অন্য দুই শ্রেনীকে ততোটুকু পাই না।
এদের আয় বাড়েনি কিন্তু ব্যায় বেড়েছে।
এরা না পারে জীবনযাত্রাকে উন্নত করতে ,না পারে নামাতে। উভয়সংকটে পরা এক শ্রেনী "মধ্যবিত্য"।

আমার এক বন্ধুকে দেখেছি। ১৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনে চাকুরি শুরু করা সেই বন্ধু আজ ৪৫ হাজার পাচ্ছে। ৩০ হাজার টাকা বেতন বাড়লেও জীবনযাত্রার মান ঠিক রাখতে গিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কিছুই সে রাখতে পারে না।
সে মিজেই বলে বেতন বাড়ছে, বাড়ছে খরচ, কমছে ভবিষ্যতের নিরাপত্তা।
সম্ভবত এ রকম অবস্থা আরো অনেকরই।

সরকারের সর্বশেষ বেতন স্কেলে দেখেছি সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ম বেতনের মাঝে আকাশ-পাতাল ফারাক। অথচ একজন সিনিয়র মোস্ট সেক্রেটারির যেমন সংসার চালাতে হয় তেমনি একজন পিয়নেরও সংসার চালাতে হয়। সেই একি খরচে, সেই একি শহড়ে। অথচ বেতনের কতো বিশাল ফারাক।

ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার খরচ,
বাসা ভাড়া,
বাজার খরচ,
ওষুধ ও চিকিতসা,
আর কতো হাবি জাবি,
জীবনতো চালাতে হবে !

এই সামান্য বেতনে এতো সব খরচ কি মেটানো সম্ভব ?
আমি অগাবগা মাহবুব সুমন বলছি। " সম্ভব নয় "।
তা হলে উপায় ?
টাকা দরকার, ছেলের দুধের টাকা জোগার করতে হবে। টাকা কোথা হতে আসবে ??

উপায় "দূর্নীতি"

যার সন্তান ক্ষুদায় কাতর,
যার সন্তান ওষুধের অভাবে কাতরাচ্ছে,
যার স্ত্রী একটি ছেঁড়া শাড়ি পড়ে আছে সেতো চাইবেই যে ভাবেই হোক টাকা যোগার করে আনতে।

দূর্নীতিকে আমরা অবশ্যই খারাপ বলতে পারি , তবে অভাবের যাতনায় যে মানুষটি দুর্নীতি করছে তাকে কি আমরা খারাপ বলতে পারবো ?
অভাব দূর না করে আর যাই হোক দূর্নীতি দূর করা যাবে না।

বুধবার, ২৫ জুলাই, ২০০৭

মানুষের হিপোক্রেসী

৩টি মন্তব্য :
মানুষের হিমোক্রেসী খুব কষ্ট দেয় আমাকে, মাঝে মাঝে প্রচন্ড অবাকও করে। ক্ষুদ্র জীবনে অনেক মানুষের সাথেই পরিচিত হবার সৌভাগ্য ও দূর্ভাগ্য দুটোই হয়েছে।

খুব ভালো মানুষ যেমন দেখেছি তেমনি পরিচিত হবার দূর্ভাগ্য হয়েছে ভালো মানুষের মুখোশ পড়া ভন্ড ও কুৎসিত মানুষের সাথে। প্রবাদে আছে "একজন সরব শত্রুও ভালো একজন নিরব বন্ধুর চাইতে",এটাকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিয়ে সব সময়ই বলি " ভালো মানুষের মুখোশ পড়া ভন্ডের চাইতে একজন প্রকাশ্য খারাপ মানুষ হাজারগুনে ভালো "।

অনেককেই নানা রকম নীতির কথা বলতে দেখি, নৈতিকতার কথা বলে মুখে ফেনা তুলতে দেখি। আবার সেই মানুষকেই নিজের স্বার্থে সেই নৈতিকতাকে ভুলে যেতে দেখেছি। প্রচন্ড অবাক হয়েছি।

অনেককে ঘুষ-দূর্নীতির বিরুদ্ধে কলাম লিখতে দেখা গেলেও নিজে দূর্নীতির সাথে ওতোপ্রতোভবে যুক্ত। একজন ঘুষখোরের ছেলের সাথে নিজের মেয়ের বিয়ে দিতে সে কি প্রচন্ড আগ্রহ !! ঘুষের টাকায় বাহাবা নিতে কার্পন্য করেন না। অবাক হয়েছি।

অনেক কবি -সাহিত্যিকে দেখেছি স্বৈরাচার বা অপশাষনের বিরুদ্ধে গল্প-উপন্যাস-কবিতা লিখতে। আবার সেই স্বৈরাচারের কাছ হতেই গুলশানে প্লট বা আর্থিক সুবিধা নিতে কার্পন্য বোধ করেনি করেন না। অবাক হয়েছি জাতির এই সব বিবেক নামক মানুষদের কীর্তি দেখে।

ধর্মের লেবাশ পড়তে দেখেছি অনেককে, দেখেছি ধর্মের কথা বলতে বলতে বলতে আবেগময় হয়ে উঠতে। আবার সেই মানুষকেই দেখেছি ধর্মের নামে অধর্মের কাজ করতে। হজ্ব করে এসে চোরাকারবারী- মাদক পাচার করতে। রোজা রেখে ঘুষ খাওয়া যাবে না বলে ইফতার করে ঘুষ নিতে দেখেছি। দাড়ি-টুপি রেখে ধর্মীয় পরিচয়ে ভালো মানুষের রুপ নিয়ে ভন্ডামি করতে দেখেছি। আবাক হয়েছি।

নারী অধিকারের কথা বলে গিয়ে মাইক্রোফোন ফাটিয়ে ফেলার উপক্রম করেছিলেন যেই বহুল পরিচিত মানুষটি সেই মানুষটির স্ত্রীকে ছুটে যেতে দেখেছি থানায়, সেই মহামানব স্বামীর নির্যাতনের হাত হতে বাঁচার জন্য। অবাক হয়েছিলাম তখন।

ভালোবাসার কথা বলতে বলতে স্বপ্নবাজ বানিয়েছিলো যে মানুষটি সেই মানুষটির ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলো যে মানুষটি, সেই মানুষটির মোহ ভেঙেছিলো যখন বুঝতে পেরেছিলো সবুই ছিল শুধুই অভিনয়। প্রচন্ড অবাক হয়েছিলাম।

এখন আর অবাক হই না। মনে হয় এটাই বাস্তবতা। এটাই মানুষের স্বভাব। মানুষের আর সব স্বভাবের মাঝে হিপোক্রসিও একটি।

সোমবার, ২৩ জুলাই, ২০০৭

ঠিক এ মুহুর্তের রাজনৈতিক ভাবনা

২টি মন্তব্য :
দেশের রাজনৈতিক অবস্থার কথা ভাবছি।
ঠিক ১ বছর আগের বাংলাদেশ ও আজকের বাংলাদেশ !! কতোই না ফারাক। সেমসয় ছিলো বিএনপি-জামাতের জোট আর আজ সামরিক সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকার।

দূর্নীতি দমন অভিযানের নামে চলছে ধরপাকড়,
অতীতের মতোই সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার তত্বাবধানে চলছে নতুন দল গঠনের পালা,
আর্মি চিফের বক্তৃতা চলছে সমান তালে,
চলছে সামরিক প্রেসক্রিপশন,
সংবিধান সংশোধনের নামে আবারো সংবিধানকে ধর্ষনের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে আবারো,
চলছে অধ্যাদেশের মাধ্যমে নিত্য-নতুন আইন প্রনয়ন,
আরো অনেক অনেক কিছু ।

কিন্তু যার জন্য এতো কিছু সেই গনতন্ত্র কবে আসবে ???
জনগনের অধিকার কি প্রতিষ্ঠিত হবে ?
সেটা কবে ??

ভোটের কথা হচ্ছে,
বলা হচ্ছে ২০০৮ নাগাদ সব কিছু ঠিক ( সব কিছু ? ) থাকলে নির্বাচন হবে।
ভোটার লিস্ট তৈরি করা শুরু হয়নি এখনো,
ভোট কি আদৌ হবে ??
ভোট হলে কি ধরনের সরকার আসবে ??
অতীতের মতোই দলগুলোকে কি সমান সুযোগ দেয়া হবে ??

জরুরী অবস্থা কবে তুলে নেয়া হবে?
এরকম আরো অনেক অনেক প্রশ্ন মনে জাগছে এ মুহুর্তে।

ভোট স্মৃতি

1 টি মন্তব্য :
ভোট দেবার বয়স হবার পর প্রথম ভোট দেবার সুযোগ পাই ৯৬ এর সাধারন নির্বাচনে। তখন থাকতাম ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে । বাসার কাছেই ঢাকা কলেজে ছিলো ভোট সেন্টার।

আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসুরি যুক্ত না থাকলেও নিরব সমর্থক সবসময়ই। এ সমর্থন যতোটুকু দলগতভাবে তার চাইতে আদর্শগত। হাজি মকবুল ইসলাম ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ব্যক্তিগত ভাবে তার সম্পর্কে ভালো ধারনা না থাকলেও তাকে ভোট দিয়েছিলাম শুধু আওয়ামী লীগ করার কারনে। ভোট দেবার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিলো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখা, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ পূনঃপ্রতিস্ঠা করা। তবে সেটা হয়েছিলো সেটা অন্য প্রসংগ।

২০০১ এর সাধারন নির্বাচনের সময় বাসা ছিলো উত্তরা । সেবারো ভোট দিয়েছিলাম আওয়ামী লীগে। সেটা অন্ধভাবেই। ঠিক অন্ধভাবে বল্লে ভুল হবে। উদ্দেশ্য ছিলো আওয়ামী লীগকে আরো একবার সুযোগ করে দেয়া ও বিএনপি-জামাতের অশুভ জোটকে প্রতিহত করা। আমার সে স্বপ্ন সফল হয়নি।

এখন ২০০৭ সাল। এবার নির্বাচন হয়নি। কবে হবে বা আদৌ হবে কিনা সেটা বলা মুশকিল।

ভোট হলে কোন দলে বা কোন ব্যক্তিকে ভোট দিবো এবার সেটা ভাবার বিষয়। প্রথম ও দ্বিতীয়বার ভোট দেবার সময় যুক্তির চাইতে আবেগ কাজ করেছিলো বেশী, তবে নিশ্চিত ভাবে এবার সেটা হবে না। দলীয় আদর্শের চাইতে দেশ বড় সবসময়ই। এটাই কাজ করবে। যে দল সমর্থন করছি সে দল তার দলীয় আদর্শ কতটুকু ফলো করছে সেটাও দেখার বিষয়। মুখে আদর্শের কথা বলবে আর কাজে-কর্মে সেই আদর্শের প্রতিফলন দেখা যাবে না তা তো হতেই পারে না।

একটা পরিবর্তন দরকার এখনই। সারা পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে আমরা যে এগিয়ে যাওয়া চেয়ে দেখবো সেটা হতে পারে না। পরিবর্তি প্রজন্মের কাছে কি উত্তর দেবো আমি বা আমরা ? !

শনিবার, ২১ জুলাই, ২০০৭

দিনের শ্লেট

কোন মন্তব্য নেই :
সকালে ওঠার তাড়া ছিলো না। ঘুম যখন ভাঙলো তখন প্রায় ১২ টা বাজে। গরম গরম পরোটা-মুরগির মাংস দিয়ে নাস্তা সেরে ইউনির দিকে ছুট লাগালাম। যেতে ১ ঘন্টা লেগেছিলো। ইউনির পাসওয়ার্ড কাজ করছিলো না। সেটা ঠিক করতে গিয়ে আমার মহামুল্যবান সময় কিছুটা নষ্ট হোলো।

খুব ঠান্ডা । সূর্যের দেখা মিল্লেও ঠান্ডার হাত হতে নিস্তার নেই। সূর্য মামাও মনে হয় রোদ পোহানোর জন্য উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছিলো। পথে যেতে যেতে পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে মেঘের দলের আনাগোনা মনটাকে কি রকম জানি উদাস করে দেয়। মনে হয় কবিতা লিখতে পারলে কবিতা লিখে ফেলতাম একখান।

সকালের নাস্তা দুপুরে হওয়ায় বিকেলে এক সময় মনে হোলো পেটে চামচিকে বুকডন দিচ্ছে। বউ সহ লেবানিজ এক রেস্তরান্তে গিয়ে গ্রিল চিকেন, এক গাদা ঘাস লতা-পাতা, চিপস ও কোমল পানীয় দিয়ে পেট পূজো শেষ যখন বেরুলাম তখন উপলব্ধি হোলো যে আমি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি। আগেতো পুরো একটা মুরগী নিজেই সেটে দিতাম, আজ সেখানে মুরগী আধেকটুকু খেতেই জান বেড়িয়ে যাচ্ছিলো।

সিভিক লাইব্রেরীতে অনেক দিন পদধূলি দেয়া হয় না। ভাবলাম একবার পদধুলি দিয়ে তাকে ধন্য করে আসি। ৩ টা বই নিলাম। একটা আনক্লিনটনের "মাই লাইফ ", গ্রিক হিস্ট্রি ও একটা ওয়েব ডিজাইন করার বই।

বাসা আসতে আসতে আঁধার হয়ে গিয়েছে। বাসায় গিয়ে সোজা হিটারের সামনে। ওম শান্তি।

বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০০৭

ছোটবেলার গল্প

1 টি মন্তব্য :
তখন খুব ছোট , গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতে হতো বাবার চাকুরির সুবাদে। মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, স্বাধীনতার পরবর্তী প্রজন্ম যাকে বলে আর কি। ৭১ এ পাকিস্তানি সৈন্যরা যেখানে ঘাঁটি গেড়েছিলো ঠিক সেখানেই থাকতে হতো আমাদের।

মুক্তিযুদ্ধ শেষ হবার ১০ বছর পরের কথা বলছি। মুক্তিযুদ্ধ সময়কার অনেক স্মৃতিই তখন বিদ্যমান। পাক বাহিনীর ব্যাংকারের আভাস পাওয়া যায়। বিল্ডিং এ মাঝে মাঝে গুলির আঘাত বা মাটিতে গুলির খোসা, কখনোও বা জীবন্ত গুলি। একবার পুরোনো এক কুয়ো সেঁচে প্রচুর জীবন্ত গুলি, বেয়োনেট, আর হাড়-গোড়। খুব ছোট থাকলেও ওগুলো দেখে খুব কষ্ট লেগেছিলো। পাকিস্তানী সৈন্যদের নৃশংসতার নিদর্শন। খুব ভয়ও লেগেছিলো আশে পাশের অনেকের কাছ হতে অনেক ভয়ংকর গল্প শুনে। আজো সেই কথাগুলো মনে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আগ্রহের সুচনা বলা যায় সে সময়ই।

মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই, ২০০৭

ঠান্ডা আরো ঠান্ডা

৪টি মন্তব্য :
এই মুহুর্তে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর কমবে বলে মনে হচ্ছে। প্রচন্ড ঠান্ডা পরেছে আজ এখানে। হাড় কাঁপানো ঠান্ডা, এমন ঠান্ডা যে বুকের মাঝে ঢুকে যেতে চায়।

ঝিড়ি ঝিড়ি বৃষ্টি পড়ছে বাহিরে।
আবাহওয়ার পূর্বাভাসে বলেছে তুষার পাত হতে পারে আজ রাতে। ২০০৫ এ একবার তুষার দেখেছিলাম, পেঁজা তুলোর মতো তুষার পরছে আকাশ থেকে, দেখতে দারুন লাগে।

আজ দূপুর পর্যন্ত ঘুমিয়েছি। বিকেলে বউ সহ কফি খেতে বাহিরে গেলাম, আমি কাপাচিনো, বউ হট চকোলেট।সাথে টুকটাক উইনডো শপিং, টুকটাক গ্রোসারী শপিং।
সংসার, আসলেই মজার।

সোমবার, ১৬ জুলাই, ২০০৭

সংসার শুরু করেছি, স্বপ্ন ও সুখ

৩টি মন্তব্য :
অবশেষে সংসার জীবন শুরু করেছি।

আমাদের বিয়ের বয়স ১ বছর ৪ মাস ৬ দিন হলেও সংসার শুরু করেছি মাত্র ৮ দিন হলো। এর আগে আমি ছিলাম অস্ট্রেলিয়ায় , বউ ছিলো বাংলাদেশে।সাত সমুদ্র তের নদীর দুরত্ব।

বিয়ের পর বউয়ের সাথে মাত্র ২৫ দিন থাকার পর অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসতে হয়েছিলো।বউ বাবার বাড়ী - শশুড় বাড়ী করে দিন কাটিয়েছিলো, আর আমি একা এখানে।

৭ জুলাই ক্যানবেরায় এসে পড়লাম প্রচন্ড ঠান্ডায়। ঢাকায় ছিলো ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর ক্যানবেরায় ৪ ডিগ্রি। এ যেনো জ্বলন্ত চুলো থেকে ফ্রিজে এসে পরা।

বাসা তৈরিই ছিলো। টুকটাক কেনা কাটা , সংসার সাজানো। কতো যে কাজ। ভালোই লাগছে। নিজেকে পরিপুর্ন মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে অবশেষে বড় হয়ে গিয়েছি !

প্রচন্ড সুখী মনে হচ্ছে।
এ যেনো স্বপ্নের স্বার্থক বাস্তবায়ন।

বাংলাদেশ কি পাকিস্তানের পথে?

কোন মন্তব্য নেই :
প্রথমে তাদের দেশের বাহিরে নির্বাসনে পাঠানোর কথা ভেবেছিলো তত্বাবধায়ক সরকার ওরফে তথাকথিত সামরিক সমর্থিত (?) সরকার আদতে ছায়া সামরিক শাষকগোষ্ঠী।

ব্যার্থ সেখানে।

শেখ হাসিনার গ্রেফতার করা হোলো।
বেগম খালেদা জিয়া কেও গ্রেফতার করা হবে !?

চলছে দূর্নীতি দমন অভিযান।
টার্গেট ?
:: রাজনীতিবিদ।
কাদের ধরা হচ্ছে ?
:: যারা উর্দিওলাদের কথা শুনছে না বা শুনবে না।

------------------
পাকিস্তান আমলে জেনারেল আইউব খান কি করেছিলো ?
:: মুসলিম লীগ কে ভেংগে ৩ টুকরো, অনুগত এক মুসলিল লীগ তৈরি।
পাকিস্তানে প্রয়াত সামরিক শাষক জেনারেল জিয়াউল হক ?
:: সেই একি কাজ, একদল পদলেহী রাজনৈতিক গোষ্ঠী স্মৃষ্টি।
এখন, জেনারেল মোশারফ ?
:: বেনজির ও নওয়াজ শরীফকে নির্বাসন।
সুবিধাভোগী একদল রাজনীতিবিদ দিয়ে পদলেহী দল গঠন ও দেশ শাষন।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রাক্তন আমলা দিয়ে দেশ শাষন।

সেই একি কাজ প্রকান্তরে চলছিলো বাংলাদেশও।
শেখ হাসিনাকে দেশের বাহির হতে আসতে বাধা প্রদান বা বেগল জিয়াকে ওমরার নামে সৌদি আরবে নির্বাসন, যা করা হয়েছিলো নওয়াজ শরিফের সাথে।এ ক্ষেত্রে মিল পাওয়া যায় পাকিস্তানের সাথে।

পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশেরও সরকার প্রধান একজন প্রাক্তন বিশ্বব্যাংক আমলা।

বিগত ও বর্তমান সামরিক সরকারের সময় পাকিস্তানে কি হয়েছিলো ?
:: দূর্নীতি দমনের নামে ধরপাকড় ও রাজনীতিকে কঠিন করে তোলার জন্য দমন নীতি।

ঠিক একি কাজ করা হচ্ছে বাংলাদেশেও।
দূর্নীতি দমনের নামে চলছে ধরপাকড় ও রাজনীতিকে কঠিন করে তোলার জন্য দমন নীতি।

মাইনাস টু থিউরি যা পাকিস্তানের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়েছিলো তা একি ভাবেও প্রয়োগ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বাংলাদেশেও।

প্লাস ওয়ান ( নতুন দল গঠন ) থিউরি যা প্রয়োগ করা হয়েছিলো পাকিস্তানে সব সময় সেই একি থিউরি প্রয়োগ করা হচ্ছে বাংলাদেশেও।

প্রকাশ্য ও ঘোরোয়া রাজনীতি নিষিদ্ধ। তবুও চলছে নতুন দল গঠনের পালা। সরকারের সমর্থনে বিভিন্ন দল থেকে সুবিধাভোগীদের ভাগিয়ে নিয়ে নতুন দল গঠন চলছে। নতুন বোতলে পুরোনো মদ।

পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশেও রাজনৈতিক দল গুলো ভেঙে ফেলার জন্য সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর নোংরা ব্যবহার করা হচ্ছে।
------------------
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। বংগবন্ধুর সময়টুকু বাদ দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময়ই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে এসেছে পাকিস্তাব সেনাবাহিনীর সাথে। ট্রেনিং থেকে শুরু করে ইন্টেলিজেন্স শেয়ারিং এ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর দারুন সম্পর্ক। দুটো সামরিক বাহিনীর অনেক মিল রয়েছে, যা বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর সম্পর্কে ধারনা আছে এমন যে কেউ বুঝতে পারবেন। বাহিনী দুটোর মাঝে মানসিক মিলও অনেক। এ জন্যই পাকিস্তানের সামরিক শাষকদের সাথে বাংলাদেশ সামরিক শাষকদের কর্মধারা , চিন্তা-চেতনা বা বক্তব্যের মিল অবাক করে না।

গনতন্ত্র আনয়নের নামে এরা প্রকান্তরে গনতন্ত্রকেই হত্যা করছে। তবে এটা বোঝার বোধ বোধোহয় এদের নেই। দুটো বাহিনীর বুদ্ধিই থাকে হাঁটুতে।

গনতন্ত্রই একমাত্র সমাধান।
তবে তা পিঠে রাইফেল লাগিয়ে চাপিয়ে দেয়া জলপাই মাখা গনতন্ত্র নয়।
জয়তু গনতন্ত্র, জয়তু মানবতা।
জয়বাংলা।

বুধবার, ১১ জুলাই, ২০০৭

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম

কোন মন্তব্য নেই :
তখন খুব ছোট্ট আমি।
বয়স কতো আর হবে সেটাও মনে নেই।
মফস্বলের ছোট্ট একটি শহরে থাকি তখন। জন্মদিনে আম্মু একটি বই কিনে দিলেন আমাকে,
"একাত্তরের দিনগুলি - জাহানারা ইমাম ", প্রচন্ড এক উত্সাহে বইটি পড়েছি সেটা মনে পরে।

ঢাকা তখনো দেখেনি। ছোট্ট একটি শিশুর চোখে ঢাকাকে কল্পনা করতাম। কিভাবে গেরিলারা একশনে যাচ্ছে, ঢাকার কোথায় কোথায় একশন হলো, রুমি-জামীর গল্প, এলিফ্যান্ট রোডের গল্প, সন্তানের জন্য একজন অসহায় মাতার ছুটোছুঁটি,কতো যে গল্প......... । ভাবতাম, ইস ... আমি যদি রুমির মতো হতে পারতাম !

বইয়ের পাতায় পাতায় ছিলো মুক্তিযুদ্ধ ও একজন মাতার কথা। বইটি এখনো আছে আমার কাছে। হয়তো বহু পড়া জীর্ন মলাট !
প্রিয় কিছু বইয়ের অন্যতম।

১৯৯২ সালে যখন শহীদ জননী ৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি গঠন করলেন, গন আদালত তৈরি করলেন তখন ১৪ বছরের এক কিশোর আমি। হোস্টলের কঠিন বেড়া ডিঙিয়ে যাওয়া হয়নি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সেই ঐতিহাসিক উদ্যানে । বিশাল একটি আক্ষেপ রয়েই গেলো সারাটা জীবনের জন্য।

এলিফ্যান্ট রোডের তাঁর বাসায় যখন যেতাম তখন কল্পনার চোখে ভাবতাম , এই এই বাসায় থাকতেন শহীদ জননী !! এই পোর্চে উনি হেঁটে হেঁটে বাহিরে যেতেন !! এই বেড রুমে উনি ঘুমাতেন !! এই রান্না ঘরে উনি শহীদ রুমির জন্য বার্গার বানাতেন !!

দেখা হয়নি তাঁর সাথে। তখন তিনিআমাদের ছেড়ে অনেক দূরে।
এখনো এলিফ্যান্ট রোড দিয়ে যাবার সময় মনে পরে যায় তাঁর কথা। মনে হয় এই রোড দিয়ে একসময় শহীদ জননী হেঁটে যেতেন!!

গতকাল ২৬ জুন ছিলো তাঁর মৃত্যু বার্ষিকী। ১৩ টি বছর, ১৩ টি বছর............মা ও মা.....তোমায় আজ খুবি দরকার।
কেনো তুমি চলে গেলে? কেনো ? কেনো ??
তুমিও নেই সেই আন্দোলনও নেই। আজ তোমাকে খুবই দরকার ছিলো আমাদের।খুবই...
আজ সেই ঘাতক দালাল ঘুলো লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে গাড়ি হাঁকায়। আমি চেয়ে চেয়ে দেখি। কিছুই করতে পারি না।
অক্ষম এক মানুষ আমি। ক্ষমা করো আমাকে। ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারি না আমি।
---------
গত ২৬ শে জুন ছিলো শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যু বার্ষিকী। জীবনে কোলাহলে অনেকই ভুলে গিয়েছি তাঁর কথা আমরা। একজন অক্ষম মানুষ হিসেবে ব্লগ লিখে স্বরণ করা ছাড়া আর কি করতে পারি !! শ্রদ্ধান্জলি শহীদ মাতা।
---------
ছবিঃ মুফতি মুনির ( http://www.adhunika.org/ )

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা: পক্ষ-বিপক্ষ

কোন মন্তব্য নেই :
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা আজকাল রাজনৈতিক অর্থেই বেশী ব্যবহৃত হতে দেখা যাচ্ছে।

১.
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলতে গিয়ে আজকাল এক ধরনের রাজনৈতিক মেরুকরন দেখা যায়। আওয়ামী লীগ ঘরানার মানুষ মনে করেন যেহেতু তারা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন সেহেতু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লাইসেন্সিং তাদের একান্তই নিজস্ব। তাদের মতের সাথে না মিল্লেই আরেকজনকে চেতনার বিরোধী বলে দেয়া হয়।
যে "জয়বাংলা " শ্লোগান দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে যেতেন সেই জয়বাংলা শ্লোগান যেনো আওয়ামী লীগের নিজস্ব সম্পততি। আবার জয়বাংলা শ্লোগান দিলেই কিছু মানুষ আওয়ামী লীগার বানিয়ে দেয়। আজব সব ব্যপার। আবার জয়বংগবন্ধু শ্লোগান না দিলেও সেই ব্যাক্তিকে অনেকসময়ই চেতনার বিরোধী বলা হয়।ধরা যাক, একজন মুক্তিযোদ্ধা। উনি বামপন্থায় বিশ্বাষ করেন বা কোনো দলই করেন না। উনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে জয়বাংলা বলেন কিন্তু জয়বংগবন্ধু বলেন না। এই জয়বংগবন্ধু না বলার কারনে কি তাঁকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী বা রাজাকার মনোভাবসম্পন্ন বলা যাবে ?

২.
৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের কথা একটি চিরন্তন সত্য। ছোট কিছু বামপন্থি দলের ক্ষুদ্র অংশ ( উদাঃ আবদুল হকের পূর্ব বাংলার কম্যুনিস্ট পার্টি ) ছাড়া সব দলের সম্পৃক্তাতেই মুক্তিযুদ্ধ সফল হয়েছিলো। তবে সেই সময় বামপন্থিদের যুদ্ধে অংশগ্রহন করাটা অনেকক্ষেত্রেই দূসাধ্য ছিলো। প্রতিটি ইয়থ ক্যাম্পের দ্বায়িত্বে থাকতেন একজন এম.এন.এ বা এম.এল.এ, যারা মূলত আওয়ামী ঘরানার ব্যক্তি। যারা মুক্তিযোদ্ধা রিক্রটের প্রাথমিক দ্বায়িত্ব পালন করতেন। এসময় অনেকসময়ই দেখা হোতো মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনুচ্ছ ব্যক্তি আওয়ামী লীগ করেন কি না বা পাকবাহিনীর চর কি না। একজন ব্যক্তি আওয়ামী পরিচয় দিতে পারলে যতোটুকু সহজ হতো যুদ্ধে অংশগ্রহন করে ততোটুকুই কষ্টসাধ্য ছিলো বামপন্থায় বিশ্বাষ করলে। সেক্টর ২ তে যতোসংখক বামপন্থায় বিশ্বাষী মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া যায় অন্য সেক্টর গুলোতে সেই সংখ্যায় বামপন্থি মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া যায় না।
এটা বলা হচ্ছে এই ভেবে যে, একজন বামপন্থি আওয়ামী চিন্তা চেতনায় বিশ্বাষী না হলেই বলা যাবে না যে উনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সৈনিক নন।

৩.
অনেকই আছেন যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন ও অন্তরে ধারন করেন কিন্তু রাজনৈতিক বা সামাজিক মূলধারার সাথে সম্পৃক্ত নন কোনো ভাবেই। এ সম্পৃক্তহীন কারনে তাদের প্রকাশ করার সুযোগ থাকে না বা সম্ভব হয় না। এখন তাদেরকে কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী বলা যাবে ?
এটা বলা হচ্ছে সেই সব মানুষদের কথা ভেবে যারা দেশপ্রেমিক, নিরব যোদ্ধা, সাধারন মানুষ যারা চেতনা ধারন করেন কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে মিশে ঝাঁকের কৈ হতে চান না বা হোন না।

৪.
বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ না।৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ যে কোনোক্রমেই ইসলামের বিরুদ্ধে ছিলো না সেটা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি (জামাত ও অন্যান্য ইসলামজীবি দল) ছাড়া অন্য সবাই স্বীকার করবেন।
জামাত যেমন ইসলাম কে ব্যবহার করে তাদের হীন, নোংরা স্বার্থ চরিতার্থ করতে চায় এবং পাপ ঢাকতে চায় তেমনি কিছু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষ ইসলামের সাথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে গুলিয়ে ফেলেন। তাদের অনেকের কাছেই কাছে মনে হয় ইসলামের বিরোধীতা করা মানেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শক্তিশালী করা।
ধরা যাক, একজন ষাটোর্ধ মুক্তিযোদ্ধা, ধর্মভীরু, ইসলামে বিশ্বাস করেন ও তা পালন করেন বা চেষ্টা করেন। এই ধর্মে বিশ্বাস করা বা পালন করার কারনে কি তাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষ বলা যাবে?

৫.
মুক্তিযুদ্ধে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের কোনোরকম ম্যানিফেস্টো ছিলো না এবং ধর্ম সেখানে মুখ্য কোনো বিষয় ছিলো না। ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রগঠনে বিশ্বাসী জামাত-এ-ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামজীবি দলগুলোর ( নেজামে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও অন্যান্য কিছু ভুঁইফোর দল) ক্ষুদ্র অংশের বিরোধীতা সত্বেও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ দেশ স্বাধীন করার চেতনায় একতাবদ্ধ হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলো।
এই ধর্মান্ধ গোস্ঠী এখনো তত্পর, প্রকারন্তরে আরো শক্তিশালী, আশার বিষয় তা তৃনমূল পর্যায়ে নয়। এই অপশক্তি অতীত ও বর্তমানে ইসলামকে ব্যবহার করে এসেছে। এদের সাথে যোগ হয় কিছু পীর নামক ব্যবসায়ী। শীতকালে ওয়াজ বা ওরশ নামের নোংরা উত্সবে মানুষের ঢল দেখে এদের মনে হয় যে বাংলার মানুষ তাদের পক্ষে। তবে নির্বাচনের সময় এদের গো-হারা প্রমান করে দেয় এদের অজনপ্রিয়য়তা। এর মাধ্যমে এটাই কি প্রমান করে না যে মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসি হতে পারে তবে ধর্মান্ধ নয় !
এটার মধ্য দিয়ে আমি বলতে চাই যে একজন ধর্মভীরু মানুষ ( সে যে ধর্মেই বিশ্বাসী হোক না কেনো) ধর্মান্ধ নাও হতে পারেন । এ কারনে ইসলামকে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষ বলে গুলিয়ে ফেলেন তাদের এ গুলিয়ে ফেলা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ঐক্যকেই দূর্বল করে দেয়।

৬.
একজন মানুষ ধর্মভীরু হতেই পারেন । সেটা তার অধিকার। মুক্তিযুদ্ধের মুল লক্ষে গুলোর একটি ছিলো সব ধর্ম ও মতের সমান অধিকার ও পালন করার স্বাধীনতা অর্জন। একজন মানুষ ইসলামের কথা বল্লেই সোজাসুজি তাকে পাকিস্তান পন্থি বা জামাত পন্থি বলে দেয়া যায় না ঠিক যেমন যায় না একজন মানুষের হিন্দুত্বের সাথে ভারতের দালাল বলে দেয়া।
আজকাল দেখা যায়, একজন মানুষ দাড়ি-টুপি রাখলেই তাকে জামাত পন্থি বলে দেয়া হয়। তার সে লেবাস তার ধর্মীয় ভাবধারা থেকে আসতে পারে , তার মানে এই না যে সে একজন রাজাকার।
এ প্রসংগে গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একটা পোস্টারের কথা বলতে চাই। সে পোস্টারে একটি কুকুরের মাথায় টুপি পড়িয়ে তাকে রাজাকার-জামাতী বলা হয়েছিলো। সেই পোস্টারকে পূঁজি করে জামাতী ও বিএনপি প্রচার করেছিলো আওয়ামী লীগ ইসলাম বিরোধী যা গ্রাম ও শহরের সাধারন মানুষকে বিভ্রান্ত করেছিলো খুব সহজেই।
এ উদাহরনের মাধ্যমে বলতে চাচ্ছি, এ ধরনের রাজাকার বানানোর ব্রান্ডিং আখেরে ক্ষতিই টেনে আনে।
বেগম সুফিয়া কামাল একজন প্রবল ধার্মিক মানুষ ছিলেন। তবে চেতনায় ছিলেন একজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সৈনিক।তার ধর্মীয় বিশ্বাস ও পালন তার চেতনাকে দূর্বল কি করে দিয়েছিলো ?
ইসলাম পালন ও বিশ্বাস করলেই তাকে ধুম করে রাজাকার বা জামাত বলে দেয়া যায় না, এটা বুঝতে হবে অনেককেই।

৭.
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা রাজনীতির খেলার মাঠ ছাড়াও সাহিত্যে বহুল ব্যবহৃত হয়।
দেশের কবি-সাহিত্যিক দের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধ ও চেতনা নিয়ে নানা কিছু লিখে থাকেন। আমাদের এ লেখা-লেখি অনেক ক্ষেত্রেই ২৬ শে মার্চ বা ১৬ ডিসেম্বর নির্ভর। তবে এর অনেক ব্যতিক্রমও আছে।
লেখালিখি অনেক সময়ই ব্যক্তিপূজায় চলে যায়। বংগবন্ধু শেখ মুজিব বা মেজর জিয়া কেন্দ্রিক, লেখকদের মাঝে পার্টিজান মনোবৃত্তি বেশ লক্ষনীয়। তবে এটাও লক্ষনীয় যে এ ধরনের লেখা-লেখিতে সাধারন মুক্তিযোদ্ধা বা বীরাংগনা তেমন আসেই না। অনেক সময়ই যুদ্ধের বর্ননা যেভাবে দেয়া হয় সেভাবে দেয়া হয়না ৭১ এ ভারতে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১ কোটি শরনার্থির কথা !
আমাদের সাহি্ত্যের জগতে যে সব তথাকথিত বিশাল মানুষরা রয়েছেন তাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রত্যক্ষ যুদ্ধের অভিগ্যতা নেই। আমার চেনা ও জানা মতে কবি রফিক আজাদ ছাড়া আর কাউকেই দেখিনি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে।
কবি রফিক আজাদ যখন রাইফেল হাতে টাঙাইল ফ্রন্টে ঠিক তখন কবি শামসুর রাহমান দৈনিক পাকিস্তানে কর্মরত বা সৈয়দ হক পায়ের আওয়াজ মার্কা লিখেছেন লন্ডনে বসে। বাস্তব অভিগ্যতা ছাড়া এই সব লেখককে শুধু আবেগ সম্বল করে লিখে যেতে হয়।
শারিরীক স্বামর্থ থাকা ও অনেকের পিছুটান না থাকলেও অজানা কারনে তারা যুদ্ধে যাননি। যুদ্ধের বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে লেখা ও নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে লেখার মাঝে অনেক ফারাক রয়েছে।
তাদের চেতনার ব্যপারে কোনো প্রশ্ন তুলছি না, সেটা তোলাও ঠিক হবে না। তাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি শুধু কলমবাজি করলেই চেতনার প্রকাশ হয়ে যায় না। বাস্তব জগতেও সেটা প্রমানও করতে হয়, যার সুযোগ সে সময় কি তাদের অনেকের ছিলো না?

৮.
মধ্যবিত্য সমাজে অনেকের কাছেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা এক ধরনের ফ্যাশনের মতো। আমার কাছে এটাই মনে হয় আজকাল।
পত্রিকার পাতায় ফিচায় বা বড় বড় কলাম লিখতে পারে অনেকেই কিন্তু পত্রিকার পাতায় যখন কোনো হতদরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা কথা বলা হয় তখন জানতে ইচ্ছে হয় ঠিক কয়জন সেই সব কলাম বাজ সেই মুক্তিযোদ্ধার পাশে এসে দাঁড়ান !!
পত্রিকার পাতায় মুক্তিযোদ্ধাদের দারিদ্রের কথা বা মুক্তিযোদ্ধা পিতার সামনে মেয়েকে ধর্ষন করার খবর বেশ ফলাও করে প্রচার করা হয়। " ব্যাড নিউজ ইজ গুড নিউজ " । আর আমরা মধ্যবিত্য কলামপেশী বা ব্লগারুরা সেটা নিয়ে বড় বড় কথা বলি কিন্তু পাশে এসে দাঁড়াতে বল্লে নানা কারনে সেটা এড়িয়ে যাই।
চেতনার কথা শুধু কলমের নিভে না এসে বাস্তব জগতে তার প্রয়োগও করতে হয়। এটাও মনে রাখতে হয়।

৯.
মুক্তিযোদ্ধার চেতনা বড় বড় কথা দ্বারা প্রকাশ করতে হয় কাজ দ্বারা। এটা আমি বেশ কবার বলতে চেয়েছি। তবে এরও অনেক ব্যতিক্রমটা বলছি এখন।
আমাদের এই ছোট্ট সবুজ দেশটিতে অনেক নিরব যোদ্ধা রয়েছেন যারা চেতনা বুকের ভেতর লালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের যাদুঘরে দেখেছি অনেকেই অনেক টাকা দিয়েছেন কিন্তু নাম প্রকাশ করেননি। এই সব নিরব চেতনার সৈনিকদের চেতনার কি মুল্য নেই? অবশ্যই আছে। এই সব নিরব সৈনিকদের সংখ্যাই কিন্তু বেশি।

জলপাই চরিত (মিলিটারি নামা)

কোন মন্তব্য নেই :
মিলিটারি , আর্মি, জলপাই ওলা যেই নামেই ডাকি না কেনো আমরা ক্যান্টনমেন্ট নামের চিড়িয়া খানায় বসবাস তাদের। একদল সংঘবদ্ধ ও প্রশিক্ষিত নেকড়ের দল।

রিক্রুটের প্রথম দিন থেকেই তাদের তৈরি করা হয় হত্যায় পারদর্শি করে। দেশের সাধারন মানুষদের মধ্য থেকে তাদের আগমন হলেও তাদের মনে এমন একটা ধারনা ঢুকিয়ে দেয়া হয় যেনো তারা সাধারনের চাইতেও অসাধারন।

" ব্লাডি সিভিলিয়ান " বলে জনমানুষকে হেয় ও ছোট করে দেবার প্রবৃত্তি প্রশিক্ষনের প্রথম দিন থেকেই দেয়া হয় তাদের। এ জন্য পিতা-মাতা সিভিলিয়ান হলেও ব্লাডি সিভিলিয়ান বলে গালি দিতে তাদের একটুকুই বাঁধে না। এমন এক মন মানসিকতায় তারা চলে যায় যে গালি যে তারা দিচ্ছে সেই বোধ টুকুও তাদের লোপ পেয়ে যায়।

অফিসার ও জওয়ান ট্রেনিং , দুটোতেই তাদের মনে এমন একটা ধারনা দিয়ে দেয়া যেনো তারা দেশের সবচাইতে শ্রেষ্টতর মানুষ এবং দেশের বাকি সব মানুষ দূনীতি বাজ ও অথর্ব। ট্রেনিং এর প্রতিটি পর্যায়ে একজন মানুষ হিসেবে তৈরি না করে একজন সিজনড খুনি হিসেবেই তৈরি করা হয় এদের।

আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও এখনো কলোনিয়াল মন মানসিককতায় আচ্ছন্ন এদের অফিসার গোত্র। জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশনে গিয়ে অবশ্য মন- মানসিকতার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। তবে দেশে ফেরত চলে আসার পর সেই পরিবর্তিত মানসিকতা আবার পরিবর্তিত হয়ে যায় অন্যান্য চিড়িয়ার সংস্পর্শে এসে।

ক্যান্টনমেন্ট নামের চিড়িয়াখানায় বসবাস করা এসব চিড়িয়া সব সময়ই দেশের সাধারন জনমানব থেকে বিচ্ছিন্ন। সাধারনের সাথে মিশে যতটুকু পরিবর্তন ঘটে ক্যান্টনমেন্ট নামক চিড়িয়াখানায় ফেরত গিয়ে সে টুকুও তারা ভুলে যায়। "মানুষ-নেকড়ে-মানুষ-নেকড়ে-... " একটা অসীম চক্রে ঘুর্নায়মান সব সময়।

দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্ভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য জনগনের করের টাকায় আর্মিকে তৈরি করা হলেও স্বাধীনতার পরবর্তি প্রতিটি সময়ে এদের দেখা গিয়েছে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে। এজন্য অবশ্য দায়ী করা যায় দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যার্থতাকেও। সামরিক বাহিনীর এ প্রবৃত্বি চলে আসছে মূলত পাকিস্তান আমল থেকেই। এই মন মানসিকতার পরিবর্তন কিছুদিনের জন্য বন্ধ থাকলেও সময় ও সুযোগ বুঝে বার বার মাথা চারা দিয়ে উঠে। দেশের আর দশটা সরকারি সংস্থার মতো হলেও তৃতীয় শক্তি হিসেবে রয়ে গিয়েছে সব সময়। যার কুৎসিত প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি আমরা এখন।

দেশের মানুষ যখন রাজনৈতিক দলগুলোর লুন্টনে অতিষ্ট ঠিক সে সময় আর্বিভাব ঘটলো সামরিক বাহিনীর। একসময় পর্দার আড়ালে থাকলেও সামনে চলে আসছে এরা। দেশের মানুষ প্রথমে শান্তির নিশ্বাস ফেল্লেও আস্তে আস্তে তাদের বোধোদয় ঘটবে। মানুষের স্মৃতি হতে অতীতের সামরিক শাসনের কথা এখনো হাড়িয়ে যায় নি।

মুখে ললি-পপ নিয়ে কিছু ক্ষনের জন্য হয়তো মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায় তবে তা স্থায়ি হয় না। সামরিক বাহিনী হলো সেই ললি-পপ। প্রথমে মিষ্টি পরে তা হাওয়া। মানুষ এখন আতংকিত, ভীত । অনেকে মনে করছে দেশ এখন শান্ত , কোনো সমস্যা নেই। এটা একপ্রকার ঝড়ের পুর্বে শান্ত আবহাওয়া। খুব বেশি দিন লাগবে না এ মোহো ভাঙতে।

সামরিক বাহিনী আসলে ট্রেন সময় মতো ছাড়ে কিছু দিন, রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম কমে, গাছের নিচে চুন কাম চলে কিছু দিন। এর তলে তলে চলে লুন্ঠন। সামরিক বাহিনী যদি দেশের পরিবর্তন ঘটাতেই পারতো তবে অতীতের জিয়া - এরশাদের মতো জলপাই কৃমিরা দেশকে অনেক দূরে নিয়ে যেতে পারতো। তাদের ব্যাংকের একাউন্টের আকার বাড়লেও সাধারন মানুষে যেই মফিজ ছিলো সেই মফিজ ই রয়ে গিয়েছিলো।

মানুষ এখন দেখছে রাস্তায় কান ধরিয়ে উঠা বসা করাচ্ছে মটর বাইক চালানোর সময় হেলমেট না পড়াতে, মানুষ এখন দেখছে কান ধরিয়ে দাড় করিয়া রাখছে রাস্তায় হর্ন বাজানোতে, মানুষ দেখছে সন্তানের সামনে বাবার অপমান, মানুষ দেখছে ৬০০০ টাকা বেতনের এসআই এর কলার চেপে টেনে নেবার দৃশ্য, মানুষ দেখছে বড় চুল রাখার জন্য মাথা নেড়ে করে দেবার দৃশ্য। হয়তো কেউ হাত তালি দিচ্ছে, হয়তোবা না।

যেদিন তাকে কান ধরিয়ে দাঁড়িয়ে রাখবে সন্তানের সামনে সেদিন আর কেউ চোখের পানি ফেলবে না বা হাত তালি দেবে না। মোহো ভাঙবে অতীতের মতোই আবার।

তিমি মাছ ধরা হচ্ছে, ধরা হচ্ছে রাঘব বোয়াল, ধরা হচ্ছে রুই কাতলা।
ধরা হচ্ছে না জলপাই রঙের পাঙাস মাছ বা রাঘব বোয়াল মাছ। ধরা হবেও না।
জলপাই তো আর জলপাই খেতে পারে না।

----------
কিছুটা এলোমেলো লেখা, ভেবে চিন্তে না।

আমার জীমঃ নবযুগ শরীর চর্চা কেন্দ্র

কোন মন্তব্য নেই :
ছোটবেলায় খুব হেংলা পাতলা থাকলেও কিছুটা বড় হবার পর থেকেই শরীরের ওজন আতংকজনক ভাবে বাড়ছিলো। একসময় তা বিশাল অবস্থা ধারন করলো। এটা অবশ্য অনেকটাই পারিবারীক ভাবে পাওয়া।

প্রেম ভালোবাসাও ছিল না যে গার্লফ্রেন্ড কে মুগ্ধ করার জন্য ভালো ফিগার থাকতে হবে। হোস্টেলে খেলা ধুলার মধ্যে থাকায় শরীরের ওজন স্বাভাবিক হলে আসলেও ছুটিতে বাসায় আসলে সেই লাউ সেই কদু হয়ে যেতাম।

তখন ১৯৯৩ সাল, এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়ে অফুরন্ত অবসর । ৪/৫ মাস খেলাধুলা থেকে দূরে থাকায় ওজন এমন বেড়ে গিয়েছিল যে আমার বন্ধু সন্জু বল্লো তুই ফুটবল খেলবি না ফুটবল তোরে নিয়ে খেলবে ! চরম অপমানজনক কথা।

তখন পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলিতে থাকতাম। বাসার খুব কাছেই সদরঘাটে " নবযুগ শরীর চর্চা কেন্দ্র"। ঢাকার অন্যতম পুরোনো জীম। এক সময় নাম ছিল কায়দে আজম ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। ভর্তিহয়ে গেলাম সেখানে। ওস্তাদ হিসাবে পেলাম বিখ্যাত জাহাংগির ভাইকে। জাহাংগির ভাই ৪৫ বছরের মস্তপালোয়ান, নয়াবাজারের এক সময়ের মাস্তান। পুরান ঢাকার ঐতিহ্য হিসাবে 'ল্যাংগোট' পড়ানোর ছোটখাটো একটা অনুষ্ঠানও হোলো জীমে সেবার। ল্যাংগোট হোলো কাপড়ের তৈরি অন্তবার্সের মতো একটা জিনিস, বিশেষ ভাবে তা পড়তে হয়। আগের দিনের পালোওয়ানরা ওটা পড়ে ব্যায়াম করলেও আমি তা শর্টেসের নীচেই পড়তাম, শরম লাগতো এমনি এমনি পড়তে।

বয়স কম থাকাতে সবাই আমাকে খুব পছন্দ করতো। ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ দিয়ে শুরু, দীর্ঘ ৩ বছর ফ্রি হ্যান্ড করে গিয়েছি। ইন্সট্রুমেন্ট যাকে ওখানে লোহা বলতো আমাকে করতে দেয়া হতো না।অনেক পরে কলেজ পাস করার পর প্রথম ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করি। ৩ বছরের ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ আমাকে একটি সুন্দর স্ট্রাকচার দিয়েছিল যার অনেকটা এখনো আছে।

পাটুয়াটুলি থেকে আগা মাসিহ লেনে চলে আসার পরো থেমে থাকেনি জীম। পরে এলিফ্যান্ট রোডে চলে আসার পর যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিহলাম তখন পড়াশুনার চাপে অনেক কিছুর মতো আমার ভালোবাসা জীমকেও বিদায় দিতে হয়েছিল।

পুরান ঢাকার ঐতিহ্য হোলো কুস্তি। ল্যাংগোট পড়ে মাটিতে কুস্তি লড়া। আমিও বেশ কিছুদিন কুস্তি শিখেছিলাম। সে আরেক ভালোবাসা। গ্রেকো রোমান কুস্তির কায়দা কানুন শিখলেও রিংয়ে নামা হয়নি বয়স ও যোগ্যতা কম থাকায়।

বক্সিং ফেডারেশন থেকে একবার বক্সিং ক্যাম্প হয়েছিলো। খুব আগ্রহ থাকাতে আমিও বেশ অনেকদিন শিখেছিলাম, যদিও এ খেলাটাকে আমি এখন আর পছন্দ করি না। বক্সিং করতে গিয়েই আমার জীবনের প্রথম বড় একটা দূঘটনা ঘটে। প্রাকটিসের সময় হঠাৎ মাথায় আঘাত লাগে। সামান্য বমি হলেও তা কেয়ার করিনি সে সময়। পরের দিন প্যারালাইজড এর মতো অবস্থা কিছুটা। অনেক দিন ভুগিয়েছিল এটা এবং এর রেশ কিছুটা আজো রয়ে গিয়েছে। বাসার কেউ জানতো না যে আমি বক্সিং করতাম। গ্লোভস ও অন্যান্য গিয়ার জীমে রেখে আসতাম।

খুব ইচ্ছে ছিল "মিঃ ঢাকা" ও "মিঃ বাংলাদেশ" বডি বিলডিং এ অংশগ্রহন করবো। বয়স কম থাকতে ও ওরকম স্ট্রাকচারে পৌছুতে না পারায় সে স্বপ্ন আর পূরন হয়নি।

জীম আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। সুগঠিত শরীর ও আত্মবিশ্বাস। করেছে সাহসী। বক্সিং শিখলেও আমি জীবনে কখনো কারো উপর তা প্রয়োগ করিনি। ওস্তাদ বলতেন যে বক্সিং জানে না , তার সাথে যেনো কোনোদিন তা প্রয়োগ না করি। আমি এটা সব সময় মেনে চলি। তবে বডি বিলডিং করাতে অনেকটা ড্যাম কেয়ার ভাব চলে এসেছিল এক সময়। মনে হয় এখনো অনেকটা আছে। কিছুটা আক্রমনাত্মক ও ।
জীবনের একটা খুবি সুন্দর সময় কেটেছিল সে সময়। খুব সুন্দর মনের অনেক মানুষের সাথে পরিচয় ও বন্ধুত্বহয়েছিল সে সময় এবং সেই সব জীম বন্ধুদের সাথে এখনো যোগাযোগ আছে।

আমার জীবনে নবযুগ শরীর চর্চা কেন্দ্রের অনেক অনেক অনেক প্রভাব।

শুক্রবার, ৬ জুলাই, ২০০৭

বাংলাদেশের তুলনা শুধুই বাংলাদেশ

কোন মন্তব্য নেই :

ছোট কালে ট্রান্সলেশন করতাম , "নজরুল ইজ দা বায়রন ওফ বাংলাদেশ" । এই জাতীয় আরো কিছু ট্রান্সলেশন ছিল। জানি না এখনো স্কুলের পোলাপানগো ওই জ্বালায় জ্বলতে হয় কি না।

আজকের কোনো এক বাঙলা পত্রিকায় পড়লাম " প্রাচ্যের অক্সফোর্ডঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি ছাত্র আসছে না " এই জাতীয় একটা একটা খবর। বিদেশী ছাত্র আসছে কি আসছে না এইটা নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নাই। আমার কথা কেনো " প্রাচ্যের অক্সফোর্ড" বলা হবে ! এটার মধ্যে আমি একধরনের দাসত্ব মুলক আচরন খুঁজে পাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজের মহিমায় উজ্জ্বল । শত সমস্যা ও দোষের মাঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের তুলনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তুলনা করা যেতে পারে গঠনমূলক দৃষ্টিতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে । তবে "প্রাচ্যের অক্সফোর্ড" জাতীয় কথা বলে বহু কাল আগের বাবু শ্রেনীর তোষন কথ্য ও লেখ্যর কথাই মনে পড়ে যায়। '

বড়িশাল বাংলার ভেনিস' , 'নারায়নগনজ বাংলার ডান্ডি ' ...এ জাতীয় বাক্য আমার কাছে প্রচন্ড বিরক্তিকর মনে হয়।

বৃটিশ প্রভুকে তেল মারা এসব বাক্য বাবুরা সৃষ্টি করলেও আমরা আজো তা মনের আনন্দে ব্যব হার করে যাচ্ছি।স্বাধীন দেশে থেকে মন মানসীকতায় সেই প্রাচীনত্বের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়াকে আমি বাজে ভাবে দেখি। দেশ কে নিয়ে গর্বকরতে হলে এইসব দাস সূলভ আচরন বাদ দিতেই হবে।
২০০৭-০৩-০৪ ০৪:২৬:৫২

বুধবার, ৪ জুলাই, ২০০৭

হালাল - হারাম দ্বন্ধ

৪টি মন্তব্য :

বিদেশে আসার পর হালাল-হারামের দ্বন্ধ অনেকেই পড়ে, মাঝে মাঝে সেইটা হাস্যকর পর্যায়ে পড়ে যায় . অনেককেই দেখেছি বিয়ার হাতে হালাল মাংস খেতে , যেনো হালাল মাংস ছাড়া বেহেশতে প্রবেশ করা যাবে না, বিয়ার-ওয়াইন খাইলে সমস্যা নাই মাগার হালাল মাংস ছাড়া ইসলাম চলে যাবে ! সাদা মেয়ের নিতম্বের দুলুনি দেখতে দেখতে হালাল মাংসের সন্ধান !

আমার অভিগ্যতা বলে মাছ , সবজি ও ডাল ছাড়া হালাল খোঁজা বেকুবি, সুপার মার্কেটে যেসব মাংস পাওয়া যায় সেটা আর যাই হোক তথাকথিত হালাল না

অনেক মুসলিম বুচারিতে হালাল মাংস পাওয়া যায় গরু, ছাগল বা ভেড়ার ক্ষেত্রে কিছুটা ঠিক হলেও মুরগির মাংসের ক্ষেত্রে হালাল খোঁজা বেকুবি 1/2 টা মুরগি আল্লাহু আকবর বলে জবাই করা গেলেও শত শত বা হাজার মুরগিকে নিশ্চই ওই ভাবে জবাই করে হালাল করা সম্ভব না । আমারতো গুরু-ছাগল-ভেড়ার ক্ষেত্রেও সন্দেহ আছে

ক্যানবেরাতে 2 টা মুসলিম বুচারি আছে, একবার জিগ্যাসা করাতে তারা 38 দাঁত বের করে হেসে বলেছিলো রেকর্ড করে আল্লাহু আকবর শোনানো হয় , আর মেশিনে গলা কাটা হয় ,আসলেই মজার হালাল,

ম্যাকডোনালডস, কে.এফ.সি, বাগার্র কিং ইত্যাদি ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্ট গুলোতেও হালাল মাংস খোঁজা বেকুবি, এইসব দানব চেইন রেস্টুরেন্ট গুলো নির্দিষ্ট কিছু সাপ্লায়ারের কাছ থেকে মাংস কেনে, তারা হয়তো কিছু নির্দিষ্ট রেস্টুরেন্টে হালাল মাংস সাপ্লাই দেয়। তবে আমার ধারনা সেইটাও সেই রেকর্ড করা হালাল করা, কিছু টার্কিশ ও লেবানিজ রেস্টুরেন্ট এ অবশ্য হালাল মাংসের কাবাব পাওয়া যায়। তবে সেই মাংসও যে রেকর্ড বাজানো হালাল না সেইটার গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না,

দেশেও দেখেছি 2 জনে মিলে গরু জবাই করতে, মৌলভিকে আসে পাশে দেখি নাই, নিউমার্কেটে একজনরে দেখেছি একাই মুরগি জবাই করতে, সেইটাও হালাল,

আমি ব্যক্তিগত ভাবে এতো খুঁত খুঁতে না। তবে বুঝে শুনে খাই ও কিনি। পর্ক আমি কখনই খাই না বা খাবার চেষ্টা করি নাই। এক রেস্টুরেন্টে কামলা খাটতাম। সেইখান কার শেফ আমাকে বলেছিলো কিছু কিছু খাবারে পর্ক ফ্যাট ব্যবহার করে থাকে। এ জন্য এনিমেল ফ্যাট থাকলে সেই খাবার কিনি না। নতুন কিছু খাবার খেতে দিলে জিগ্যেস করে নেই, সন্ধেহ হলে খাই না। আর হালাল শব্দটা এখন পরিচিত শব্দ। হালাল লেখা দেখে কিনি। ড্রিংক করি না। এই পর্যন্তই আমার হালাল-হারাম দ্বন্ধ।

বিয়ার হাতে হালাল মাংসের কাবাব খেতে খেতে শেতাংগেনী মেয়ের খোলা বুক-পিঠ-পা দেখলে হালাল কি আর হালাল থাকে ? সবাই না হলেও সংখায় এরা অনেক। আর ইসলামকে নিজের মতো করে ডিফাইন্ড করলে কার কি আসে যায়। যে বেশী খূঁত খূঁতে তার বাহিরে না খাওয়াই উচিৎ।
-----------
অসল মস্তিস্কের প্রলাপ
২০০৭-০৩-২৭ ০৮:২৫:৪৬

এ আজাদি ঝুটা হে, লাখো ইনসান ভুখা হে

কোন মন্তব্য নেই :

47 ভারত বিভাজনের সময় বামপন্থিদের এই স্লোগান যে মিথ্যা ছিলো না বর্তমান বাস্তবতা সেটা হাড়ে হাড়ে প্রমান করে।

1971 এর স্বাধীনতার ঘোষনা পত্রে বা স্বাধীন বাংলা সরকারের ঘোষনাপত্রে বা প্রথম সংসদে যে স্বপ্নের কথা বলা হয়েছিলো সেটা শুধু কাগজে কলমেই রয়ে গিয়েছে, বাস্তবে রূপ নেবার সাহস পায় নি।

অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা , আইনের শাষন, গনতন্ত্র, স্বাধীন বৈদেশিক নীতি, দূনীতিমুক্ত ও শোষনহীন সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদি ইত্যাদি কথা প্রতিটি সরকার বলে এসেছে। তবে তা কখনই সফল রূপ নেয় নি।

বংগবন্ধু সরকারের কাছ থেকে মানুষ যা আশা করেছিলো তার কোনোটাই তিনি বা তাঁর সরকার পূরন করতে পারেনি। এর ব্যার্থতার পিছনে নানা যুক্তি থাকতে পারে, তবে তিনি বা তার সরকার যে আশা পূরন করতে পারেন নি সেটা সত্য। জাতির পিতা বংগবন্ধু একজন সফল রাস্ট্রনায়ক হতে ব্যার্থ হয়েছিলেন পুরোপুরি।
পরবর্তিতে যে সব সরকার এসেছিলো মূলত তা গনতন্ত্রের আবরনে সামরিক ও একনায়ক শাষন। জিয়া - এরশাদের দীর্ঘ16 বছরের সামরিক ও একনায়ক শাষনের পরে বাংলাদশ গনতন্ত্রের স্বাদ পায় মূলত 1991 এ এসে। 1971 পরবর্তি প্রথম গনতান্ত্রিক নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে বি.এন.পি , পরবর্তিতে আওয়ামি লীগ , আবার বি.এন.পি এবং বর্তমানে অন্তবর্তিকালীন সরকার।

স্বাধীনতার এ 36 বছর পরে কি পেয়েছি আর কি পাইনি সেটা লিখতে গেলে সেটা মহাভারত হয়ে যাবে।

একটা স্বাধীন দেশ, লাল-সবুজ পতাকা আমাদের গর্ব হলেও এটা অনেকটাই মধ্যবিত্ত সূলভ আবেগ আমার কাছে, যখন দেশের এক বিশাল অংশ এখনো চরম দারিদ্্র সীমার মধ্যে বসবাস করে।

এই দীর্ঘ 36 বছরে কিছুমধ্যবিত্ত শ্রেনী উচ্চ বিত্তে রূপান্তরিত হয়েছে, গ্রাম থেকে এসে এক শ্রেনীর মানুষ মধ্যবিত্তের কাতাড়ে দাড়িয়েছে, তবে উচ্চবিত্ত আরো উচ্চবিত্ত হয়েছে। নিম্ন ও উচ্চবিত্তের ব্যবধানটা এতো বেড়ছে যা একটা স্বাধীন - সার্বভৌম দেশে আশা করা যায় না। এই শ্রেনী ব্যবধানটা দিনকে দিন বেড়েই যাচ্ছে। মাইক্রো ক্রেডিট নামক স্যালাইনে নিম্নও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেনী বেঁচে বর্তে থাকলেও সামগ্রিক অর্থে ভাগ্যের তেমন একটা পরিবর্তন ঘটছে না।

শিল্পায়নে অগ্রগতি হলেও সেখানে রয়েছে বিশাল শোষন। ৳1650 সর্বনিম্ন বেতন ধার্য করে মালিক পক্ষ আত্মতৃপ্তিতে ঢেঁকুর তুল্লেও শ্রমিক তথা নিম্মবিত্তের নাভিঃশ্বাষ।

71 এ মুক্তিযুদ্ধে নিম্নবিত্ত শ্রেনীর বিশাল অংশগ্রহন থাকলেও পদকের ক্ষেত্রে হতে হয়েছিলো বনচিত। চেয়ার টেবিলে বসে মেজর নূর বীর প্রতিক পেলেও অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করা অজানা শহীদ পায়নি কোনো পদক।

বি.এন.পির প্রথাম টার্মে ধুমধাম করে পদক বিতরনের অনুষ্ঠান দেখে অনেকে চমৎকৃত হলেও আমাকে কষ্ট দিয়েছিলো। সাধারন পোষাকে, কম্পিত পদক্ষেপে , ভীত মা যখন তার সন্তানের পদক নিচ্ছিলো তখন আমার মনে হচ্ছিলো এই তো শেষ, পদক নিয়ে মা ফীরে যাবে গ্রামের সেই কষ্টের জীবনে । হয়তোবা পদক বন্ধক দিয়ে চাল কেনার টাকা যোগার করতে হবে তাকে।

কেউ মনে রাখিনি আমাদের এই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের , তাদের পরিবারকে। 26 মার্চ , 16 ডিসেম্বরে আমাদের আবেগ উথলিয়ে পরে, পরে সবই ভুলে যাই আমরা। পরিপূর্ন সম্মান ও পুরস্কার কখনোই পায়নি আমাদের সেই বীর মুক্তিসেনারা। পত্রিকার পাতায় খবর পড়ে মনটা এতোই খারাপ হয়ে যায় যে নিজের কাছে নিজেকেই ছোট লাগে।বিবেকর কাছে প্রশ্নযাগে।

আজ স্বাধীন বাংলা পতাকা উড়িয়ে রাজাকার গাড়ি হাঁকায়, ক্ষমতার চেয়ারে বসে। বিচারের বানী কাঁদে তখন চিলেকোঠায়।

আজ দূনীতি আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ।
আজ স্বাধীন বৈদে শিক নীতি স্বপ্ন এখনো আমাদের কাছে।

যেদিন দেশের প্রতিটি মানুষ ...তিন বেলা আত্মতৃপ্তিতে পেট পুরে খেতে পারবে,শান্তিতে ঘুমুতে পারবে, পরিপূর্ন চিকিৎসা পাবে,লেখা পড়ার সমান অধিকার ও সুযোগ পাবে, স্বাধীন ও নিরেপক্ষ বিচার পাবে,সেদিন বলবো আমাদের মুক্তিযুদ্ধ পরিপুর্ন হয়েছে, সফল হয়েছে। ততোদিন এই সব স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ফালতু আমার কাছে।ফালতু মধ্যবিত্ত সুলভ আবেগ ।

দেশকে গরিব রেখে স্বাধীনতার স্বাদ বিস্বাদ লাগে।
সারা পৃথিবী যখন সামনে এগিয়া যাচ্ছে তখন আমরা শুধু পিছিয়েই যাচ্ছি।
আর কতো ?
২০০৭-০৩-২৬ ০৩:৩১:৪৭