বুধবার, ৯ জুন, ২০১০

এই সব দিনরাত্রি

কোন মন্তব্য নেই :
অনেক কাল আগে পোস্টের শিরোনামের সাথে মিল রেখে একটা ধারাবাহিক নাটক হতো বিটিভিতে। আসলে সেই ধারাবাহিকের নামটা এতো পছন্দ যে অনেক সময় নিত্যনৈমিত্তিক কথাবার্তাতেও 'এই সব দিনরাত্রি' ব্যবহার করি। আজ পোস্টের শিরোনামেও ব্যবহার করলাম।

ঠান্ডা লেগেছে। এসময়ে ভাইরাসের উৎপাত বড্ড বেড়ে যায়। ভাগ্যিস জ্বর তেমন নাই। বাসার সবার একই অবস্থা। ঘুম আসছে না বলে এই সাত সকালে ( সকাল ৩:৪৪ ) তেও প্যাঁচার মতো চোখ বড় বড় করে জেগে আছি। শরীর খারাপের সাথে যুক্ত হয়েছে অনিদ্রা।

আজ The Motorcycle Diaries মুভিটা দেখলাম। সিনেমা বোদ্ধা হবার ক্ষমতা বা যোগ্যতা না থাকায় সেটা নিয়ে রিভিউ লেখার ঔধ্যত্ব দেখাচ্ছি না। একজন বিপ্লবীর জন্ম দেখলাম।  মুভিতে "চে" এর জীবনকে সেভাবে ফুটিয়ে তোলার চেস্টা না করা হলেও দুই বন্ধুর ভ্রমনে বের হওয়া, জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখা - বোঝা, নিজেকে আবিস্কার করার মাধ্যমে নতুন মানুষের জন্মকে দেখলাম।
 

হেলেন থমাসের নাম জানতাম না। আজকে দেখলাম ইজরায়েলকে নিয়ে মন্তব্য করার কারনে তাকে অবসর নিতে ( বাধ্য  করা হয়েছে পড়ুন ) হয়েছে। পশ্চিমের স্ববিরোধী আচরন দেখে আজকাল আর অবাক হই না।
When u attack Black people, they call it racism.
When u attack Jewish people, they call it antisemitism.
When u attack women, they call it sexism.
When u attack homosexuality, they call it intolerance.
When u attack a religious sect, they call it hate.
But when u ...attack ...the Prophet ...(SAWS)....... They call it freedom of speech!
what a joke.[courtesy: A.N.M. Mominul Islam Mukut's Facebook status]

অ্যামনেস্টির জানিয়েছে " ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় গুচ্ছ বোমা ব্যবহূত হয়েছে" ।  যদি এমনটি হতো "আমেরিকায় ইয়েমিনি হামলায় গুচ্ছ বোমা ব্যবহৃত হয়েছে " তাহলে কি ঘটতো সেটা একবার চিন্তা করলে কেমন লাগে বলুনতো ?

অনেক শীত পড়েছে ক্যানবেরায়। হিটারেও মাঝে সাজে কাজ হয় না মনে হয়। বাসার চারপাশে ঝড়াপাতা উড়ে বেড়ায়। গাছগুলো সব নেড়া। দেশে থাকতে শীতের পিঠা খাবার ধুম পরে যেতো। এদেশে সেটা স্বপনে বা কল্পনায় সারতে হয়। শালার বিদেশ।

মঙ্গলবার, ৮ জুন, ২০১০

ব্লাডি ফেয়ার ডিংকুম ৩

কোন মন্তব্য নেই :
সিংগাপুর এয়ারলাইন্সের টিকিট কতো পড়েছিলো সেটা মনে নেই। খুব সম্ভবত ১১০০/১২০০ ডলার পড়েছিলো। আমার এক কাজিনের ট্রাভেল এজেন্সি থেকে কেনাতে এই লাভটুকুই হয়েছিলো যে সাধারনত যতটুকু ওজনের লাগেজ নেয়া যায় তার চাইতে ১৫ কেজি নিতে পেরেছিলাম। টিকিট কেনার পর যখন টাকা দেই ওদের তখন ভয়ে ছিলাম এই বুঝি কোনো জাল টাকা ধরা পরে। তখন জাল টাকা এতো ধরা পড়তো যে পারলে পানের দোকানদারও জাল টাকা ধরবার যন্ত্র বসায় টঙে। তখন ১ ডলারে ৪০-৪২ টাকা পাওয়া যেতো এখন যা ৬০-৬৪ এ ওঠা নামা করে।

নিজে নিজে ভিসা প্রসেস করা যায় তবে অনেক সময় ঝামেলা এড়াতে ও সময় বাঁচাতে অনেকেই ভিসা এজেন্টের সাহায্য নেন, যেমনটি আমি নিয়েছিলাম, কারন ওদের কাছ সবকিছু ছেড়ে দিয়ে টেনশন ফ্রি থাকা যায়। অবশ্য অনেকেই পত্রিকায় রঙবেরঙ এর এড দেয়া ও ১০০% "গ্যারান্টি" দেয়া এজেন্সির কাছ যান এবং টাকা- সময় দুটোই খোয়ান। বুঝতে পারি না এই উন্মুক্ত তথ্য যুগে এসেও কেনো অনেকে প্রতারিত হোন। অথচ নেটে বা অন্য ভাবে একটু সময় ব্যয় করে সেই সব এজেন্সি গুলো সম্পর্কে খোঁজ নিলে বা সরাসুরি বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজের সাথে যোগাযোগ করলেই প্রতারিত হবার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমে যায়। দরকার শুধু সচেতনতা ও স্বাভাবিক যুক্তি প্রয়োগ। অথচ এসব ক্ষেত্রে যারা প্রতারিত হোন তাদের বেশীরভাগই লেখাপড়া জানা মানুষ। কিছু দিন আগে টিভিতে এরকম একটা রিপোর্ট দেখছিলাম যেখানে ১০/১২ লাখ টাকা খোয়ানো এক পিতার কাঁদছিলেন  যিনি বিশ্বাস করে এক এজেন্টকে টাকা দিয়েছিলেন  নিউজিল্যান্ড এ তার ছেলের ভর্তির ব্যপারে। ভদ্রলোকের কান্নায় মন খারাপ হলেও অবাক হচ্ছিলাম কি যুক্তিতে উনি সে টাকা দিয়েছিলেন !!  অথচ ভালো এজেন্সি দেশে বেশ কটি আছে।



শনিবার, ৫ জুন, ২০১০

মধ্য রাতের ফোনের অপেক্ষায়

1 টি মন্তব্য :
বিদেশে আসার পর মাঝ রাতে ঘুমের মাঝে দুটো ফোনকল ভুলতে চাইলেও ভুলতে পারি না। দুটোই মৃত্যু সংবাদ। খুবই কাছের দুজন মানুষ। ফোন দুটো পেয়ে তব্দা লেগে গিয়েছিলো কিছুক্ষনের জন্য। ইচ্ছে হচ্ছিলো ..............
এখন মধ্যরাতে ফোন পেলেই  আতংকে থাকি। এই বুঝি কোনো মৃত্যসংবাদ এলো।


নিমতলী - কায়েৎটুলির মাঝ দিয়ে অনেকবারই  হাঁটা হয়েছে। সেদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম আলোর সাইট খুলতেই দেখি আগুনের সংবাদ। একে একে মারা যাচ্ছে মানুষ। ১১৭ জন আগুনে পোড়া মানুষ। সংখা বাড়ছে নিশ্চিৎ ভাবে। কবর খোড়া হচ্ছে আজিমপুরে। পত্রিকার পাতায় ছাপা হিউম্যান স্টোরি পড়ে মন এতো খারাপ হয়ে যাচ্ছে যে .......... বেগুনবাড়ীর দালান ধসে ২৫ জনের মৃত্যুর পর এবার ১১৭ জন। এ যেনো মৃত্যুর কাফেলা। 


বৃহস্পতিবার, ৩ জুন, ২০১০

ব্লাডি ফেয়ার ডিংকুম ২

1 টি মন্তব্য :
স্মৃতি বড্ড প্রতারনা করছে। অনেক কিছুই ঝাপসা হয়ে আসছে। ভেবেছিলাম খুঁটিনাটি লেখবো, অথচ এখন দেখা যাচ্ছে অনেক কিছুই মনে আসছে না।

চলে আসার আগে নানা রকম প্রস্তুতি। একরকম তাড়াহুড়ো করেই চলে আসা হয়েছিলো। ক্লাস শুরু হবার তাড়া থাকাতে ইচ্ছে থাকা সত্বেও অনেক কিছুই করা হয়নি।

দেশে থাকতে যেখানেই কোনো আবেদন করতে হতো বা যেকোনো কাজেই ছবি লাগতো কথায় কথায়। ভেবেছিলাম এদেশে এসেও হয়তো অনেক ছবি লাগবে তাই একগাদা পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রিন্ট  করে এনেছিলাম, সবগুলো ছবিই যে খামে এনেছিলাম সেই খামেই রয়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝে সেই একযুগ আগের গালফুলো ছবিগুলো দেখলে বেশ মজা লাগে। বয়স যে বেড়েছে সেটা ভালোভাবেই বোঝা যায়। মাথায় চুল কমেছে, অভিগ্যতা বেড়েছে।

দেশের বাহিরে যাওয়া প্রথমবারের মতো না হলেও যেহেতু অনেক দিনের জন্য আসা হবে সেহেতু অনেক কিছু কেনা কাটাও করেছিলাম যার অনেক কিছুই কাজে লাগেনি আদৌ। যেমন, বন্ধুরা বলেছিলো রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ করতে হলে নাকি সাদা শার্ট আর কালো ‌প্যান্ট লাগবে। ৩ সেট বানিয়েছিলাম। রেস্টুরেন্টে কাজও করা হয়নি সেগুলো পড়াও হয়নি। শেষমেশ সেগুলো স্যালভেশন আর্মিকে দেয়া হয়েছিলো।

এমন ভাবে কেনা কাটা করেছিলাম যাতে প্রথম বছরের তেমন কিছু কিনতে না হয়। অস্ট্রেলিয়া এসে আবিস্কার করলাম এতো কিছু কেনার কোনো দরকারই ছিলো না। অহেতুক কিছু টাকা জলে গিয়েছিলো। ছবি বা সাদা শার্টের কথাতো আগেই বলেছি। তবে যারা বিদেশে অনেক দিনের মতো আসছেন আমার মতো তাদের জন্য একটা টিপস আমার, " অন্তত এমন সব জিনিস কিনে আনুন দেশ থেকে যা বিদেশে এসে প্রথম বছরের ধাক্কা সামলাতে সাহায্য করবে"।

দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানো বিশাল এক হ্যাপা। ভর্তি কনফার্ম করবার জন্য ১ সেমিস্টারের টাকা পাঠাতে হয়। সেজন্য দেশের ব্যাংকে স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে হয়। পরিচিত লোক থাকায় ঝামেলা খুব একটা হয়নি। কিন্তু এ কাজটির জন্য ২ টা দিন লাগিয়ে এখানে ওখানে দৌড়াদৌড়ি করে কাগজ যোগার করা, এই কাগজের ফটোকপি লাগবে বলার সাথে সাথে তা নিয়ে আসা জাতীয় কাজ করে এক সময় মনে হয়েছিলো পরিচিত লোক না থাকলে কি যে হতো।
একসময় টিউশন ফির টাকা টিটি করে আর স্টুডেন্ট ফাইল খুলে মনে হয়েছিলো বিশাল এক যুদ্ধ জয় করেছি। জনতা ব্যাংকের কাছে কৃতগ্যতা এজন্য। অনেকেই যখন বিদেশী ব্যাংকে ফাইল খুলতে গিয়ে ৫/৬ হাজার টাকা ব্যায় করেছিলো সেখানে আমি মাত্র ৮/৯ শ টাকাতেই কাজ সারতে পেরেছিলাম কোনোরকম "চা-পানির" খরচ ছাড়াই।

হাইকমিশন থেকে পাসপোর্টে ভিসা স্ট্যাম্প লাগানোর পর শুরু হলো বিমানের টিকিট কেনার পালা। সবাই বলেছিলো সিংগাপুর এয়ারলাইন্স নাকি অস্ট্রেলিয়া আসার জন্য ভালো। ভাড়া কম - সার্ভিস ভালো - ট্রানজিট কম। এবার টিকিট কেনবার পালা।