শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০০৮

আজিজ সাহেবের ডুব সাঁতার

কোন মন্তব্য নেই :
"স্যার, এক্কেরে তাজা ঈলিশ, খাঁটি পদ্মার ঈলিশ, লইয়া যান"
"কি মিয়া, দুইনাম্বারি কথা বলো, এ সময়ে পদ্মার ঈলিশ আসবে কোথা থেকে ?"
"স্যার আপনের লগে দুইনাম্বারি করুম ক্যামনে?, স্যার দুইটা ঈলিশ মাত্র ৮০০ টাকা, দ্যখেন কি রকম তেল তেলে ঈলিশ, দ্যাখেন স্যার এখনো ডিম আসে নাই" বলেই ঈলিশ দুটো উঁচিয়ে ধরলো মাছওয়ালা।
" ৫০০ টাকায় দিবা ?"
" কি কন স্যার, ওইটা তো কেনা দামও না ! "
" ৭০০ টাকায় দিলে দাও নাইলে নাই"
"স্যার ৫০ টা টাকা বাড়ায় দ্যান"
৭৫০ টাকায় কেনা দুটা ঈলিশ ব্যাগে পুড়ে খাসির মাংস কেনার জন্য হাঁটা দিলো আজিজ সাহেব।
"হালায় দুই নাম্বার" বলে খিস্তি ঝাড়ে মাছওয়ালা।
"হালায় মনে হয় চিনবার পারে নাই !" ভাবছে মাছওয়ালা। সেইদিন রাইতে সোয়ারীঘাট থন মাছ আনবার টাইমে এই হালায় ভ্যান থামায়া ১৩০০ টাকা রাইখা দিছিলো।
"দিছি হালারে পঁচা মাছ ধরায়া, কিসের পদ্মার ঈলিশ ! ওইটাতো বার্মার ঈলিশ।" বলে নিজের মনেই হাসলো মাছওয়ালা আজিজ মিয়া।
"মানুষ এতো টাকা পায় কোথা থেইকা ? "

২ কেজি বোরো চাল কিনতে হবে, ময়নার খিচুরী খাওনের শখ হইছে। টুকরি গুছিয়ে চালের দোকানের দিকে হাঁটা দেয় মাছওয়ালা আজিজ মিয়া।
আজিজ সাহেব, সুত্রাপুর থানার ছোট দারোগা ব্যাস্ত খাসির মাংস কেনায়। বাসায় আজ কাচ্চি রান্না হবে।

রাহেলা বোনটি আমার, আমরা কি কিছুই করতে পারি না তোমার জন্য ?

কোন মন্তব্য নেই :
২০০৪ কোনো এক পত্রিকায় শত খবরের মাঝে সেটিও ছিল একটি খবর। " ২২ বছর বয়সী গার্মেন্টস কর্মী রাহেলা আখতার লিমার গহনা ছিনতাই, কতিপয় সন্ত্রাসী কতৃক গণধর্ষন , সর্বশেষ হত্যার উদ্দেশে ছুরিকাহত করে সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে ফেলে দেয়া। পরবর্তীতে ফিরে সেই মেয়েটির মৃত্যূ নিশ্চিত করতে শরীর এসিডে পুড়িয়ে দেয়া, পুলিশ দ্বারা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা। পরবর্তিতে জেনেছি যে হাসপাতালে অবস্থান কালে রাহেলা আখতার লিমা । ‌ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তাঁর মৃত্যুকালীন জবানবন্দী দেন, সেখানে তিনি ঘাতক লিটনের নাম প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি তাঁর মার কাছে লিটনের সহযোগী দেলোয়ার, আকাশ, কবীরের নাম বলেন।" সব কিছুই আবেগহীন ভাবে পড়েছি, ভুলেও গিয়েছি। এসব যে ভুলে যেতে হয় !

একদিন সামহোয়্যারইনের ব্লগের পাতায় মানবীর লেখা পড়লাম, উনি কিছু করতে চাচ্ছেন। আমরা অনেকেই সাড়া দিলাম। ব্লগের পাতা গরম করে ফেল্লাম, ইয়াহু-গুগুল গ্রুপ করলাম, মহা পরিকল্পনা করলাম, যথানিয়মে চুপষেও গেলাম সময় মতো। হুজুগে বাঙালীর যা হয় আর কি।

কিন্তু মানবী চুপ করে থাকলেন না। ফয়সাল আরেফীনও ভুলতে পারেননি রাহেলার কথা। নিরব যোদ্ধার মতো উনারা কাজ করে গেলেন ‌উনাদের মতো করেই। দেশ হতে হাজার মাইল দূরে থেকে আমিও হতাশ হয়ে পড়লাম। ভেবেছি কি আর করা যাবে। কিন্তু একবারো ভেবে দেখিনি মানবীও হাজার মাইল দূর থেকে চেস্টা করে যাচ্ছেন, ফয়সাল নিরবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রথম আলোর ড. জাফর ইকবাল স্যারের লেখা বের হলো, আনিসুল হক ভাইয়ের সাহায্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মানব বন্ধন হতে যাচ্ছে, ভাস্কর চৌধুরীও শ্রীমংগলে মানব বন্ধন করছেন, ফয়সাল আরেফিন প্রানপনে চেস্টা চালাচ্ছেন হাড়িয়ে যাওয়া আলামত ও নথি উদ্ধারের জন্য।

আমি না হয় হতাশ হয়ে পড়েছি , কিন্তু তাই বলে কি আপনারাও হবেন ?

• আসুন আমরা গনসচেতনতা স্মৃস্টি করি।
• রাহেলা বোনটির জন্য আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বন্ধনে অংশগ্রহন করি।
• লিফলেট ছড়িয়ে দেই সবার মাঝে।
• সবাইকে বলি পিটিশনে সই করার জন্য।
• আমাদের আত্নীয়-বন্ধুদের মাঝে যদি কেউ প্রশাসনে থাকে তাদের দ্বারা চাপ ও সচেতনতা স্মৃস্টি করি সরকারের কাছে।
• মিডিয়াতে যারা আছি তারা মিডিয়াতে প্রচারে এগিয়ে আসি।
• আমাদের ব্লগারদের মিডিয়াতে বন্ধু থাকলে তাদেরও আহ্বাবান জানাই সাহায্যে এগিয়ে আসতে বলি।

এক কথায়, যার যে রকম সাধ্য আছে তা নিয়েই এগিয়ে আসি।

হাঁ, এখন আমি আর হতাশ নই। আমি জানি এখন আমার পাশে অনেকেই আছেন। আসুন না আরেক বার চেস্টা করে দেখি ! জীবনতো একটাই। এ চেস্টা বাংলা মায়ের সব নির্যাতিতা বোনের জন্য চেস্টা।

একবার ভাবুনতো রাহেলা যদি আপনার মায়ের পেটের বোন হতো, তা হলে কি আপনি বা আমরা চুপ থাকতে পারতাম ?
http://www.youtube.com/watch?v=GoXNL-xijeg

ঘর পোড়া গরু সিদুঁর দেখলেই ভয় পায়

কোন মন্তব্য নেই :
সেক্টর কমান্ডার ফোরামের কনভেনশনের খবরটি পড়ে প্রায় এক যুগ আগের গণআদালতের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। শহীদ জননি জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সেই স্বপ্নময় গণজাগরণ থেকে গণআদালত এবং সেই আন্দোলনের সফলতা কিভাবে রাজনীতির নোংরা স্বার্থের কাছে বলি হলো সেটা ভাবছি। শহীদ জননীর মৃত্যুর পর বেগম মুশতারি শফির রাজনীতি নেতাদের ঘরে ঘরে ঘুরে আন্দোলনের সমর্থন চাওয়ার ভিক্ষে চাবার ঘটনাগুলো যখন তাঁর লেখনিতেই পড়েছি তখনও রাজনীতির কথাই ভেবেছি।

ব্যক্তিগতভাবে স্বাধীনতার পর দালাল আইনের মতো হালকা আইনের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া বা বংগবন্ধুর সাধারন ক্ষমা ঘোষনা বা দেশীয় যুদ্ধাপোরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার শিথিলতা ও উদাসীনতাকে মেনে নিতে কখনই পারি না বলেই হয়তো মাঝে মাঝে মনে হয় সেই বিশাল ভুলের মাশুল আমরা এখন গুনছি। একাত্তরের ঘাতকরা যখন বড় গলা করে তাদের পাপের কথা বলে তখন মনে হতেই পারে এটা সেই ভুলের মাশুল।

বর্তমানে সেক্টর কমান্ডার ফোরাম যখন যুদ্ধাপোরাধীদের বিচার দাবি করে ১৬ দফা ঘোষনা করেন বর্তমান অরাজনৈতিক তথাকথিত তত্বাবধায়ক সরকারের কাছে তখন সেই দাবির ভবিষ‌্যত নিয়ে ভাবছি। যেখানে এ সরকার যুদ্ধাপোরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার মতো জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী জিনিসটি নেবার আগ্রহই প্রকাশ করেনি সেখানে এ দাবির সফলতা আশংকিতই করে আমাকে।

রাজনৈতিক সরকার ( আদৌ যদি আসে ) ক্ষমতায় আসলে এ দাবী কি সফলতা পাবে সেটা নিয়েই বেশী আশংকিত। আমাদের রাজনীতি যে বড়ই স্বার্থপ্রবণ। এ রাজনীতির জন্যই পিতার নেপথ্য খুনির সাথে আন্দোলন বা স্বামির খুনির সাথে হাসিমুখে চা খাবার ঘটনা ঘটে। দেশের চাইতে যেখানে দল বড়, দলের চাইতে যেখানে নিজ স্বার্থ বড় সেখানে কোনোই আশাই আমাকে আশান্বিত করে না।

যুদ্ধাপোরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া মতো বিশাল কাজ রাস্ট্রীয় পর্যায় থেকেই করতে হবে এবং এর জন্য সরকারের পরিপুর্ন সহায়তা ও সমর্থন থাকতে হয়। সেক্টর কমান্ডার ফোরাম হয়তো প্রাথমিক গনজাগরন তৈড়ি করতে পারবে তবে আসল কাজটি করতে হবে সরকারকেই। এ জন্য দরকার সরকারের স্বদিচ্ছা, এবং এ স্বদিচ্ছা নিয়েই সংশয় আমার।

এ প্রজন্মে যুদ্ধাপোরাধীদের বিচার না করতে পারলে হয়তো আর কখনই করা হবে না। মৃত্য পরবর্তী বিচার নামক প্রহসন আমি দেখতে চাই না।

কথায় আছে "ঘর পোড়া গরু সিদুঁর দেখলেই ভয় পায়"। আমিও ভয় পাই।

বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০০৮

হ্যাংম্যানস নট

1 টি মন্তব্য :
"মামনি, কি করছো ?"
"কিচ্ছু না বাবাসোনা, তোমার ছোট মামার জন্য গিফট প্যাক করছি"
"আমিও একটু করি ?"
"না বাবাসোনা, তুমি পারবে না"
"আমি পারবো"
"উহ, দুস্টুমি করো না, হোম ওয়ার্ক শেষ করো"
"আমি পারবো, তুমি দেখিয়ে দিলেই পারবো"
"আচ্ছা, বাবা সোনা, আমি র‌্যাপ করে দিচ্ছি, তুমি ফিতে বাঁধো"
"ওকে,মামনি"
"উঁহ, এভাবে নয়, এভাবে করো, এভাবে বাঁধো।এটাকে বলে হ্যাংম্যানস নট"
"হ্যাংমানস নট কি মামনি?"
"হ্যাংম্যানস নট হলো, ফাঁসি নেবার সময় যে নটে মানুষের ঘাড় ভেঙে যায় ও মানুষ একেবারে মারা যায়"
"মানুষ কেনো কারা যায় মামনি"
"এমনি বাবাসোনা, আল্লাহ নিয়ে যায় আকাশে"
"এই বাক্স গুলো র‌্যাপ করেছি, হ্যাংম্যানস নট বাঁধো এগুলোতে"

যেদিন ছেলেটি ফাঁসিতে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলো বারবার ভাবছিলো মামনির কথা।
আচ্ছা এভাবে করলে কি দোজখে যাবে ?
ভাবছিলো কি সুন্দর করে হ্যাংম্যানস নট বাঁধা যায়, ঠিক যে ভাবে মা বাক্সগুলোতে হ্যাংম্যানস নট করছিলেন।‌

যে গল্প হয়নি বলা..................

কোন মন্তব্য নেই :
কোকিলের ডাক শুনে হঠাৎ ঘুমে ভেঙে গেলো সাদিক সাহেবের। দেয়াল ঘড়িতে তাকিয়ে দেখেন ৯ বাজছে। উইসকনসিনের এই কনকনে ঠান্ডায় কোকিল আসবে কোথা থেকে ! কি যে হয়েছে আজকাল বুঝতে পারছেন না। সেদিন শুনলেন ঘঘুর ডাক, আজ কোকিল। মাথার মধ্যে কোকিলটা আজকাল বড্ড বিরক্ত করছে।

নিচে লাউন্জে ছেলে-মেয়েদের কথা শোনা যাচ্ছে। ওরা মনে হয় টিভি দেখায় ব্যস্ত। ফেরদৌসী মনে হয় রাতের খাবার তৈড়িতে ব্যস্ত। আজ কি রান্না হয়েছে ভাবছেন সাদিক সাহেব, ভাত নাকি ছেলে-মেয়েদের প্রিয় পাস্তা ?

হাত বাড়িয়ে পানি খেতে গিয়ে দেখেন গ্লাসে পানি নেই। ধ্যাত।
একটা সিগারেট ধরিয়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ভাবছেন সাদিক সাহেব, সময় কতো দ্রুত চলে যায়। এইতো সেদিন, মনে হয় এইতো সেদিন। আজকাল বেশ নস্টালজিক হয়ে পড়েন অতীতের কথা মনে পড়লে। গংগাচড়ার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান আজ আজ উইসকনসিনের মোহাম্মদ সাদিক, ৫৮ বছর বয়স্ক একজন সুখি- সংসারী মানুষ।

তৃতীয় বিশ্বের যেকোন এক দেশকে নিয়ে একটা একটা এসাইন্টমেন্ট করতে দিয়েছে, ছেলে ঠিক করেছে বাংলাদেশকে নিয়ে লিখবে যদিও বাংলাদেশে সে গিয়েছে মাত্র দুবার, ‌তাও সেই খুব ছোট্ট বেলায়। ইউএস তার দেশ, বাংলাদেশ তার বেড়ানোর জায়গা।

ছেলে এসেছিলো বাংলাদেশের ইতিহাস জানতে, তার বাবার মুখ থেকে শুনতে।সাদিক সাহেব ফীরে গিয়েছিলেন সেই ৭১ এ। আগুনঝড়া সেই ৯ মাস। ইতিহাস শুরু করেছিলেন ৪৭ এর দেশ বিভাগ, ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন, ৭ই মার্চের বংবন্ধুর সেই ভাষন, ২৫ মার্চের কালোরাত, ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় উৎসব। বলতে বলতে সাদিক সাহেব বার বার ফীরে যাচ্ছিলেন সেই সময়টুকুতে। ১৫ অগাস্টের বংগবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার কথা বলার সময় বারবারে কেঁপে উঠছিলেন। ছেলে বলছিলো " ড্যাড কি ভাবে পুরো পরিবারকে নিঃশেষ করে দিতে পেরেছিলো ! বাংলাদেশের মানুষ কি কিছুই বলেনি, কিছুই করেনি ? "

২৫ মার্চের সেই কালো রাতে সাদিক সাহেব ছিলেন মুহসিন হলে। পাকিস্তানী সৈন্যদের আক্রমন শুরু হবার পরে অনেক কস্টে কিভাবে বেঁচে গিয়েছিলেন ছিলেন সেটা ভেবে শিউরে উঠেন এখনো। হলে থাকতে লেখা লেখির সাথে যুক্ত থাকলেও আজকাল আর হয়ে ‌উঠে না। মাঝে সাজে লেখেন, বেশ কবছর আগে দেশে তার ২/৩ টা বইও বের হয়েছিলো। তারপরো ভাবছেন আবারো লেখা শুরু করবেন। অন্তত নিজের ছেলে-মেয়েদের জন্য লিখবেন। এদের প্রকৃত ইতিহাস জানিয়ে যেতে হবে।

সেদিন বাংলাদেশ কমিউনিটির অনুস্ঠান ছিলো, বিশিস্ঠ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সাদিক সাহেবও আমন্ত্রিত ছিলেন। সবাই শুনতে চাচ্ছিলেন কথা, মুক্তির ইতিহাসের কথা। যুদ্ধের অনেক গল্প বলেছিলেন সে রাতে।

সিগারেটে শেষ টান মেরে বাট টা ছুড়ে দিয়ে সাদিক সাহেব ভাবছেন অন্য কথা। ভাবছেন, বিশিস্ঠ মুক্তিযোদ্ধা সাদিক সাহেব ৯ টি মাস কিভাবে নিরাপদে দেশে থেকেও মুক্তিযোদ্ধা হলেন অথচ ওপারেই কোচবিহার, ১ ঘন্টার হাঁটার দূরত্ব।এ গল্পটা বলতে পারেননি, ৭৫ এর ১৫ অগাস্টের পর বংগবন্ধুর হত্যার পর পোস্টার লেখার পরিবর্তে কিভাবে ব্যস্ত ছিলেন পাসপোর্টের ফরম ফিলাপের, আমেরিকা যে ডাকছে।

যুদ্ধে গিয়ে ফেরত না আসা কলিমের মা কি আজো কাঁদে?
এ গল্পটা বলা হয়ে ‌উঠেনি
মাথার মধ্যে কোকিলটা আজকাল বড্ড বিরক্ত করে।

সোমবার, ১০ মার্চ, ২০০৮

Valentine Friend

কোন মন্তব্য নেই :
Valentines Day is all about
Special feelings warm and fond,
And friend, I knew right from the start
We had a very special bond.

Our time together is a gift;
You are interesting and warm and fun!
And when I need to talk and share,
I think of you, friend; you are the one.

We are always true and real together.
We have no reason to pretend.
I am thankful that you are in my life,
My trusted, cherished Valentine friend.
----------- সাইয়াক রাফা

সোমবার, ৩ মার্চ, ২০০৮

মুক্তিযোদ্ধা ও আমার হতাশা

1 টি মন্তব্য :
"প্রতিরোধের মার্চঃ আমি মুক্তিযোদ্ধা বলছি" প্রথম আলোর এই সিরিজটা প্রথম থেকেই মন দিয়ে পড়ছি এবং মন খারাপ হতে খারাপতর হচ্ছে। শুহুরে কলমসৈনিকের গোছানো বক্তিমা বা সুশিল শ্রেনী হতে উঠে আসে কোন মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিচারন পড়ে এতদিন যে সত্যকে সত্য জানতাম সেটাই অনেকটুকুই ফিকে হয়ে আসে এসব স্মৃতিচারন পড়লে। গ্রাম- গন্জের প্রান্তিক মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারন মফস্বল সাংবাদিকদের লেখনিতে উঠে আসছে।

এক বছর আগের কথা। অকাল প্রয়াত "সিলেট প্রতিদিন" পত্রিকায় প্রকাশিত ব্লগার নজমুল আলবাবের কিছু প্রতিবেদন পড়েছিলাম। নজমুল বলতেন " মামু, লিংকটা দিলাম একটু পইড়েন ।" পড়তাম এবং কস্ট পেতাম। নজমুলকে বলতাম না, নজমুলের লেখনীতে যে কস্ট প্রকাশিত হতো সেটা বলে তার কস্ট বাড়াতে চাইতাম না। তার লেখায় যে লজ্জাকর সত্য প্রকাশ পেতো এখনকার প্রতিবেদেন গুলো পড়ে সেই একই সত্য প্রকাশে বিবেকের দংশনে ভুগি।

৭১ যে সাহসী কিশোর বা তরুন অস্ত্র হাতে জানের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলো সেই কিশোর বা তরুন বার্ধক্যে এসে এখনও যুদ্ধে লিপ্ত। যুদ্ধটা পাকিস্তানী সেনাদের বিরুদ্ধে না হয়ে সেটা এখন জীবন সংগ্রামের। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ৬০০ টাকা ভাতার জন্য তাদের বারান্দায় লাইনে দাঁড়াতে হয় , এই ৬০০ টাকায় কি একটা মানুষের জীবন চলে? এমনতো নয় যে তাদের অনেক অর্থসম্পদ, ৬০০ টাকা কিছুই নয়। এই ৬০০ টাকাই বেশীরভাগ মুক্তিযোদ্ধার একমাত্র সম্বল। অবশ্য অসংখ্য এবং বেশিরভাগ মুক্তিযোদ্ধার ভাগ্যে সেটাও জোটে না।

বছরের বেশীর ভাগ সময়ই পত্রিকার ভেতের পাতাগুলোতে এরকম অনেক সংবাদ প্রকাশিত হয়। যখন একজন ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা তার সন্তানকে ধর্ষনের হাত হতে বাঁচাতে ব্যার্থ হয়ে চিৎকার করে কাঁদেন তখন হয়তো আমরা একটু দূঃখিত হই, পরমুহুর্তেই সেটা ভুলে যাই দেশের রাজনীতি নিয়ে প্রকাশিত পর্ন সংবাদগুলোতে মুগ্ধ হয়ে। একজন মুক্তিযোদ্ধা রিকশাচালক বা ভিক্ষের ঝুলিহাতে সংবাদগুলো আবেগময়ী হলেও সেই মুক্তিযোদ্ধাদের কথা ভাবার সময় সবার নেই। এগুলো শুধুই দারুন নিউজ আইটেম।

মার্চ এসেছে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা প্রকাশিত হচ্ছে ও হবে। ৭ই মার্চ আসছে, তখন মুক্তিযুদ্ধের জায়গা নেবে বংগবন্ধুর ভাষণ, ২৬ শে মার্চ আসলেই শুরু হবে স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক। পত্রিকাগুলো বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করবে। মুক্তিযুদ্ধের ব্যক্তিগত ও বাস্তব অভিগ্যতা বন্চিত বিখ্যাত সব লেখকরা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গল্প-উপন্যাস লিখবেন, কেউবা কবিতা। আমরা মন দিয়ে সেগুলো পড়বো।

কিন্তু সেই সব সাহসী মানুষদের কথা ভাবার সময় হয় বছরে দুটো মাস, বিজয়ের ডিসেম্বর ও প্রতিরোধের মার্চ।
----------
লেখাটি আমার প্রিয় বিষন্ন মানব "নজমুল আলবাবকে" উৎসর্গ করে।