বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০১০

তিন নিখোঁজ আতরাফ ও আশরাফের নিখোঁজ সারমেয়

২টি মন্তব্য :
প্রজাতন্ত্রের কোনো সংস্থা যখন কোনো ঘটনার সাথে যুক্ত থাকে তখন সেই ঘটনার দায়ভার সরকারের উপর বর্তায়, তবে তৃতীয় বিশ্বের ( মুলত ) তথাকথিত গনতান্ত্রিক সরকার গুলো বরাবরই এই দায়ভার এড়িয়ে যায়। আবার সরকার যখন নিজেই এইসব ঘটনার সাথে যুক্ত থাকে তখন দায় ভারের প্রশ্ন না তুলে সরকারের নৈতিক ও আইন গত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। দেশে অনেক নিখোঁজ ঘটনার সাথেই সরকার ও তার সংস্থা যুক্ত যা জানা কিন্তু প্রমান করা দূসাধ্য যখন বিচার ব্যবস্থাই দূর্ণীতিগস্থ ও দলীয় ভাবধারার চালিত।

রূপগঞ্জের ঘটনা আবারো প্রমাণ করে দিলো যে রাস্ট্রের ভেতরের কালো শক্তি কত শক্তিশালী। সরকার বা রাস্ট্র এখানে পুতুল মাত্র। সাংবাধিক ভাবে সকল নাগরিক সমান হলেও এটা আদৌ কখনো সেটা দাঁড়াতে পারেনি। এই ব্যবধানটা এতোই নগ্ন যে সেখানে প্রশ্ন তুল্লে জীবন নিয়ে দেশ ছাড়তে হয়।

এ দেশে এখনো দিনে দুপুরে একজন নাগরিককে অন্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থার হুকুমে বিনা পরওয়ানায় অন্য দেশের বিমানে তুলে দেয়া যায়, এ দেশে এখনো বিনা পরওয়ানায় একজন নাগরিককে ক্যাম্পে তুলে নিয়ে পেটানো যায়, এ দেশে এখনো একজন প্রতিবাদী নাগরিককে প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে রাতের আঁধারে গুলি করে মাঠে ফেলে রাখা যায়। বিচার ব্যবস্থা এখানে নিশ্চুপ থাকে। সুশীল সমাজ নামক নপুংশকরা এটা দেখেও কাপুরুষের মতো চুপ থাকে।ঢাকা ক্যান্টের ডিজিএফআই এর এইচ কিউ এর রক্তমাখা দেয়ালগুলো এখনো রক্তে রাঙানো হয় !! এগুলো জানা কিন্তু প্রমান করার দায় ও সাহস এ রাস্ট্রের নাই।

রূপগঞ্জে তিনটা মানুষ নিখোঁজ। আতরাফ গোত্রীয় এই তিন জনের নাম সাইদুল ইসলাম, আবদুল আলীম মাসুদ এবং শমশের মোল্লা ।  দেশে কোনো আশরাফের সারমেয় নন্দন হারিয়ে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেটি উদ্ধারে আদা জল খেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেখানে তিনজন জলজ্যান্ত মানুষের কোনো খোঁজ তারা বের করতে পারছে না, বিষয়টি ভাবতেই তো কেমন লাগে!  পত্রিকায় বলা হয়েছে, এ তিনজন যুবকের লাশ রেবের গাড়িতে তোলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী আছে। মাসুদের বাবা নিজে তাঁর গুলিবিদ্ধ ছেলেকে রেবের গাড়িতে তুলতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। নিখোঁজ ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুঁজে এনে তাদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেবে, এমনটাই একটি সুস্থ স্বাভাবিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রত্যাশা। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে, খুঁজে দেবে কী, বরং মানুষকে নিখোঁজ করার অভিযোগই উঠছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি। ( এ অংশটুকু আরিফ জেবতিকের নোট থেকে নেয়া হয়েছে )।

এই নাকি গনপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ যেকানে "গণ" দেরও কোনো স্থান নেই।

অভিজ্ঞতা বলে - চলমান ১

কোন মন্তব্য নেই :
হ্যান্ড শেক শব্দটার বাংলা অনুবাদ করতে গেলে সেটায় আমরা করমর্দন বলি, যদিও সে সময় হাত 'মর্দন' করার সাথে সাথে ঝাঁকাঝাঁকিও চলে সমান তালে। হ্যান্ড শেক করবার সময় মানুষের আন্তরিকতা বোঝা যায়। আলতো ছোঁয়ার করমর্দনে আর যাও হোক আন্তরিকতা বোঝা যায় না, সেটা হয় নিতান্তই আনুস্টানিকতা বা লোক দেখানো ভদ্রতা। আবার তাই বলে প্রচন্ড জোরে কুস্তিগীরের মতো হাত চেপে এদিক ওদিক ঝাঁকালেও শরীরের সাথে সাথে মনেও চাপ ফেলে। আমি বাপু আর্ম রেসলিংতো করতে যাচ্ছি না।

চোখে চোখে কথা বলার মাঝে আত্নবিশ্বাসের সাথে সাথে ভদ্রতা ও কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ পায়। কোনো এক কালে এক ভদ্রলোকের সাথে আলাপ চারিতার সময় হঠাৎ লক্ষ্য করেছিলাম উনার চোখ আসে পাশে বার বার ঘুর পাক খাচ্ছে। অথচ সেদিনটা ছিলো আমার জন্য বেশ গূরুত্বপূর্ন একটি সময়। উনি মুখে বলছিলেন আমার সাথে কথা বলার জন্য উনি নাকি অধীর আগ্রহে সময় গুনছিলেন কিন্তু তার চোখ বলছিলো অন্য কথা। ২ সন্তানের জনক সেই ভদ্রলোকের চোখ বার বার ঘুড়ছিলো পাশের টেবিলে বসা সল্প বসনা দুই কিশোরীর দিকে !

শেখ সাদির সেই গল্পটার কথা আমরা সবাই অন্তত একবার হলেও শুনেছি। সেই পোষাক নিয়ে গল্পটার কথা মনে আছে না ? অভিজ্ঞতা বলে, শেখ সাদি ঠিকই বলেছিলেন। পড়নের "পোষাক" মানুষের কাছ থেকে সম্মান ও যত্ন আত্তি এনে দেয়। পোষাককে যদি রূপক অর্থে 'আর্থিক অবস্থার' সাথে তুলনা করি তবে দেখা যাবে যার যত আর্থিক অবস্থা ভালো সেই তত সম্মান পাচ্ছে, হয়তো দেখানো তবুওতো পাচ্ছে। গরীব বা তুলনামুলকভাবে দূর্বল মানুষটির দিকে তাকানোর সময় বা আগ্রহই কারো নেই। অথচ সেই মানুষটির অবস্থার পরিবর্তন ঘটলে দৃশ্য বদলে যায়, তেলে মাথায় তেল দেবার জন্য সবার মাঝে অদৃশ্য প্রতিযোগীতা শুরু হয়। এ থেকে খুব কম মানুষই দূরে থাকতে পারে। অভিজ্ঞতা বলে, এই অল্প মানুষকে খুঁজে নিতে হয়, এরাই প্রকৃত মানুষ।

সমালোচনা করতে আমরা প্রচন্ড ভালোবাসী। এই আমার কথাই ধরুন না, সমালোচনা করার মতো ব্যক্তি বা বস্তু পেলেই হলো। মহা উৎসাহে নেমে পড়ি কোনো কিছু আগ পাশ না ভেবেই। অথচ কেউ নিজের সমালোচনা করলেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠি, আত্ম পক্ষ সমর্থন করবার নাম করে সেটার প্রতিবাদ করি। অভিজ্ঞতা বলে, সমালোচনা সহ্য করবার ক্ষমতা অর্জন করা অবশ্যই জরুরী , আর যদি সেটা হয় গঠনমুলক সমালোচনা। যদি কেউ ইচ্ছে করে নিরুৎসাহিত করবার জন্য সমালোচনার খাতিরে সমালোচনা করে সেটা বোঝারও ক্ষমতা থাকতে হবে। নিজেকে পরের দর্পনে দেখবার ক্ষমতা থাকতে হবে। সমালোচনাকারীকে বন্ধু হিসেবে দেখলে অনেক ফায়দা হবে ( তাবলিগী ব্রাদারদের শব্দ ধার করলাম)।