শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১১

ব্লাডি ফেয়ার ডিংকুম ১৭

৫টি মন্তব্য :
বাসা পাওয়া বেশ ঝক্কি ঝামেলার ব্যপার। আমার জন্য সেটা ছিলো জীবন মরন সমস্যা। একে ওকে বলি বাসার কথা, সবাই হাঁ বলে কিন্তু কারো কাছ থেকে সারা শব্দটি পাওয়া যচ্ছিলো না। এমনি এক সময় এক বন্ধু আশির্বাদ হয়ে আসলো। ওর কাছ থেকে শুনলাম দুজন বাংলাদেশী নাকি বাসার জন্য বোর্ডার খুঁজছে। উনাদের সাথে কথা বলে ঠিক করলাম যেই শর্তই হোক না কেনো ঐ বাসায় উঠবো।

সে দিন বাসায় কেউ ছিলো না। সবাই যথারীতি আমাকে না জানিয়েই সিডনী গিয়েছিলো। একলা বাসায় সব কিছু গুছিয়ে ট্যাক্সি ডেকে যখন সেই নতুন বাসার দিকে রওয়ানা দিলাম তখন এক অপার্থিব শান্তি লেগেছিলো। মনে হচ্ছিলো পিঠের উপর থেকে বিশাল এক বোঝা নেমে গেলো। ৪ বেড রুমের নতুন বাসায় লোক বলতে আমি আর আরেক বাংলাদেশী সিনিয়র। নতুন হাউসমেটকে নিয়ে ছোট খাটো গল্প লিখে যাবে, গল্প না বলে রম্য রচনা বল্লেই মনে হয় বেশী মানানসই হবে।


বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১১

সুখের লাগিয়া - কবি জ্ঞানদাসের পদাবলী

কোন মন্তব্য নেই :
সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু  

সুখের লাগিয়া                  এ ঘর বাঁধিনু 
অনলে পুড়িয়া গেল | 
অমিয়া-সাগরে                 সিনান করিতে 
সকলি গরল ভেল || 
সখি কি মোর করমে লেখি | 
শীতল বলিয়া                 ও চাঁদ সেবিনু 
ভানুর কিরণ দেখি || 
উচল বলিয়া             অচলে চড়িতে 
পড়িনু অগাধ জলে | 
লছিমি চাহিতে           দারিদ্র্য বেঢ়ল 
মাণিক্য হারানু হেলে || 
নগর বসালাম           সায়র বাঁধিলাম 
মাণিক পাবার আশে | 
সাগর শুকাল          মাণিক লুকাল 
অভাগার করম-দোষে || 
পিয়াস লাগিয়া       জলদ সেবিনু 
বজর পড়িয়া গেল | 
জ্ঞানদাস কহে       কানুর পিরীতি 
মরণ অধিক শেল || 
কি অসাধারন !

মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০১১

ব্লাডি ফেয়ার ডিংকুম ১৬

1 টি মন্তব্য :

জানি না এটা সবারই হয় কি না, তবে আমার প্রায়শই হয়। প্রথম পরিচয়েই অনেককে আপনা মনে হয়, প্রথম বারের মতো যাওয়া নতুন জায়গাকে আপন মনে হয়। ও'কোনোরের বাসাটাকে কেনো জানি প্রথম বারেই আপন মনে হয়নি। মানুষগুলো কেন যেনো ছাড়া ছাড়া মন মানসিকতার। ঠিক আমি যেমনটি পছন্দ করি সেমনটি নয়, আন্তরিকতার দারুন অভাব পদে পদে। যে বন্ধুর জন্য এ বাসায় উঠেছিলাম সে বন্ধুটিও কেমন যেনো বিশাল বদলে গিয়েছে, আবেগহীন ব্যবসায়ী মনোবৃত্তির। যখন বাসার সবাই বুঝতে পারলো আমার হাতে টাকা পয়সা তেমন একটা নেই ব্যবহারেও পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম সবার মাঝে। শেখ সাদির সেই বিখ্যাত গল্পটির মতো, পোষাকে ব্যবহার বদলে যায়। পোষাককে রূপক অর্থে ব্যবহার করলেও এ গল্পকে নিজের অভিজ্ঞতার মাঝে খুঁজে পাই প্রায়শই।

বাসায় সর্বেসত্তা ছিলো বন্ধুপত্নী। ভারতীয় পান্জাবী এই মেয়েটি প্রথম থেকেই আমাকে পছন্দ করতে পারেনি। হয়তো আমার স্বাধীন চেতা স্বভাবের কারনেই হোক বা আর্থিকভাবে দুধেল হবার সম্ভাবনা নেই বলেই হোক। আমার সেই বন্ধুটিও ছিলো বউ এর একান্ত বাধ্যগত। বউ এর কথায় উঠতো আর বসতো। আশে পাশের সবাই এটা নিয়ে হাসাহাসি করলেও তার বিকার ছিলো না এতে। পড়াশুনা ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী অভিবাসী হতে বউ এর নির্ভর করা ছাড়া তার ‌ উপায়ও ছিলো না। তবে ওদের একেকজনের প্রতি সত্যিকারে ভালোবাসার প্রসংশা করতেই হয় সব সময়। বাসায় অন্য যে ছেলেটি ছিলো সেও বন্ধুভাবাপন্ন ছিলো না একদমই। বন্ধুপত্নীর সারমেয় সুলভ একান্তবাধ্যগত ছেলেটিও কেমন জানি উন্নাসিক আচরন করতো। মুখে বা আচরনে প্রকাশ না করলেও সেটা বুঝতে আমার সমস্যা হতো না।

বাসায় রান্না বান্নায় তেমন একটা সমস্যা ছিলো না। বন্ধুপত্নী নিয়মিতই রান্না করতো। আমরা তাকে সাহায্য করতাম। মাঝে সাজে আনাড়ী ভাবে আমিও রান্না করতাম। মনে হয় খেতে ভালোই হতো সে সময়, সবাই বেশ মজা করেই খেতো। বড় সরো বাজারগুলো একবারে করা হতো। সপ্তাহের বাজার করার পর রিসিট গুলো এক সাথে রেখে দেয়া হতো। মাসের শেষে হিসেব করে যার যার ভাগ দিয়ে দিতো। যেদিন প্রথমবারের মতো সেই বাসার রান্না ঘরে ঢুকি তখন সেই বাংলাদেশী ছেলেটি নন স্টিক ফ্রায়িং প্যান কি জিনিস আর সেটা কিভাবে ধুতে হয় সেটা শিখিয়ে দিচ্ছিলো যেনো আমি জীবনেও নন স্টিক ফ্রায়িং  ‌প্যান দেখিনি। আমিও হাসি চেপে বাধ্যগত ছাত্রের মতো সব কিছু শিখে নিচ্ছিলাম।