বুধবার, ২৫ জুলাই, ২০০৭

মানুষের হিপোক্রেসী

মানুষের হিমোক্রেসী খুব কষ্ট দেয় আমাকে, মাঝে মাঝে প্রচন্ড অবাকও করে। ক্ষুদ্র জীবনে অনেক মানুষের সাথেই পরিচিত হবার সৌভাগ্য ও দূর্ভাগ্য দুটোই হয়েছে।

খুব ভালো মানুষ যেমন দেখেছি তেমনি পরিচিত হবার দূর্ভাগ্য হয়েছে ভালো মানুষের মুখোশ পড়া ভন্ড ও কুৎসিত মানুষের সাথে। প্রবাদে আছে "একজন সরব শত্রুও ভালো একজন নিরব বন্ধুর চাইতে",এটাকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিয়ে সব সময়ই বলি " ভালো মানুষের মুখোশ পড়া ভন্ডের চাইতে একজন প্রকাশ্য খারাপ মানুষ হাজারগুনে ভালো "।

অনেককেই নানা রকম নীতির কথা বলতে দেখি, নৈতিকতার কথা বলে মুখে ফেনা তুলতে দেখি। আবার সেই মানুষকেই নিজের স্বার্থে সেই নৈতিকতাকে ভুলে যেতে দেখেছি। প্রচন্ড অবাক হয়েছি।

অনেককে ঘুষ-দূর্নীতির বিরুদ্ধে কলাম লিখতে দেখা গেলেও নিজে দূর্নীতির সাথে ওতোপ্রতোভবে যুক্ত। একজন ঘুষখোরের ছেলের সাথে নিজের মেয়ের বিয়ে দিতে সে কি প্রচন্ড আগ্রহ !! ঘুষের টাকায় বাহাবা নিতে কার্পন্য করেন না। অবাক হয়েছি।

অনেক কবি -সাহিত্যিকে দেখেছি স্বৈরাচার বা অপশাষনের বিরুদ্ধে গল্প-উপন্যাস-কবিতা লিখতে। আবার সেই স্বৈরাচারের কাছ হতেই গুলশানে প্লট বা আর্থিক সুবিধা নিতে কার্পন্য বোধ করেনি করেন না। অবাক হয়েছি জাতির এই সব বিবেক নামক মানুষদের কীর্তি দেখে।

ধর্মের লেবাশ পড়তে দেখেছি অনেককে, দেখেছি ধর্মের কথা বলতে বলতে বলতে আবেগময় হয়ে উঠতে। আবার সেই মানুষকেই দেখেছি ধর্মের নামে অধর্মের কাজ করতে। হজ্ব করে এসে চোরাকারবারী- মাদক পাচার করতে। রোজা রেখে ঘুষ খাওয়া যাবে না বলে ইফতার করে ঘুষ নিতে দেখেছি। দাড়ি-টুপি রেখে ধর্মীয় পরিচয়ে ভালো মানুষের রুপ নিয়ে ভন্ডামি করতে দেখেছি। আবাক হয়েছি।

নারী অধিকারের কথা বলে গিয়ে মাইক্রোফোন ফাটিয়ে ফেলার উপক্রম করেছিলেন যেই বহুল পরিচিত মানুষটি সেই মানুষটির স্ত্রীকে ছুটে যেতে দেখেছি থানায়, সেই মহামানব স্বামীর নির্যাতনের হাত হতে বাঁচার জন্য। অবাক হয়েছিলাম তখন।

ভালোবাসার কথা বলতে বলতে স্বপ্নবাজ বানিয়েছিলো যে মানুষটি সেই মানুষটির ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলো যে মানুষটি, সেই মানুষটির মোহ ভেঙেছিলো যখন বুঝতে পেরেছিলো সবুই ছিল শুধুই অভিনয়। প্রচন্ড অবাক হয়েছিলাম।

এখন আর অবাক হই না। মনে হয় এটাই বাস্তবতা। এটাই মানুষের স্বভাব। মানুষের আর সব স্বভাবের মাঝে হিপোক্রসিও একটি।

৩টি মন্তব্য :

  1. প্রথম লাইন হিমোক্রেসী হয়ে গেছে। তবে এ বিষয়ে একটা পেন্ডুলামের কথা বলি আপনাকে। মানুষ জন্মগতভাবে সবসময় লাইনময় ও লাইনচ্যুতির একটা দ্যোতনায় বাস করে। সরলীকৃত রূপটা সে দেখতে চায় সবজায়গায়, যা বিন্যাসিত থাকবে। কিন্তু উহা সম্ভব হয় না বলে, রং এর একটা বর্ণিলতা দেখা যায় জীবনে, যা কখনও সাদা থেকে কালো আবার কালো থেকে সাদা হয়ে যায়। আমার কাছে এখন হিপোক্রিস শব্দটাকে বেশী কঠিন মনে হয় না, যতনা এটাকে এখন প্রকৃতিপ্রদত্ত মনে হয়।

    আপনার এই ব্লগসাইটির মত আকারে, প্রকৃতি ও রূপে আমারটাও চাই - চাই -ঈ!

    উত্তরমুছুন
  2. আপনার ব্লগসাইটি আমি IE তে ঠিকমত দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু ফক্সে "মাহবুব সুমন ও তার অগাবগা বচন " টাইটেলটা ভেঙেচুড়ে গেছে। এটা কি আমার ব্রাউজারের সার্বজনীন সমস্যা নাকি আমার সেটিং এর সমস্যা?

    উত্তরমুছুন
  3. IE তে সমস্যা হয় না, তবে ফায়ারফক্সে সমস্যা হচ্ছে। সেটা আমি জানি। আমি আসলে IE ব্যবহার করি, সেজনয়ই ফায়ারফক্সের মতো করে ব্লগস্পটটি সাজাইনি। যেকোনো ব্রাউজারেই নিজস্ব কিছু ফিচার থাকে যা অন্য সব ব্রাউজারে থাকে না। ইউনিকোডের বাঙলা ফন্ট ব্রাউজার ভেদে সমস্যা করে,এটা আসলে এখনো ঠিক ভাবে ফিক্স করা যায় নি। এজন্য বিভিন্ন সাইট তাদের সাইটের জন্য কিছু ফন্ট এমবেডেড করে দেয় যাতে সে ফন্ট কোনো পিসিতে থাকলে দেখতে সুন্দর লাগে, কিন্তু পিসিতে না থাকলেও দেখা যায় তব সে সময় সৌন্দর্য কমে যায়।বাঙলায় এ সমস্যা বেশী। ফায়ারফক্স, IE বা অন্যন্য ব্রাউজার নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে হয় বাঙলা দেখার জন্য। আমার ব্লগস্পট ইউনিকোডে থাকলেও সমস্যা হয় বিভিন্ন জায়গাতেই। সেটা ফিক্স করতে চেষ্টা করছি। @ কৌশিকদা

    উত্তরমুছুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।