রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০০৭

ঈদ কাহানী

বিবাহপুর্ব - বিবাহ পরবর্তী জীবনের মাঝে আকাশ পাতাল বুঝতে পারছি।
আগে অর্ধ ভুক্ত থাকতাম , এখন পেট পুড়ে খেতে পারি;
জামা কাপড় ইস্ত্রি কাকে বলে সেটা জেনেও জানতাম না, এখন জামা কাপড় ইস্ত্রি করতে হয়;
পি.সির সামনে বসে টেবিলে পা তুলে মহা আনন্দে সিগারেট টানতে পারতাম, এখন বাহিরে গিয়ে টানতে হয়।
মাঝে মাঝে কস্টের আনন্দে গেয়ে উঠি " আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম........ "

বাসে একাকী অনেকগুলো ঈদ করতে বাধ্য হলেও এবারে দুজনে টানা দুবার ঈদ করলাম।
এবারের ঈদ টাও দারুন হোলো। গতবারের মতো তাড়াহুড়ো করতে হয়নি, পান্জাবি-পাজামা তৈড়িই ছিলো।

সকালে উঠেই নামাজ পড়তে গেলাম, একাই। বউ বেচারীকে সার্জারীতে যেতে হয়েছিলো।
নামাজ শেষে সুন্দরী সুন্দরী লেবানিজ -টার্কিশ মেয়েদের দেয়া ইয়াম্মি সব মিস্টি মিস করবে না কোনো বেকুবই। মিস্টির সাথে মেয়ে ফ্রি। ভাগ্যিস সাথে বউ ছিলো না। আমি আবার খেতে দারুন ভালোবাসি। আলহামদুল্লিলাহ, প্রত্যেকটা মিস্টিই ট্রাই করেছি। তবে কোলাকুলির সুযোগ হয়নি। জীবনে আরেকটা আফসোস রয়েই গেলো।

বিকেলে সাউথ কোস্টে গেলাম এক বন্ধুর সাথে। "বেটমেনস বে" বলে ছোট্ট একটি শহড়। টানা ২ ঘন্টার ড্রাইভ। রাস্তা দারুন হলেও অসংখ্য আঁকা বাঁকা ও বিশাল সব পাহাড় টপকানো, সাথে তুমুল বৃষ্টি , কিছু রাস্তা হাড়ানো।
রাস্তার আশে পাশের দৃশ্যগুলো অসাধারন। বিশাল বিশাল র‌্যান্চ , কোনোটা গরু - কোনোটা বা ভেড়া। মাঝে মাঝে ছোট্ট কিছু শহড়। সিনেমায় দেখা ওয়েষ্টার্ন শহড়গুলোর মতোই।

বৃষ্টির জন্য বেটমেনস বে তে বেশীক্ষন থাকা সম্ভব হয়নি, ফেরার তাড়া ছিলো। ৬০০ কিলোমিটার ড্রাইভ করে বাসায় যখন পৌঁছুলাম তখন রাত ১০ টা, চরম ক্লান্ত।
মাঝে এক কান্ট্রি ষ্টেশনে কফি বিরতি।

ঈদের পরেরদিন এক বন্ধুকে দাওয়াত খাওয়ালাম। পোলাও-মুরগির রোস্ট- রুই মাছ ভাজা এবং ছাগলের মাংস। আমার রান্না করা ছাগলের মাংস নাকি দারুন হয়েছিলো !! জনাব, আমার ঢোল আমি পিটাচ্ছি না, এটা জনগণের দেয়া সার্টিফিকেট। ভাবছি; ব্লগের ছাগলগুলো মাংস কিভাবে রান্না করবো !! ভুনা না রেজালা না কাবাব?

ক্যানবেরায় ওপেন হাউস বলে একটি বিষয় চালু আছে। ওয়েব সাইটে ওপেন হাউস লিস্ট দেয়া হয়। সবাই লিস্ট ধরে বাসায় বাসায় ঘুরে বেরায়, পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে। এমনি এক ওপেন হাউসে আজ এক আংকেলের বাসায় বেড়াতে গেলাম স্বস্ত্রীক। অনেকের সাথেই দেখা হোলো, তবে বাসায় ঢুকেও চোখ চলে গেলো যথারীতি খাবারের টেবিলের দিকে। বিশাল আয়োজন। খাবার টেবিলে গিয়ে হামলে পড়লাম, কতটুকু খেয়েছিলাম মনে নেই। বিকেলে বাসায় আসার আগে আংকেল বললেন আমি নাকি কিছুই খাই নি। অনুরোধের ঢেঁকি গিলে আমি আবার তিন প্লেট খেলাম। গুনেছি, সব মিলে ১২ পদ ছিলো। বাসায় এসে দেখি পেট ফুলে ঢোল।

সামনে আরো কিছু দাওয়াত আছে। ব্লগার অমিত আসছেন ক্যানবেরায়, ক্রিসমাস পার্টি, ৩১ এ সিডনী ভ্রমন, সেখানে কিছু দাওয়াত। অনেক দাওয়াত অনেক খাবার।‌

চিন্তায় আছি অনেক। সম্ভবত ভুঁড়ি বাড়ছে।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।