শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০০৮

হাবিজাবি ২

প্রচন্ড গরম পড়েছে, হাড় কালা হবার উপক্রম। যখন লিখছি তখন তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস, দূপূরে তা ছিলো ৩৩+। আবাসে- নিবাসে এ.সি. থাকাতে গরমের প্রভাব অনেকটুকুই টের পাই না। দূপুরে একটা কাজে বাহির হতে হয়েছিলো। দেখলাম রাস্তায় প্রচন্ড রোদের মাঝেও কিছু লোক কাজ করছে। এসি গাড়িড়ে বসে ভাবছিলাম কি কস্টই না করছে লোকগুলো ! জীবন সংগ্রাম বলে কথা। আরামে বসে- নিরাপদে বসে হয়তো জীবনের অনেক কস্টই টের পাওয়া যায় না কিন্তু জীবনের কোনো এক সময়ে সেই কস্টের সামান্য অভিগ্যতা থাকলে অন্যের কস্ট কিছুটা হলেও অনুভব করা যায়, যা তখন নিজে কিছুটা হলেও করতে পারছিলাম।

নিজের নামটা নিয়ে মাঝে মাঝে দারুন সব মজার সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এক অফিসে কিছু মাস কাজ করার দূর্ভাগ্য হয়েছিলো। কোনো এক দূপুরে নিজের ডেস্কে কাজ করছি, হঠাৎই বসের ডাক। যে সে বস নয়, একেবারে সিইও। "আবদুল" বলে ডাল দেবার পরও আমি সারা দিচ্ছি না, ভাবছিলাম অন্য কাউকে মনে হয় ডাকছে। পরে তাকিয়ে দেখি আমাকেই ডাকছে........"আবদুল"। যতদিন কাজ করেছিলাম ততদিন আমি সেখানে "আবদুল" বলে পরিচিত ছিলাম। যতই বলি আমার নাম "আবদুল্লাহ" ততই তারা বেশী করে "আবদুল" বলে ডাকতো।
এখন যেখানে কাজ করছি সেখানে সবাই চেনে "মাহবুব" হিসেবে। সেটা নিয়েও কম মজা হয় না বিশেষ করে মেয়েদের সামনে। একবার বস আমাকে ডেকে মেয়েদের একটি বিশেষ অংগকে ইংগিত করে , অভিনয় করে দেখিয়ে দেখিয়ে সবার সামনে ডাকছেন। আমিও এক মফিজ , সাড়া দিয়েছিলাম। মজাই লাগে এসব।

অনেকদিন পর মেজো মামা- সেজো মামার সাথে কথা হলো। শুনে প্রচন্ড অবাক হলাম, নানু বাড়ীর সেই অজ পাড়াগাঁয়েও এখন ক্যাবল টিভির কানেকশন !! আবার সেটা নাকি দারুন ব্যবসাও করছে। একসময় নানু বাড়ীতে পারিবারিক পাঠাগার ছিলো। কত্ত বই যে পড়েছি, কত্ত বই যে সেখান থেকে চুরি করেছি সেখান থেকে। শুনলাম কেজানি সেখানে একটা ডিভিডি ক্লাবও করেছে, ১০ টাকা দিয়ে ডিভিডি ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে সেখান থেকে। যে গ্রামে একসময় পারিবারীক পাঠাগার ছিলো বেশ কটা সেই গাঁয়েই সেই পাঠাগার একটিও নেই, আছে ডিভিডি ক্লাব। "ভাবতে ভালোই লাগে, দেশে এগিয়ে যাচ্ছে" গাজী ট্যাংকের বিগ্যাপনে গোলাম মুস্তফা যখন বলতেন তখন বেশ লাগতো। কিন্তু আসলেই কে দেশে এগিয়ে যাচ্ছে? হাতে বইয়ের বদলে রগরগে হিন্দি সিনেমার ডিভিডি !

প্রতিটা বছর শেষ হয় জীবনের হালখাতা খুলে বসি। ২০০৮ যে কি দ্রূত শেষ হয়ে যাচ্ছে টেরই পাচ্ছি না। এবারো হালখাতা খুলেছি। বছরের ডেবিট- ক্রেডিটের হিসেব চুকিয়ে ফাইনাল একাউন্ট মেলাবার আপ্রান চেস্টা। মেলাতেই হবে, যদিও অনেক হিসেবই মেলানো হবে না।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।