দূপুরে বাজার সদাই করবার জন্য পেনরিথের কোলসে গেলাম। সুপার মার্কেট এতো বিশাল হবে সেটা কল্পনাতেই ছিলো না। যে দিকে চোখ যায় শুধু হড়েক রকম প্রোডাক্ট, হাত ছানি দিয়ে ডাকছে আয় আয় আমায় কিনে নে ! ঢাকায় সে সময় মাত্র সুপার মার্কেট গড়ে উঠছে। কোনো বহুতল বিল্ডিং এর দু একটা ফ্লোর বা মার্কেটের বড় সরো ফ্লোর নিয়ে গড়ে উঠা সুপার মার্কেট। মহল্লার মুদির দোকান দেখে অভ্যস্থ চোখ সেগুলো দেখেই অবাক হতো, আর পেনরিথের সেই বিশাল সুপার মার্কেট দেখে ভড়কে যাবারইতো কথা।
সুপারমার্কেটর সেল্ফে থরে থরে সাজানো জিনিস পত্র দেখে মনে হচ্ছিলো কোনটা ফেলে কোনটা নেবো। ডলারকে টাকায় বার বার কনভার্ট করা দেখে সবাই হাসছিলো, আমার কিন্তু মনে হচ্ছিলো জিনিসগুলো এত দামি কেনো ! কি আর করা। সোহেলকে দেখলাম ১ টা রশুন, ৩ টা পেঁয়াজ, ৪ টা আলু -- এভাবে কিনতে। দেশে এভাবে কিনলে হয়তো দোকানদার পাগল ঠাওরাতো।
দূপুরের খাবার দাবার সেরে সবাই মিলে গেলাম সিডনীর ডার্লিং হারবার বেড়াতে। বন্ধু পত্নীর শখ মনো রেলে উঠবে ! মনোরেলে সিডনী সিবিডির চারপাশ ঘুড়ে ডার্লিং হারবারে নেমে চোখ ধাঁধানো সব রেস্টুরেন্ট, চক চকে ঝকঝকে দোকান পাটে তথাধিক দামি জিনিস পত্র দেখে কিছুটা অসহায় যে লাগেনি সেটা বল্লে মিথ্যে বলা হবে।
দিনটি ছিলো ১৪ ই ফেব্রুয়ারী, ভ্যালেন্টাইনস ডে। ডার্লিং হারবারে প্রিয়তমাকে নিয়ে ব্যস্ত সবাই মধ্যাহ্ন ভোজনে। সব কিছু দেখে দেশে রেখে আসা মানুষটির কথা মনে পড়ছিলো। কেনো জানি বেড়াতে ভালো লাগছিলো না সে সময়টুকুতে। বার বার দেশের কথা মনে পড়ছিলো।
সিডনীর আকাশ ছোঁয়া ভবনগুলো দেখে মন হচ্ছিলো এরা বুঝি আকাশ ছোঁয়ার প্রতিযোগীতায় মত্ত। প্রথম বারের মতো কোনো উন্নত দেশে আসলে যা হয় সেটিই হচ্ছিলো আমার মাঝে। পথে ঘাটে প্রেমিক প্রেমিকার প্রকাশ্যে চুম্বন নিজের মাঝে সনাতন চিন্তাচেতনাকে বার বার ধাক্কা দিচ্ছিলো। এভাবেই কালচারাল শকের প্রথম ধাক্কাটা খাই।
এর পর সবাই মিলে যাই ম্যানলি বিচে। কোনো রকম প্রস্তুতিই ছিলো না, হুট করেই যাওয়া। ভারত মহাসগার দেখিছিলাম, দেখা হলো প্রশান্ত মহাসাগরের সান্নিধ্য পাওয়া।
vabi ke rekhe alen keno ? akbare i niye asten?
উত্তরমুছুনভাল লাগলো আপনার প্রথম অভিজ্ঞতাটা পড়ে। সুমন ভাই, আমি এখন কিন্তু সিডনিতেই এবং জিনিষ পত্রের দাম দেখে যে অসহায়ত্বের কথা বলেছিলেন, সেটা আমার হয়েছে এবং হচ্ছে আজ অব্দি; যদিও খুব একটা চিন্তিত নই কারন আশায় আছি জীবন রক্ষাকারী কোন একটা কাজ পেয়ে যাবো। আপনার লেখা বরাবরের মতো পড়ে ভাল লাগলো।
উত্তরমুছুন