বৃহস্পতিবার, ৩ জুন, ২০১০

ব্লাডি ফেয়ার ডিংকুম ২

স্মৃতি বড্ড প্রতারনা করছে। অনেক কিছুই ঝাপসা হয়ে আসছে। ভেবেছিলাম খুঁটিনাটি লেখবো, অথচ এখন দেখা যাচ্ছে অনেক কিছুই মনে আসছে না।

চলে আসার আগে নানা রকম প্রস্তুতি। একরকম তাড়াহুড়ো করেই চলে আসা হয়েছিলো। ক্লাস শুরু হবার তাড়া থাকাতে ইচ্ছে থাকা সত্বেও অনেক কিছুই করা হয়নি।

দেশে থাকতে যেখানেই কোনো আবেদন করতে হতো বা যেকোনো কাজেই ছবি লাগতো কথায় কথায়। ভেবেছিলাম এদেশে এসেও হয়তো অনেক ছবি লাগবে তাই একগাদা পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রিন্ট  করে এনেছিলাম, সবগুলো ছবিই যে খামে এনেছিলাম সেই খামেই রয়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝে সেই একযুগ আগের গালফুলো ছবিগুলো দেখলে বেশ মজা লাগে। বয়স যে বেড়েছে সেটা ভালোভাবেই বোঝা যায়। মাথায় চুল কমেছে, অভিগ্যতা বেড়েছে।

দেশের বাহিরে যাওয়া প্রথমবারের মতো না হলেও যেহেতু অনেক দিনের জন্য আসা হবে সেহেতু অনেক কিছু কেনা কাটাও করেছিলাম যার অনেক কিছুই কাজে লাগেনি আদৌ। যেমন, বন্ধুরা বলেছিলো রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ করতে হলে নাকি সাদা শার্ট আর কালো ‌প্যান্ট লাগবে। ৩ সেট বানিয়েছিলাম। রেস্টুরেন্টে কাজও করা হয়নি সেগুলো পড়াও হয়নি। শেষমেশ সেগুলো স্যালভেশন আর্মিকে দেয়া হয়েছিলো।

এমন ভাবে কেনা কাটা করেছিলাম যাতে প্রথম বছরের তেমন কিছু কিনতে না হয়। অস্ট্রেলিয়া এসে আবিস্কার করলাম এতো কিছু কেনার কোনো দরকারই ছিলো না। অহেতুক কিছু টাকা জলে গিয়েছিলো। ছবি বা সাদা শার্টের কথাতো আগেই বলেছি। তবে যারা বিদেশে অনেক দিনের মতো আসছেন আমার মতো তাদের জন্য একটা টিপস আমার, " অন্তত এমন সব জিনিস কিনে আনুন দেশ থেকে যা বিদেশে এসে প্রথম বছরের ধাক্কা সামলাতে সাহায্য করবে"।

দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানো বিশাল এক হ্যাপা। ভর্তি কনফার্ম করবার জন্য ১ সেমিস্টারের টাকা পাঠাতে হয়। সেজন্য দেশের ব্যাংকে স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে হয়। পরিচিত লোক থাকায় ঝামেলা খুব একটা হয়নি। কিন্তু এ কাজটির জন্য ২ টা দিন লাগিয়ে এখানে ওখানে দৌড়াদৌড়ি করে কাগজ যোগার করা, এই কাগজের ফটোকপি লাগবে বলার সাথে সাথে তা নিয়ে আসা জাতীয় কাজ করে এক সময় মনে হয়েছিলো পরিচিত লোক না থাকলে কি যে হতো।
একসময় টিউশন ফির টাকা টিটি করে আর স্টুডেন্ট ফাইল খুলে মনে হয়েছিলো বিশাল এক যুদ্ধ জয় করেছি। জনতা ব্যাংকের কাছে কৃতগ্যতা এজন্য। অনেকেই যখন বিদেশী ব্যাংকে ফাইল খুলতে গিয়ে ৫/৬ হাজার টাকা ব্যায় করেছিলো সেখানে আমি মাত্র ৮/৯ শ টাকাতেই কাজ সারতে পেরেছিলাম কোনোরকম "চা-পানির" খরচ ছাড়াই।

হাইকমিশন থেকে পাসপোর্টে ভিসা স্ট্যাম্প লাগানোর পর শুরু হলো বিমানের টিকিট কেনার পালা। সবাই বলেছিলো সিংগাপুর এয়ারলাইন্স নাকি অস্ট্রেলিয়া আসার জন্য ভালো। ভাড়া কম - সার্ভিস ভালো - ট্রানজিট কম। এবার টিকিট কেনবার পালা।

1 টি মন্তব্য :

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।