বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০০৯

জন্মদিনের কড়চা

জন্মদিনে ঘটা করে কিছু করবার বয়স সম্ভবত পার হয়ে এসেছি। এখন ইচ্ছেও হয় না তেমন একটা কিছু করতে। এটা কিন্তু মিথ্যে বলছি; এখনো ইচ্ছে হয় কেকে মোমবাতি সাজিয়ে এক নিঃশ্বাষে সবগুলো মোমবাতি নিভিয়ে দিতে, ফানুস দিয়ে ঘর সাজাতে - রঙ বেরঙের কাগজ দিয়ে ঘর সাজাতে। কিন্তু করা আর হয়ে উঠে না। এখন যা কিছু করি তার সবটুকুই একান্তই নিজের মাঝে।

গত বছর জন্মদিনের দিনটি কেটেছিলো অফিসের ডেস্কে সামনে বসে ভুঁরু কুঁচকিয়ে বিরক্তিকর এক সিস্টেমের এনালাইসিস করে , আর সন্ধ্যায় বউকে নিয়ে রেস্টুরেন্টের আলো আঁধারিতে পেটপুঁজো। এবারে যে তেমনটি হবে না সেটা আগেই জানা ছিলো। বউ- ছেলে দেশে বেরাতে যাওয়াতে এবারের জন্মদিনটি একাকীই কেটেছে। আগে থেকেই ডে অফ নেয়া থাকাতে বেশ বেলা করে ঘুম থেকে উঠে দেশে ফোন করেছি। মাঝ রাত থেকেই অবশ্য অনেকগুলো মুঠোফোনের সংক্ষিপ্ত বার্তাও পেয়েছি বন্ধু - ভাই- বোন - আত্মীয়দের কাছ থেকে, জন্মদিনের শুভেচ্ছা। ভালোই লাগে শুভেচ্ছা পেতে। তারপরো কেনো জানি ছোট বেলা - কৈশোর বেলার জন্মদিন গুলোর কথা মনে পরে। সে সময় কার্ড দেয়ার চল ছিলো, এখনতো অনেকেই ই-মেইলে ই-কার্ড পাঠিয়েই দায় সেরে ফেলেন। কাগুজে কার্ডগুলোতে যে মায়ার স্পর্শ লেগে থাকতো তা আর পাওয়া হয় না। বড্ড মিস করি সেই ভালোবাসার স্পর্শটুকু।

বিকেলে টুকটাক শপিং করে ফুডকোর্টে ফ্রায়েড চিকেনকে যখন সাইজ করতে ব্যস্ত তখন পাশেই এক দঙল ছেলে-মেয়ের হইচই জন্মদিনের পার্টি নিজের সেই বয়সের সময়গুলোর কথা মনে পরে যাচ্ছিলো। মডেল স্কুলের হোস্টেলে থাকতে এমনি এক জন্মদিনে নজরুল হাউসের পেছনের দেয়াল টপকিয়ে জেনেভা ক্যাম্পের পারাটা- টিকিয়া -চাপ খেয়েছিলাম সবাই এদের মতোই হইচই করে। কি সুন্দরই না ছিলো সেই সব দিনগুলো ! আহ, আবার যদি ফেরত যাওয়া যেতো সে বয়সে , সে দিন গুলোতে !!

গত বছর ডিনারে ছিলো পশ মরোক্কান রেস্টুরেন্টে , আজ রাতে ডিম ভাজি ও গত রাতে রান্না করা মোটা চালের ভাত। ম্যারিড ব্যাচেলর হলে যায় হয় আর কি। রাতে বাসায় ফীরে নেটে গুতোগুঁতি করেই সময় কাটালাম। বাসার সবার সাথে ভিডিও কনফারেন্সিং করে মনটা একটু ভালোও হয়েছে। এভাবেই কাটলো আমার ৩২ তম জন্মদিন।

হেপ্পি বাড্ডে মাইট।

২টি মন্তব্য :

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।