বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০০৯

আজি এ হেমন্তের সকালে বৈশাখের গান গাই

বিমানবন্দরে বউ-ছেলেকে বিদায় দিয়ে ফীরে আসার সময় মনের মাঝে শ্রাবনধারা কিন্তু বাহিরে চৈত্র মাসের খা খা কাঠিন্য। প্রচন্ড ইচ্ছে হচ্ছিলো চলে যাই ওদের সাথে, কি আছে ভাগ্যে ! কিন্তু চাকরির এই মন্দা বাজারে চাকরি হারানোর ভয়ে আবেগ কোথায় যে যায় সেটা আমার মতো এই অগাবগাই জানে। দেশে যখন সবাই নববর্ষের আনন্দে মত্ত, তখন আমরা ব্যস্ত উদয় অস্ত কামলায় ।

রাতে একাকী বিছানায় শুয়ে শুয়ে সবাইকে মুঠোফোন বার্তায় সবাইকে নববর্ষের পাঠিয়ে ঘুমোনোর চেস্টা করার সময় একের পর এক ফিরতী বার্তা। আনন্দের দিনগুলোতে পছন্দ - অপছন্দ নির্বিশেষে সবাইকে শুভকামনা জানাই যদিও অনেকেই এর প্রতিউত্তর দিতে কার্পন্য করেন। যার যা ইচ্ছে, আমি বলার বা ভাবার কে ? ব্লগের সবার পরিচিত এক বড় ভাই এর সাথে তার হারানো প্রেয়সী সেজে কিছু রোমান্টিক বার্তা পাঠাতেই উনার প্রতিউত্তর, “এই বান্দা কে ?”। তারপর উনার একের পর এক বার্তা, থামতেই চায় না। ভাবীর সামনে এ ধরনের বার্তা পেয়ে উনার কি অবস্থা হয়েছিলো সেটা ভেবে কস্টের মধ্যেও হাসি পাচ্ছিলো।ভোর বেলায় দেশ হতে ফোনে জানতে পারলাম মা-ছেলে ভালো ভাবেই দেশে পৌছেছে। ঘুমের ঘোরে কথা বলে আবারো ঘুমের রাজ্যে।

মাঝ দূপুরে সিডনীর মাঝে এলোমেলো হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলাম কত্ত মানুষ ! সবাই যেনো পাগলের মতো ছুঁটছে। সবাই যেনো নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। হাজারো মানুষের মাঝে আমি বড্ড একা। এ শহর আমার নয়, পথ হারানো এক অচেনা পথিক আমি। রাতে বুশ ক্যাপিটালের আপন নীরে ফেরা।

বিছানায় আমার বাবালার ছোট্ট বালিশটা খালি। ঘরে ওর কান্নার শব্দ নেই, খিল খিল হাসীর শব্দ নেই। বউয়ের আদরমাখা রাগ নেই, ভালোবাসার ভুরু কুঁচকানী নেই। এক কস্টের নিঃশব্দতা। অসহ্য কস্ট লাগছে। এভাবেই কাটবে সামনের পাঁচটি সপ্তাহ।

সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।