বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০০৭

আড়াই মাসে দেখা বাংলাদেশ, একটি ক্ষুদ্র চিত্র ১

এপ্রিল ২০ থেকে জুলাই ৩ ,
প্রায় আড়াই মাস টানা কাটালাম বাংলাদেশে এবার। প্রতি বছরই দেশে যাবার মহাব্যায়বহুল ভালো অভ্যাস থাকাতে বাংলাদেশের পরিবর্বতনটা চোখে খুব একটা পড়ে না,চোখে পড়ে না ঢাকার পরিবর্তন বা আত্মীয় স্বজনদের মাঝে পরিবর্বতনটুকু। তবে চর্মচক্ষুতে না পড়লেও মনের চোখে অনেক কিছুই ধরা পরে।

বাংলাদেশে জীবন যাত্রার ব্যায় প্রচন্ড বেড়েছে। কিন্তু সেই হারে বাড়েনি মানুষের আয়। আয় ও ব্যয়ের এ বিশাল ফারাকে মানুষের নাভিঃশ্বাষ অবস্থা,বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্যদের। নিম্মবিত্যদের আয় না বাড়লেও জীবনযাত্রার নুন্যতম চাহিদাটুকুই মেটানো অনেকক্ষেত্রেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমুল্যের ক্রমাগত উর্ধগতির সাথে পাল্লা দিতে না পেরে দারিদ্রসীমার নিচ হতে আরো নিচে চলে যাচ্ছে তারা। যদিও সিপিডি বা সরকারের থিংক ট্যাংক এসব স্বীকার করছে না বা করবে না, যদিও তারা এটা জানে ভালো ভাবেই।

মধ্যবিত্যদের অবস্থা আরো করুন বলা যায়, করুন বলছি এ কারনে যে আমিও এই শ্রেনী হতে আসা একজন মানুষ। এ শ্রেনীকে যতো মাছ হতে দেখতে পাই অন্য দুই শ্রেনীকে ততোটুকু পাই না।
এদের আয় বাড়েনি কিন্তু ব্যায় বেড়েছে।
এরা না পারে জীবনযাত্রাকে উন্নত করতে ,না পারে নামাতে। উভয়সংকটে পরা এক শ্রেনী "মধ্যবিত্য"।

আমার এক বন্ধুকে দেখেছি। ১৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনে চাকুরি শুরু করা সেই বন্ধু আজ ৪৫ হাজার পাচ্ছে। ৩০ হাজার টাকা বেতন বাড়লেও জীবনযাত্রার মান ঠিক রাখতে গিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কিছুই সে রাখতে পারে না।
সে মিজেই বলে বেতন বাড়ছে, বাড়ছে খরচ, কমছে ভবিষ্যতের নিরাপত্তা।
সম্ভবত এ রকম অবস্থা আরো অনেকরই।

সরকারের সর্বশেষ বেতন স্কেলে দেখেছি সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ম বেতনের মাঝে আকাশ-পাতাল ফারাক। অথচ একজন সিনিয়র মোস্ট সেক্রেটারির যেমন সংসার চালাতে হয় তেমনি একজন পিয়নেরও সংসার চালাতে হয়। সেই একি খরচে, সেই একি শহড়ে। অথচ বেতনের কতো বিশাল ফারাক।

ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার খরচ,
বাসা ভাড়া,
বাজার খরচ,
ওষুধ ও চিকিতসা,
আর কতো হাবি জাবি,
জীবনতো চালাতে হবে !

এই সামান্য বেতনে এতো সব খরচ কি মেটানো সম্ভব ?
আমি অগাবগা মাহবুব সুমন বলছি। " সম্ভব নয় "।
তা হলে উপায় ?
টাকা দরকার, ছেলের দুধের টাকা জোগার করতে হবে। টাকা কোথা হতে আসবে ??

উপায় "দূর্নীতি"

যার সন্তান ক্ষুদায় কাতর,
যার সন্তান ওষুধের অভাবে কাতরাচ্ছে,
যার স্ত্রী একটি ছেঁড়া শাড়ি পড়ে আছে সেতো চাইবেই যে ভাবেই হোক টাকা যোগার করে আনতে।

দূর্নীতিকে আমরা অবশ্যই খারাপ বলতে পারি , তবে অভাবের যাতনায় যে মানুষটি দুর্নীতি করছে তাকে কি আমরা খারাপ বলতে পারবো ?
অভাব দূর না করে আর যাই হোক দূর্নীতি দূর করা যাবে না।

1 টি মন্তব্য :

  1. প্রতিদিন দ্রব্যমুল্য ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ আলাদা মনে করে। প্রকৃতপক্ষে ব্যবসায়ীরাই সবচেয়ে বেশি রাজনীতির সাথে জড়িত থাকে, অথবা রাজনীতিবিদরাই এসমস্ত মজুতদারী ব্যবসার সাথে সবচেয়ে বেশী জড়িত। তারা এখন দেখে নিচ্ছে। আর আমরা আঙুল চিবুচ্ছি।

    উত্তরমুছুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।