রবিবার, ১৭ জুন, ২০০৭

অস্ট্রেলিয়ায় আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন : ডর্ম 1

গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট হিসেবে গ্রাজুয়েট হাউসে থাকার কথা থাকলেও টাকার সমস্যার কারনে থাকতে পারিনি। তবে গ্রাজুয়েট হাউসের ভাব সাবি আলাদা, পুরো ফানির্সড স্টুডিও এপার্টমেন্ট।
আমি ছিলাম ওলড রেসিডেন্স নামের একটা ডর্মে। সবাই বলে "ওলড রেসি"।

প্রথম দিন রুম দেখতে গিয়ে পরিচয় হলো ব্লক মেটদের সাথে। দেখি সবাই মেয়ে !! কি আজিব অবস্থা ! মনে মনে মহা খুশি হলেও বাহিরে ভেজা বেড়াল, কারন সাথে এক বড় ভাই ছিল। সবার সাথে হান্ড শেক করে বিদায় নিলাম, তবে কারো সাথে কোলাকুলি হয়েছিল কিনা সেটা বলা যাবে না। সাথের বড়ভাই বলে " এখনি এ অবস্থা , পরে কি জানি হয় !! " পরে কিছুহয়েছিলো কিনা সেটাও বলা যাবে না (সেন্সরড)।

ব্লক F
রুম 17।

আমার ব্লকে রুম ছিল 12 টা। এর মধ্যে ছেলে 5 জন , মেয়ে 7 জন। আমার রুমের দুই পাশে দুই মেয়ে, একজন জেসিকা " জেস " আরেকজন লিয়ানা। জেস পড়তো সাইকোলোজিতে ও লিয়ানা মেডিক্যাল সায়েন্স। জেস আমাকে বেশ পছন্দও করত। কিন্তুতখন বুঝতে পারি নাই। আফসোস !!

ব্লকে আমি ও জেরেমি, এ দুজন ছিলাম গ্রাড স্টুডেন্ট। বাকীরা সবাই আন্ডার গ্রাড। 'আহসান' নামে একটা পাকিস্তানি ছেলে ছিল ব্লকে। 1970-71 এ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর এডমিরাল আহসানের কথা মনে হয় অনেকে জানেন। এই আহসান ছিল তার ভাতিজা। পাকিস্তানী যে 2/1 টাকে ভালো পেয়েছি সারা জীবনে আহসান এর মধ্যে অন্যতম। আহসানের রুমের পাশেই ছিল প্লে-বয় বেনজামিন 'বেনি'র রুম । দারুন একটা ছেলে।স্কটিশ 'টমের" রুমে ছিলো হুইস্কির বিশাল কালেকশন। প্রচন্ড বন্ধুত্বপরায়ন একটা ছেলে।মাথর্া, এলিজ, থাই একটা মেয়ে ( নাম ভুলে গিয়েছি ), আনিটা, বারবারা আমার বাকি সব ব্লক মেট।

ব্লকে ডায়নিং , কিচেন একি সাথে। বাথরুম , লন্ডী্র কমন । লাউনজে গিয়ে দেখি বিশাল এক সাইনবোর্ড, সেখানে নাকি সবার বার্থডে লিখতে হবে! লিখলাম,আমারটা ছিল 3 নাম্বার সিরিয়ালে। আমার রুমে ছিল বেড, কাবার্ড, রিডিং টেবিল, একটা বার ফ্রিজ, হা্যন্ড বেসিন, ফাটা ফাটি স্পিডের ইন্টারনেট কানেকশন ও টেলিফোন। সব দেখে আমিতো মুগ্ধ। দেশে তো ওই সব চিন্তাও করতে পারিনি।

একটাই বিশাল সমস্যা, " রুমে সিগারেট খাওয়া যাবে না "।

প্রথম রাতে বাকি সবার সাথে পরিচয় হোলো।সবাই মিলে ঠিক করলাম বাহিরে ডিনার করবো। একটা ইটালিয়ান রেস্টুরেন্টে গেলাম সবাই মিলে। আমি আর আহসান চিকেন-ভেজি পিজা, বাকিরা যে যার মতো। সে বার দেখলাম অজিরা কি রকম ড্রিংক করতে পারে। বেনি 15 মিনিটের মধ্যেই মাতাল।

প্রথম দিনটা এভাবেই গেলো। শুরু হলো দারুন স্মৃতিময় একটা অধ্যায়ের।
২০০৭-০৩-০২ ০৫:৪০:০৩

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।