মঙ্গলবার, ১২ জুন, ২০০৭

আমার হোস্টেল জীবন - 1

২০০৭-০১-১৩ ০১:৩৪:৩৮


বাল্য কালের অনেকটা সময়ই কাটাতে হয়েছে হোস্টেলে।ভাবছি তার কিছুটা শেয়ার করি সবার সাথে।

ক্লাস 6 থেকেই হোস্টেল জীবন শুরু বলা যায়। মাঝ খানে ক্লাস 7, 8 আবার বাসায় ,বাবা-মার সাথে।
ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হয়েও হলাম না। কষ্টের কাহিনী শুনে আগেই পিছুটান।

ক্লাস 9 এ এসে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে ভতির্ হলাম।হোস্টেল জীবনের দ্্বিতীয় চাপ্টার শুরু হোলো। এখনো মনে আছে ভর্তির দিনটার কথা, লিখিত পরীক্ষ্যা ও ভায়বা ভালোই হয়েছিল। লজ্জার দিন আসলো মেডিক্যাল টেস্টের বেলা। কাপড় খুলে নাংগা বাবা করে এটা সেটা নাড়িয়ে কি যে পরীক্ষ্যা করলো ডাক্তার আজো বুঝে উঠতে পারি নাই। চরম শরমের কথা।

কলেজ নাম্বার 5554।
ঠিকানা কুখ্যাত " ফজলুল হক হাউস "।
শুরু হোলো হোস্টেল জীবন।

হোস্টেলে যাবার আগে ট্রাংক , ,বালিশ- তোষক, সাদা ড্রেস 4 জোড়া, নেভি ব্লু ব্লেজার , কালো জুতা , সুই -সুতা আরো কত কি যে কিনতে হয়েছিল, যেনো পুরো সংসার।জামা-প্যান্টে আবার নামে ইনিশিয়াল করাতে হোলো, যদি হাড়িয়ে যায়!

সব কিছু নিয়ে কোনো এক শনিবার হোস্টেলে হাজির হলাম। তখন বিকেল বা সন্ধ্যা হয় হয়।

আমাকে রেখে বাবা-মা চলে গেলেন। দেখলাম আমার মতো আরো কিছু এতিম দাঁড়িয়ে।দিলে একটু শান্তি পেলাম। পুরোনো ছেলেরা চিড়িয়া খানার জন্তুদেখার মতো তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।

যে রুমে উঠিয়ে দিল সেখানে যেই মাত্র সব কিছু সাজিয়ে বসেছি তখনি ওয়ার্ডবয় এসে বল্ল রুম চেনজ, তড়ি ঘড়ি করে গাট্টি বোচকা নিয়ে আরেক রুমে।রুম নাম্বার 16, সাথে আরো 3 জন।
কিছু ক্ষন পর আসলেন হাউস মাস্টার। বল্লেন কলেজ ড্রেস পড়তে, রাতে নাকি তাই পড়ে থাকতে হবে।কি আর করা, সাদা ড্রেস - কালো জুতা।
রাত ঠিক 8 টায় ঘন্টা , পাগলা ঘন্টির মতো আওয়াজ। বুঝতে পারছিলাম নে কিসের জন্য ।

পুরোনো ছেলেরা এসে বল্ল ডিনার কল । গেলাম ডাইনিং হলে ,30 বছরের পুরোনো ডালের চামচ দিয়ে টেবিলে আঘাত করে ' হাউস বিসমিল্লাহ্হির রাহমানির রাহিম" বলে খাওয়া শুরু করলাম।এর আগে অবশ্য বসা নিষেধ ছিল। সে দিনের মেনু ছিল পোলাও-খাসির মাংস-আলুর চপ -পুডিং।ভেবেছিলাম আমরা নতুন বলে মনে হয় রাজকীয় আয়োজন !

খাওয়া শেষ করে রুমে গেলাম, 10 টায় নাকি লাইট নিভিয়ে দেবার নিয়ম ( ! ) লাইট লিভিয়ে দিয়ে শুয়ে থাকলাম।
ভাবছিলাম কখন র্যাগিং শুরু হবে।

রেটিং:০.০/০
৭টি মন্তব্য
৯৮বার পঠিত

অতিথি বলেছেন :
২০০৭-০১-১৩ ০৭:৪৮:২৪
মাহবুব, অতীত স্মৃতিতে বেশ নাড়া দিলেন। একটা ব্যাপার বুঝলাম না, আমাদের সময় কিন্তু কালচারাল ব্যাপারগুলো বেশ পোক্ত ছিল। আপনাদের সময় থেকেই কি মৌলবাদীরা আস্তানা বাধা শুরু করলো। আপনার assessment কি?
মাহবুব সুমন বলেছেন :
২০০৭-০১-১৩ ০৮:০১:০২
আমাদের সময় আমরা 21 শে ফেব্রুয়ারিতে ফুল দিতে যেতাম কলেজ ভবনের সামনের শহীদ মিনারে, সপ্তাহ জুড়ে কালচারাল উইক করতাম বট তলায়, সব কিছুই করা হতো। কিন্তু কর্নেল কায়সার আহমেদ আসার পর তা বন্ধই হয়ে যায় একদম।প্রিফেক্টেরিয়াল বোর্ডও তুলে দেয়া হয়, বৃ হস্পতিবারের এসেম্বলিও বন্ধ করে দেয়া হয়। এর পেছনে কলেজের কিছু স্যারেরও ইন্ধন ছিল। তবে কর্নেল মোশাররফ আসার পর আবার প্রায় চালু করা হয় সব কিছু।এসবই আমাদের পাসিং আউটের পর, বর্তমান অবস্থ কি জানি না। খুব খারাপ লাগে এ জন্য।
অতিথি বলেছেন :
২০০৭-০১-১৩ ০৮:০৬:০৩
শিবির কি লুকিয়ে চুড়িয়ে ছিল?
অতিথি বলেছেন :
২০০৭-০১-১৩ ০৮:১৭:০৭
আমার হোষ্টেল লাইফ নাই :(
মাহবুব সুমন বলেছেন :
২০০৭-০১-১৩ ০৮:১৯:১৬
কলেজে কখনো কোনো ছাত্র সংগঠন ছিল না, তবে শিক্ষকদের মাঝে কি রকম জানি একটা ছিল , এটা আমাদের সময়ও টের পেতাম, হাউস ফাংশান এর সময় অনেক ফাইট করতে হতো, আমাদের আগের ব্যাচের বিদায়ের সময় তারা কোনো মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট ব্যব হার করতে দেন নাই, টেবিল চাপড়িয়েই কফি হাউজের আড্ডা গানটা গেয়েছিল রাজা বাংগালী ভাই।তেেব সমস্যা ছিল, আর এ জন্যই তো দেখতে পাচ্ছেন কলেজ থেকে কারা বের হচ্ছে। আমরা কতো কিছু করতাম। পড়াশুনা, খেলা, গান, দেয়াল পত্রিকা, ক্রাফটস, বাঁদরামি। আর এখন ? পড়া শুনা ছাড়া আর কি আছে ?
অতিথি বলেছেন :
২০০৭-০১-১৩ ১০:১৯:২৮
বড় ভাই, এই পর্বটা ভালো উদ্যোগ। যত বাঁদরামি করেছেন, সব অসংকোচে লিখে যান।
মাহবুব সুমন বলেছেন :
২০০৭-০১-১৩ ১১:১৮:৩৪
চোর, এট্টু আধটু সেন্সর করতে হবে যে, নাইলে সমস্যা আছে! 25 এর আগে জীবন অন্যরকম ছিল, এখন অন্যরকম। তয় মোটামুটি সবি লিখব, সোনালী সময় ছিল সেটা।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।