বুধবার, ১৮ এপ্রিল, ২০০৭

মফিজের ভারত ভ্রমন - 6 ( শেষ পর্ব)




দিল্লি থাকে আলিগড়ে এসে 2 দিন থাকলাম। এর মধ্যেই আলিগড়-মালদা ট্রেনের টিকিট কেটে ফেলা হয়েছিল। রাত 8 টায় ট্রেন ছিল, সেই ফারাককা এক্সপ্রেস। স্টেশনে অনেকে বিদায় দিতে এসেছিল। আমাকে না, আরেকজন বাংলাদেশী ছাত্র যে পড়া শেষ করে দেশে ফেরত যাচ্ছিল। আলিগড়ে একটা বাজে জিনিস আছে। " র্যাগিং " । আমি বুঝতে পারিনি যে সেটা আমার উপরও কিছুটা আসবে। স্টেশনে সবাই গল্প করছি, এমন সময় ঢাকার একটা ছেলে এসে বল্ল ' চলো চা খেয়ে আসি ' আমি মফিজ তার সাথে কিছুদূর যেতেই 10/12 টা বাংলাদেশী ছেলে আমাকে ঘীরে ধরল। গায়ে পরেই যেনো ঝগড়া শুরু করে দিল ওরা। আমি বুঝতে পারছিলাম কি হতে যাচ্ছে। নিয়মিত জিম ও বক্সিং করা পেটা শরীর আমার তখন। তারপরো ঘাবড়ে গিয়েছিলাম কিছুটা। 3/4 জনের সাথে পারা যায় , কিন্তু 12 জন ! ওরা ঠিক করে এসেছিল আমাকে সাইজ করবে। এতদিন সুযোগ পায় নি , শেষ বারের চেষ্টা। ভাগ্য ভালো , এটা আন্দাজ করে সিনিয়র কিছু ছেলে এসে আমাকে বাঁচালো। তারপরো কিছুটা হয়েছিল, আমার মুখে কয়েকটা পানচিং আর আরেক ছেলের 2 দাঁত হাওয়া।


ট্রেন 8 টার সময় আসার কথা থাকলে আসলো পরদিন সকাল 6 টায়। কি আর করা।ট্রেনে বলার মতো তেমন কিছু হয়নি। সাথে অনেক বাংলাদেশী ছেলে থাকাতে সারা পথ গল্প করেই কিভাবে যে সময় কেটে গিয়েছিল বুঝতেই পারিনি।বিকেল 3 টার দিকে মালদা পৌঁছুলাম ।চেকপোস্ট বন্ধ হবার সময় ছিল 4 টা।


পরিমরি করে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা মাহদিপুর, তাড়াতাড়ি করে সব কিছু সেরে বাংলাদেশে প্রবেশ, সে এক অন্যরকম শান্তি।


যতবারই দেশের বাহির থেকে বাংলাদেশে ফিরেছি একি রকম শান্তি পেয়েছি। বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে সমস্যা হবার কথা ছিল না, হয়ও নি।কাস্টমসে এসে সেই পুরোনো কাহিনী, 'বকশিস '। রাজী না হওয়াতে সব কিছু চেক করলো। চেক করা শেষ হবার পর বাবার পরিচয় দিলাম , ব্যাটা বলে আমার বাবা নাকি তার বন্ধু, শালা চুতিয়া।


সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে গেলো সোনা মসজিদ থেকে রাজশাহী কি ভাবে জাবো তা নিয়ে। কোনো বাস ছিল না, বাবাকেও বলিনি যে গাড়ি পাঠাবে। মহা সমস্যা। সব কিছু বন্ধ, এমনি একটা হোটেলও খোলা ছিল না যে কিছু খেতে পারবো।


এমন সময় স হায় হয়ে আসলো এক সি এন্ড এফ এজেন্ট, সে তার ট্রাকে রাজশাহী পৌছুবার ব্যবস্থা করে দিলো, পাথরের ট্রাক। ট্রাকের পেচনে আমি আর আমার বন্ধুবসা। সে এক অন্যরকম অভিগ্যতা।


চাঁপাই নওয়াব গনজে গিয়ে পেট পুরে ভাত খেলাম, সে আরেক রকম শান্তি।


রাত 11 টায় রাজশাহী পৌছুলাম।


শেষ হোলো 11 দিনের ভারত ভ্রমন।


--------------


ছবি :ছোট সোনা মসজিদ।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।