রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১১

কিভাবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স (Bangladesh Police clerance) সার্টিফিকেট পাবেন

নানা কাজে আমাদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। অনেকেরই জিজ্ঞাসা থাকে কিভাবে তা পাওয়া সম্ভব। তাদের জন্যই এই পোস্ট।

যারা স্থায়ী ঠিকানা ঢাকা মেট্রোপলিটান এলাকায় তারা ঢাকা মেট্টোপলিটান পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়ান স্টপ সার্ভিস থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সংগ্রহ করবেন, আর যারা ঢাকার বাহিরে তারা তাদের স্থায়ী ঠিকানার পুলিশ কমিশনার / পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

ধাপ সমূহ:

১) পাসপোর্টের ১- ৬ পাতা এবং অন্য সকল পাতা যেখানে পাসপোর্ট নবায়ন করা হয়েছে বা কোনোরকম সংযোজন অথবা সংশোধন করা হয়েছে সেই সব পাতার ফটোকপি প্রথম শ্রেণীর  ‌গ্যাজেটেড কর্মকর্তা দ্বারা সত্যায়িত করাতে হবে। প্রবাসীরা সেই দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস/হাইকমিশনের কনস্যুলার শাখা থেকে তা সত্যায়িত করাবেন।

২) পাসপোর্টে স্থায়ী ঠিকানা ঢাকায়  হলে ঢাকা মেট্টোপলিটান পুলিশ কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে আবেদন করতে হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের এই সাইটে বিস্তারিত পাওয়া যাবে।
 ঢাকার বাহিরে হলে সংশ্লিস্ট জেলার পুলিশ সুপার বা থানার ওসির বরাবর আবেদন করাতে হবে।

৩) প্রবাসীরা ডাক যোগে আবেদন পত্র ও পাসপোর্টের সত্যায়িত পাতা দেশে কোনো আত্নীয়র কাছে পাঠাবেন। যিনি আপনার পক্ষ হয়ে কাজ করবেন তাকে অথারাইজ করে একটা চিঠি এর সাথে সংযুক্ত করা ভালো।

৪) সোনালী ব্যাংকে হতে ৳৫০০ টাকার "ট্রেজারী চালান" আবেদন পত্রের সাথে যুক্ত করতে হবে।
ট্রেজারি চালান করার সময় এই কোডটি দরকার হবে 1 - 2 2 0 1 - 0 0 0 1 - 2 6 8 1। চালানের আবেদন পত্র বিনে পয়সায় ব্যাংকে পাওয়া গেলেও বেশির ভাগ সময় তা বাহির হতে ২/৫ টাকার বিনিময়ে কিনতে হয়।

৫) ট্রেজারী চালান, আবেদন পত্র ও পাসপোর্টের সত্যায়িত পাতা এক সাথে গেঁথে ঢাকা পুলিশ মেট্টো পুলিশ হেডকোয়ার্টারে জমা দিতে হবে। আবেদন পত্রে নিজের মোবাইল নাম্বার লিখে দিতে পরামর্শ দিচ্ছি যাতে কাজ শেষ হলে বা দরকারে কেউ যোগাযোগ করতে পারে। 

৭) ঢাকা মেট্রো পুলিশের ভাষ্য মতে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে ৭ দিন সময় লাগবে। এটা মুলত কাগজে কলমে, বাস্তবতা ভিন্ন। নির্ভর করে কত দ্রুত পুলিশ কাজ করছে। নিজে যোগাযোগ করে কাজ করলে কাজ দ্রুত হয়, নচেৎ বলা মুশকিল কত দিন লাগবে।

৮) ঢাকা মেট্রো পুলিশ হেড কোয়ার্টারের ওয়ান স্টপ সার্ভিস এ আবেদন পত্র জমা দিয়ে টোকেন সংগ্রহ করতে হবে। টোকেনে ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাবার তারিখ দেয়া থাকে। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট আনবার সময় মূল পাসপোর্ট সাথে নিতে পরামর্শ দিচ্ছি। অনেক সময় ওরা সেটা দেখতে চায় ।

৯) যেকোনো এক সময় সংশ্লিস্ট থানা থেকে যোগাযোগ করা হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে ৭ দিন পর সার্টিফিকেট হাতে পাবেন।

৮) আবেদনে থানার নাম অবশ্যই পরিস্কার ভাবে উল্লেখ করতে হবে।

১০) ঢাকার বাহিরের ব্যপরাটা একটু ভিন্ন। সেখানে আবেদন পত্র ও অন্যান্য কাগজপত্র জমা দেবার পর তারা সেই জেলার পুলিশ সুপার সেটা স্থায়ী ঠিকানার থানায় পাঠিয়ে দেবে। থানা থেকে সব কিছু যাচাই করে তা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে তা পররাস্ট্র মন্ত্রালয়ে পাঠাবে ( এটা প্রবাসীদের ক্ষেত্রে )। পররাস্ট্র মন্ত্রানালয়ের কনস্যুলার শেকশন থেকে দূতাবাস/হাই কমিশনের সই যাচাই করে তা আবার পুলিশ সুপারের মাধ্যমে থানায় পাঠানো হবে। থানা হতে ক্লিয়ারেন্স সার্টোফিকেট হাতে হাতে সংগ্রহ করতে হবে। এই পর্বে প্রতিটি ধাপ অনেক সময় লাগে। এর জন্য আবেদনকারীকেই নিজ উদ্যোগে এই কাজ গুলো করতে হবে। পুলিশের হাতে ছেড়ে দিলে সেটা মাস খানেকের বেশী লাগবে।  থানা হতে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ও একটি ফোরওয়ার্ডিং লেটার পররাস্ট্র মন্ত্রানালয়ের কনসুলার সেকশন সকাল ১১ এর মধ্যে হাতে হাতে জমা দিলে সেই দিন ২ পর তা দিয়ে দেয়। তবে ব্যস্ততার কারনে সেটা পরের দিনও পেতে পারেন।

প্রতিটি কাজের জন্য যথেস্ঠ পরিমান " ঘুষের " প্রয়োজন পড়বে যাকে ভদ্র ভাষায় 'চা পানির টাকা' বলা যেতে পারে। ঘুষের পরিমান ব্যক্তি ও পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করবে।  হাতে সময় নিয়ে কাজ শুরু করা উচিৎ। অন্তত মাস দুয়েকতো অবশ্যই।

এখানে ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের ওয়েব ঠিকানা দিলাম যেখান থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
প্রবাসীরা তাদের নিজ নিজ দেশের হাইকমিশন/দূতাবাসের ওয়েব সাইট ঘেঁটে আরো বিস্তারিত জানতে পারবে। স্পেনে যারা থাকেন তাদের জন্য পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। বিস্তারিত ঢাকা মেট্টো পুলিশের যে ওয়েব ঠিকানা দিলাম সেখান হতে জানতে পারবেন।


আশা করি এই পোস্ট অনেকেরই কাজে লাগবে।

আস্তালা ভিস্তা।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।