রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১০

ব্লাডি ফেয়ার ডিংকুম ৮

সেদিনের সন্ধ্যাটা ছিলো অন্যরকম। কেমন যেনো সেটা বলে বোঝাতে পারছি না। টার্মিনাল থেকে হেঁটে হেঁটে বন্ধুর গাড়ি পর্যন্ত আসতে মনে হচ্ছিলো আকাশটা কতো পরিস্কার। ফেব্রুয়ারীর মৃদুমন্দ আবহাওয়া মন্দ লাগছিলো না।

গাড়িতে বসে বাসায় ফোন দিলাম। এখনো মনে আছে ১ মিনিট ১৬ সেকেন্ড কথা বলেছিলাম। এটাও মনে আছে, মোবাইলে এই অল্প সময় কথা বলার জন্য যে ডলার টুকু খরচ হয়েছিলো সেটার জন্য সেই কন্জুস বন্ধুর আত্মায় হয়তোবা দু এক খান ঘাও লেগেছিলো। চারদিকে ঝলমলে আলো, হড়েক রকম গাড়ি। নীড় ফেরায় ব্যস্ত মানুষগুলোর গাড়ী পিঁপড়ের সারিরে মতো এই ধীরে এই জোরে এগিয়ে চলছে। তাদের মাঝে আমি ও আমরা এবং আমাদের গাড়ি।

ওয়ালীপার্ক বলে এক সাবার্বে আমার এক বন্ধুর বন্ধুর বাসা ছিলো, সে রাতে ওখানেই উঠেছিলাম। যদিও ইচ্ছে হচ্ছিলো সোহেলের বাসাতই উঠি। প্রচন্ড ক্লান্ত লাগছিলো সেময়, ইচ্ছে হচ্ছিলো বিছানায় শুয়ে টানা একটা ঘুম দেই মরার মতো। ওয়ালীপার্কে যে বাসায় ইঠেছিলাম সে বাসায় রাতুল নামে এক ছেলে তার আরেক ছেলের সাথে শেয়ার করে থাকতো। দুজনই ফোর্সড ব্যাচেলর, চরম অগোছালো একটা বাসা।

ক্লান্ত শ্রান্ত মানুষটি যখন ঘুমোনোর জন্য আঁতিপাঁতি করছে বিছানার খোঁজে তখন সাথের বন্ধুরা ব্যস্ত আড্ডায়। কারো মনে হয় এতটুকু বোঝার ক্ষমতা হয়নি সে একটা মানুষ হাজার হাজার মাইল ভ্রমন করে এসেছে, তার একটু বিশ্রাম দরকার। কোথা হতে কোনো এক লেবানিজ দোকানের হালাল পিজা নিয়ে আসা হলো রাতের খাবারের জন্য সাথে হারাম ওয়াইন। কি অদ্ভুত বৈপরত্ব মানুষের। পিজা খেলাম, ওয়াইন পান করলাম না। হালাল পিজা খাবার জন্য সেকি ঈমানী জোশ সেই সাথে মজাক করবার জন্য ওযাইন, বাহ !!

বাবার এক বন্ধুর মেয়েকে ফোন দিলাম, বল্লাম আপু সিডনী এসেছি। উর্মি আপা উনার বাসায় কেনো উঠলাম না বা কেনো আগে ভাগে জানালাম না সেজন্য একটু মাইন্ড করেছিলেন মনে হয়েছিলো। বল্লাম পরের বার যখন আসবো তখন অবশ্যই উনার সাথে দেখা হবে।

ঘুমোতে ঘুমোতে মধ্যরাত হয়ে গেলো, সময় তখন ৩ কি ৪ টা হবে। ঘুম যখন ভাঙলো তখন ঘড়িতে সকাল ৯ টা। নাস্তা না করেই সোহেলের বাসা পেনরিথের দিকে রওয়ানা দিলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম খুব কাছেই হবে বাসা, পরে দেকি যেতে যেতে প্রায় ঘন্টা খানেক লেগে গেলো। ওর বাসায় এসে শান্তি পেলাম, মনে হলো নিজের বাসায় এলাম।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।