শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০০৯

হাবিজাবি ৩

1 টি মন্তব্য :
মনের মাঝে উথাল পাতাল। আইন আদালতও আজ কাল টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যায়। দূর্নীতিবাজ বিচারক। ঘুষখোর পুলিশ। সের দরে কেনা বেচা হয় মানুষের বিবেক - চেতনা। দিন দুপুরে বেদখল হয়ে যায় একমাত্র আয়ের সংস্থান । চেয়ে চেয়ে দেখি। স্বজনও সেখানে পর হয়ে যায় । হয়তো একসময় সব কিছু ঠিক হয়ে যায় সবকিছু; কিন্তু জনকের বিনিদ্র রজনি যাপনের কস্টটুকু ফিরিয়ে দেবে কে ? আছে কি কোনো দাওয়াই অর্থকস্টের যাতনাকে উপশম করবার ? দূর প্রবাসে অসহায় পুত্র -কন্যার দূরালোপনী হয়তো জনক- জননীর মাঝে কিছুটা হলেও স্বান্তনা দেয়, কিন্তু সমস্যার কতটুকুই বা দূর করতে পারে ? প্রশ্নগুলোর উত্তর বড্ড গোলমেলে।

টাকা পয়সার খুবই দরকার। টাকা হলে পেটে গরম ভাত জুটে, মাথার উপর ছাদ মেলে। টাকা হলে মানুষের সম্মান মেলে, সেলাম জুটে। প্রেয়সীকে গিফট দেয়া যায় টাকা হলে, হবু শশুড়কে খুশী করা যায়। টাকা হলে গাড়ী হাঁকানো যায়, বাড়ি কিনে ফুটানী করা যায়। টাকা হলে পৃথিবীর সব সুখ হাতের মুঠোয় এসে যায়। টাকা হলে মনের শান্তি সাহারা মরুভূমিতে নির্বাসিত হয়। টাকাই সব, টাকা কিছুই নয়।

এখন বাহিরে বেশ বৃস্টি। টিনের চালে বৃস্টির ঝমঝম শুনতে মন চায়, কিন্তু টিনের চালের ঝমঝম শব্দ কোথায় পাবো বলতো ? ঘরে ফায়ার প্লেসের উম বড্ড আরাম, কিন্তু কাঁথা মুরি দিয়ে ঘুমানোর আয়েশ করার সুযোগ নেই। বারবিকিউতে ভাজা মাংসের গন্ধ পাচ্ছি কিন্তু বর্ষার প্রথম বৃস্টির পরে মাটির সোঁদা গন্ধ এই ইট পাথরের শহরে পাচ্ছি না।

মানের মাঝে উথাল পাতাল। নিজে ভালো না থাকলে , জনক জননী ভালো না থাকলে পৃথিবী সাগরের তলিয়ে গেলেইবা কি এসে যায়। সব কিছু নিয়েই ভালো নেই। মনটা ভালো নেই। হয়তো সময় সব কিছু ঠিক করে দেবে কিন্তু রেখে যাবে কস্টের চিহ্ন। এ চিহ্ন মুছবে কে ?

বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০০৯

জন্মদিনের কড়চা

২টি মন্তব্য :
জন্মদিনে ঘটা করে কিছু করবার বয়স সম্ভবত পার হয়ে এসেছি। এখন ইচ্ছেও হয় না তেমন একটা কিছু করতে। এটা কিন্তু মিথ্যে বলছি; এখনো ইচ্ছে হয় কেকে মোমবাতি সাজিয়ে এক নিঃশ্বাষে সবগুলো মোমবাতি নিভিয়ে দিতে, ফানুস দিয়ে ঘর সাজাতে - রঙ বেরঙের কাগজ দিয়ে ঘর সাজাতে। কিন্তু করা আর হয়ে উঠে না। এখন যা কিছু করি তার সবটুকুই একান্তই নিজের মাঝে।

গত বছর জন্মদিনের দিনটি কেটেছিলো অফিসের ডেস্কে সামনে বসে ভুঁরু কুঁচকিয়ে বিরক্তিকর এক সিস্টেমের এনালাইসিস করে , আর সন্ধ্যায় বউকে নিয়ে রেস্টুরেন্টের আলো আঁধারিতে পেটপুঁজো। এবারে যে তেমনটি হবে না সেটা আগেই জানা ছিলো। বউ- ছেলে দেশে বেরাতে যাওয়াতে এবারের জন্মদিনটি একাকীই কেটেছে। আগে থেকেই ডে অফ নেয়া থাকাতে বেশ বেলা করে ঘুম থেকে উঠে দেশে ফোন করেছি। মাঝ রাত থেকেই অবশ্য অনেকগুলো মুঠোফোনের সংক্ষিপ্ত বার্তাও পেয়েছি বন্ধু - ভাই- বোন - আত্মীয়দের কাছ থেকে, জন্মদিনের শুভেচ্ছা। ভালোই লাগে শুভেচ্ছা পেতে। তারপরো কেনো জানি ছোট বেলা - কৈশোর বেলার জন্মদিন গুলোর কথা মনে পরে। সে সময় কার্ড দেয়ার চল ছিলো, এখনতো অনেকেই ই-মেইলে ই-কার্ড পাঠিয়েই দায় সেরে ফেলেন। কাগুজে কার্ডগুলোতে যে মায়ার স্পর্শ লেগে থাকতো তা আর পাওয়া হয় না। বড্ড মিস করি সেই ভালোবাসার স্পর্শটুকু।

বিকেলে টুকটাক শপিং করে ফুডকোর্টে ফ্রায়েড চিকেনকে যখন সাইজ করতে ব্যস্ত তখন পাশেই এক দঙল ছেলে-মেয়ের হইচই জন্মদিনের পার্টি নিজের সেই বয়সের সময়গুলোর কথা মনে পরে যাচ্ছিলো। মডেল স্কুলের হোস্টেলে থাকতে এমনি এক জন্মদিনে নজরুল হাউসের পেছনের দেয়াল টপকিয়ে জেনেভা ক্যাম্পের পারাটা- টিকিয়া -চাপ খেয়েছিলাম সবাই এদের মতোই হইচই করে। কি সুন্দরই না ছিলো সেই সব দিনগুলো ! আহ, আবার যদি ফেরত যাওয়া যেতো সে বয়সে , সে দিন গুলোতে !!

গত বছর ডিনারে ছিলো পশ মরোক্কান রেস্টুরেন্টে , আজ রাতে ডিম ভাজি ও গত রাতে রান্না করা মোটা চালের ভাত। ম্যারিড ব্যাচেলর হলে যায় হয় আর কি। রাতে বাসায় ফীরে নেটে গুতোগুঁতি করেই সময় কাটালাম। বাসার সবার সাথে ভিডিও কনফারেন্সিং করে মনটা একটু ভালোও হয়েছে। এভাবেই কাটলো আমার ৩২ তম জন্মদিন।

হেপ্পি বাড্ডে মাইট।

শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০০৯

I Dreamed a Dream

কোন মন্তব্য নেই :
There was a time when men were kind
When their voices were soft
And their words inviting
There was a time when love was blind
And the world was a song
And the song was exciting
There was a time
Then it all went wrong

I dreamed a dream in time gone by
When hope was high
And life worth living
I dreamed that love would never die
I dreamed that God would be forgiving
Then I was young and unafraid
And dreams were made and used and wasted
There was no ransom to be paid
No song unsung, no wine untasted


But the tigers come at night
With their voices soft as thunder
As they tear your hope apart
And they turn your dream to shame


He slept a summer by my side
He filled my days with endless wonder
He took my childhood in his stride
But he was gone when autumn came


And still I dream he'll come to me
That we will live the years together
But there are dreams that cannot be
And there are storms we cannot weather


I had a dream my life would be
So different from this hell I'm living
So different now from what it seemed
Now life has killed the dream I dreamed

বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০০৯

আজি এ হেমন্তের সকালে বৈশাখের গান গাই

কোন মন্তব্য নেই :
বিমানবন্দরে বউ-ছেলেকে বিদায় দিয়ে ফীরে আসার সময় মনের মাঝে শ্রাবনধারা কিন্তু বাহিরে চৈত্র মাসের খা খা কাঠিন্য। প্রচন্ড ইচ্ছে হচ্ছিলো চলে যাই ওদের সাথে, কি আছে ভাগ্যে ! কিন্তু চাকরির এই মন্দা বাজারে চাকরি হারানোর ভয়ে আবেগ কোথায় যে যায় সেটা আমার মতো এই অগাবগাই জানে। দেশে যখন সবাই নববর্ষের আনন্দে মত্ত, তখন আমরা ব্যস্ত উদয় অস্ত কামলায় ।

রাতে একাকী বিছানায় শুয়ে শুয়ে সবাইকে মুঠোফোন বার্তায় সবাইকে নববর্ষের পাঠিয়ে ঘুমোনোর চেস্টা করার সময় একের পর এক ফিরতী বার্তা। আনন্দের দিনগুলোতে পছন্দ - অপছন্দ নির্বিশেষে সবাইকে শুভকামনা জানাই যদিও অনেকেই এর প্রতিউত্তর দিতে কার্পন্য করেন। যার যা ইচ্ছে, আমি বলার বা ভাবার কে ? ব্লগের সবার পরিচিত এক বড় ভাই এর সাথে তার হারানো প্রেয়সী সেজে কিছু রোমান্টিক বার্তা পাঠাতেই উনার প্রতিউত্তর, “এই বান্দা কে ?”। তারপর উনার একের পর এক বার্তা, থামতেই চায় না। ভাবীর সামনে এ ধরনের বার্তা পেয়ে উনার কি অবস্থা হয়েছিলো সেটা ভেবে কস্টের মধ্যেও হাসি পাচ্ছিলো।ভোর বেলায় দেশ হতে ফোনে জানতে পারলাম মা-ছেলে ভালো ভাবেই দেশে পৌছেছে। ঘুমের ঘোরে কথা বলে আবারো ঘুমের রাজ্যে।

মাঝ দূপুরে সিডনীর মাঝে এলোমেলো হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলাম কত্ত মানুষ ! সবাই যেনো পাগলের মতো ছুঁটছে। সবাই যেনো নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। হাজারো মানুষের মাঝে আমি বড্ড একা। এ শহর আমার নয়, পথ হারানো এক অচেনা পথিক আমি। রাতে বুশ ক্যাপিটালের আপন নীরে ফেরা।

বিছানায় আমার বাবালার ছোট্ট বালিশটা খালি। ঘরে ওর কান্নার শব্দ নেই, খিল খিল হাসীর শব্দ নেই। বউয়ের আদরমাখা রাগ নেই, ভালোবাসার ভুরু কুঁচকানী নেই। এক কস্টের নিঃশব্দতা। অসহ্য কস্ট লাগছে। এভাবেই কাটবে সামনের পাঁচটি সপ্তাহ।

সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা।