শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০০৯

একাত্তরের যুদ্ধাপোরাধীদের বিচার কাজ শুরু করতে সরকার কতটুকু প্রস্তুত ?

একাত্তরের যুদ্ধাপোরাধীদের বিচারে আওয়ামী লিগ সরকারের আন্তরিকতা আছে কি না সেইটা নিয়া প্রশ্ন না তুলেই মনে প্রশ্ন জাগছে, "সরকার আসলে কতটুকু প্রস্তুত বিচার কাজ শুরু করতে"।

ব্লগে রুবেলের এক পোস্টে দেখলাম গোল টেবিল বৈঠকে সবাইকে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবারো নজাগরন ও সচেতনতা স্মৃস্টি করতে আহবান জানিয়েছেন। মানুষের মধ্যে সচেতনতা ঠিকই আছে, আছে বিচার চাইবার আখুতি, আছে ঐকান্তিক জাগরন। কিন্তু কথা হচ্ছে আর কতটুকু জাগরন স্মৃস্টি হলে হলে সরকারের বাস্তব কিছু করার প্রেরণা জাগবে?

রুবেল - অরন্যরা সব কিছু ফেলে ফুলে পাগলের মতো মানুষের স্বাক্ষর জোগার করবে আর সেই স্বাক্ষরগুলো গুদামঘরে পঁচে মরবে সেটাতো হতে পারে না। সাধারন মানুষের মাঝে জাগরন ঠিকই আছে , সবই ঠিক ; আছে । এখন দরকার সরকারের কাজ শুরু করবার পালা, বিচার কাজ শুরু করবার পালা। এটা না করে হাজারো সুশীল গোল টেবিল করলে কাজের কাজ কিছুই হবে না।

কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে ইচ্ছে করে।

১) বিচারে কাজে কারা কারা অভিযুক্ত হবে ?
হাতে গোনা - মুখ পরিচিত কিছু গোআ- নিজামী জাতীয় জামাতি নেতা না একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধী ও যুদ্ধাপোরাধী সকল রাজনৈতিক নেতা- কর্মী ?
মুখ চেনা কিছু পরিচিত পশুর বিচার হলে সেটা মুলত আই ওয়াশই হবে, পরিপূর্ন বিচার হবে না।
২) রাজনৈতিক অভিযুক্ত ছাড়াও যারা শান্তি কমিটিতে ছিলো বা কোলাবেরটর হিসেবে কাজ করেছিলো তারাও কি বিচারের সম্মুখিন হবে ?
৩) পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর যুদ্ধাপোরাধীদেরও কি বিচারের সম্মুখিন করা হবে ?
৪) রাজাকার বাহিনীতে কাজ করা রাজাকার ও ইপকাফ এর সদস্য অবাঙালীরাও কি বিচারের সম্মুখিন হবে ?
এ ব্যাপরে সরকারের কোনো সুনির্দিস্ট ঘোষনা আছে কি ?

যাই হোক, ধরা যাক জাগরন স্মৃস্টি হলো। তার পর সরকারকে কিন্তু অনেক কাজ করতে হবে। আনুস্ঠানিক ভাবে অভিযোগ আনতে হবে, সেটার তদন্ত করতে হবে। তদন্ত শেষে পুলিশের অভিযোগপত্র জমা দেয়ার পরই বিচার কাজ শুরু হবে। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ন মামলা বলে এটায় এমনভাবে তদন্ত করতে হবে ও অভিযোগপত্র দিতে হয় যাতে আদালতে গিয়ে কোনো ফাঁক ফোকরেই যুদ্ধাপোরাধীরা ছাড় না পায়। অনেকে হয়তো বলবেন, তথ্য- উপাত্ত- প্রমান অনেক আছে। মানছি আছে; কিন্তু আবেগের কাছে যা প্রমান সেটা আদালতের কাছে অনেক সময়ই প্রমান হিসেবে গন্য না। আবেগ ও আদালত দু ভাবে চলে।

এসময় আরেকটি আরেকটি প্রশ্ন জাগছে মনে।

৫) বিচারের জন্য স্পেশাল ট্রাইবুনাল করা হবে নাকি সাধারন আদালতেই বিচার কাজ শুরু হবে?

যে আদালতেই করা হোক না কেনো আদালতের বিচারে অনেক সময় লেগে যায়। আদালতে যে রায়ই হোক না কেনো সেটায় উচ্চ আদালতে আপিল করা যায়। সব কিছু মিলে অনেক সময় লেগে যায় বাংলাদেশের বর্তমান বিচার ব্যবস্থায়। এটা একটা বড় আশংকার বিষয় আমার কাছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া এসময় উদাহরন হিসবে আসতে পারে ।

এ রকম একটি গুরুত্বপূর্ন কাজে সরকারের বলার মতো কোনো প্রস্তুতি চোখে পড়ছে না। গোল টেবিল বৈঠকে বা সেমিনারে সাদা কালো বাল ফেলানো ছাড়া কোনো কাজের কাজ হয় না।

আরেকটি কথা হলো,
তদন্ত ও তথ্য সংগ্রহের জন্য এমনটি কি কোনো সেল গঠন করা হয়েছে যারা এটা নিয়ে কাজ শুরু করেছে?
আইনজীবিদের নিয়ে কি কোনো বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে যারা আইনগত বিষয় নিয়ে কাজ করছেন ?

বর্তমান আওয়ামী সরকারের মেয়াদ থেকে ১ বছর চলে গেলো প্রায়। হাতে আছে ৪ বছর। এই ৪ বছরের শেষ ১ বছর যাবে পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতিতে। থাকলো মোটে ৩ বছর। ৩ বছর কিন্তু খুব অল্প সময় এরকম একটি বিশাল কাজের জন্য।

কথা অনেক হয়েছে, অনেক প্রতিশ্রুতিও অনেক শোনা হয়েছে। এখন কিছু করবার পালা। এবার না হলে এই জীবনে আর হবে না যুদ্ধাপোরাধীদের বিচার কাজ।


1 টি মন্তব্য :

  1. সুন্দর সাইট আপনার। :)

    আমি চেষ্টা করছি নাম্বার নেভিগেশন যোগ করতে। কিন্তু ব্যার্থ হইছি। কোড এরর দেখায়। :(

    উত্তরমুছুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।