রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০০৮

প্রথম আলো ব্লগ নিয়ে অল্প কিছু কথা

২টি মন্তব্য :
সামহোয়্যার ইনের " বাঁধ ভাঙার আওয়াজের" মাধ্যমে বাংলা ব্লগিং এর যে সুচনা হয়েছিলো তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম আলো ব্লগের আগমন। সামহোয়্যারইনের পথ ধরে সচলায়তন, প্যাঁচালী , আমার ব্লগ, নির্মান ব্লগের আগমন। হয়তো ভবিষ্যতে আরো ব্লগিং প্লাটফরম আসবে।

প্রথম আলো ব্লগের আগমনকে আমি বাংলা ব্লগিং এর আরেকটি ধাপ এগিয়ে যাওয়া বলেই মনে করছি। এর আগমনে  নতুন ধারার সুচনার সাথে সাথে হয়তো একটি সুস্থ্য/ অসুস্হ্য প্রতিযোগীতাও শুরু হবে ব্লগগুলোর মাঝে। যে ব্লগ ব্লগারদের বেশী সুযোগ সুবিধা দেবে, স্বাধীন মত প্রকাশে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না সেই ব্লগ ততই জনপ্রিয়তা পাবে এবং টিকে যাবে। এটাই যুগের চাহিদা ও নিয়ম।

অনেকেই এর নীতিমালা সম্পর্কে কঠোর ও তীর্যক সমালোচনা করছেন। আমার নিজের কাছেও এটাকে বড্ড কঠিন ও হাস্যকর নীতিমালা মনে হয়েছে। নীতিমালা কাগজে কলমে থাকলেও এর প্রয়োগের উপরই এর সফলতা ও স্বার্থকতা নির্ভর করে। ব্লগের বিভাগীয় সম্পাদক হিসেবে মাহবুব মোর্শেদ যদি ব্যক্তিগত আক্রোশ বা পছন্দ-অপছন্দের উপর নির্ভর করে কোনো স্বীদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে তার দায়ভার একান্তই তার ও এটার উপরও ব্লগের সফলতা বা বিফলতা নির্ভর করবে। নীতিমালার ক্ষেত্রে এটা বলতে পারি, ভবিষ্যতে ব্লগারদের মতামত ও পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে এর পরিমার্জনা অবশ্য আবশ্যক।

ব্লগস্ফিয়ারের অনেকের মাঝেই প্রথম আলো ব্লগ সম্পর্কে এক ধরনের বিবমিষা ও বিতৃষ্ণা লক্ষ্য করলেও সুকৌশলে এর ভবিষ্যত প্রভাবকে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবনতা লক্ষ্য করছি, যেটা আমার চোখে লাগছে। অনেকের কাছেই ব্যক্তি মাহবুব মোর্শেদের প্রতি আক্রোশ এবং হিংসা কাজ করছে। অনেকের কাছেই ইগো সমস্যা ও প্রথম আলো ব্লগে লিখতে না পারার সম্ভাবতাও কাজ করছে। অনেকেই জিনিসটাকে পুরোপুরি ব্যক্তিগত হিসেবে নিয়ে তা সামস্ঠিক হিসেবে দাঁড় করাবার চেস্টায় রত। যেটা হাস্যকর লেগেছে।

প্রথম আলো ব্লগের কাছে সবচাইতে বড় প্রত্যাশা " মত প্রকাশের পূর্ন স্বাধীনতা"। ব্লগে দেশের রাজনীতি বা সরকারের এবং যেকোনো বিষয়ে মত প্রকাশের পূর্ন স্বাদীনতা এবং অবশ্যই সমালোচনা করার পূর্ন স্বাধীনতা থাকতে হবে। ব্লগের মাধ্যমে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সমালোচনা আসলেও সেটার প্রতি মর্যাদা দিতে হবে। এসব না করে এসব সমালোচনাকে গলাটিপে মেরে ফেলে আরেকটি অচলায়তনে পরিনত করলে সেটার ফলাফল কখনোই ভালো হবে না। ব্লগের ভবিষ্যত অনেক কিছুর উপরই নির্ভর করছে।

হাঁটি হাঁটি পায়ে পথ চলা "প্রথম আলো ব্লগের" শুভকামনা করছি। এর পেছনে যারা আছেন তাদেরও শুভকামনা।

শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০০৮

পিতা হবার অনুভূতি

কোন মন্তব্য নেই :
পিতা হবার অনুভূতি একেকজনের কাছে একেকরকম। হয়তো কারো কাছে তা আকাশের তারাকে হাতের মুঠোয় পাওয়া , হয়তোবা প্রচন্ড গরমে শীতল হাওয়ার মিস্টি মধুর প্রশান্তি। সম্ভবত পৃথিবীর কেউই এ স্বর্গীয় অনুভূতিকে লেখার ভাষায় প্রকাশ করতে পারে নি। আমার কাছে এ যেনো জীবনের আরেক অধ্যায়ের শুরু, হঠাতই বড় হয়ে যাওয়া।

বেশ ক মাস আগের কথা। টুকটাক বাজার - সদাইয়ে ব্যস্ত কাছের সুপার মার্কেটে। হঠাৎ বউয়ের ফোন " জলদি বাসা আসো "। পড়ি মরি করে বাসা আসতেই রহস্যময় হাসি, বউ বলে " বলতো কি ব্যপার ? " ।
এদিকে আমি টেনশনে অস্থির। "কোনো সমস্যা !"
"তুমি বাবা - আর আমি মা হতে যাচ্ছি।
আমি তব্দা মেরে গেলাম, আনন্দ-খুশি -স্বপ্ন মেশানো অন্যরকম এক অনুভূতি। তখন থেকেই টুকটুক করে প্রস্তুতি শুরু, হাসপাতালে রুটিন ভ্রমন - সন্তানের জন্য কেটা কাটা- প্যারেন্টিং ক্লাস ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা সেটা করতে করতে রাজ্যের সব কেনা কাটা, তার পরো মনে হয় কি যেনো বাকি রয়ে গেলো।
তবে খুব কাছের স্বজন ও বন্ধুরা ছাড়া এ খবরটি কাউকে বলা হয়নি। তার পরো কিভাবে যেনো অনেকেই জেনে গেলো।
অস্ট্রেলিয়ার বসন্তে নাকি সন্তান বেশী জন্মায়। কি জানি বাপু কেনো !

হঠাৎ রাত ১১টার দিকে বউ বল্লো " হাসপাতালে যেতে হবে " , পড়ি মরি করে হাসপাতালের দিকে ছুট লাগালাম। সব কিছু পরীক্ষা করে মিডওয়াইফ ( ধাত্রী ) বলে দেরী আছে। কি আর করা, বাড়ী ফেরত আসতে হলো। এভাবে পর পর ৩ রাতে ৩ বার হাসপাতালের দিকে যাবার পর চতুর্থবারের মতো মিডওয়াইফ সবুজ বাতি দেখালেন, এবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া যাবে।

০৮ অক্টোবর ২০০৮। দূপুরের খাবার সেরে সিগারেট মাত্র ধরিয়েছি তখনই হাসপাতাল থেকে ফোন। " তোমার বউ তোমাকে কাছে পেতে চায় "। ছুটে ডেলিভারী রুমে যাবার কিছুক্ষন পরেই আমার ছেলের জন্ম হলো, সময় তখন দূপুর ২:২৬। সব কিছুই আমার চোখের সামনে। সে এক অন্যরকম অনুভূতি। আমি কাঁদছি - মিডওয়াইফ বলছেন " মাহবুব, কাঁদো- এরকম কান্নার জীবনে খুব কমই কাঁদতে হয়" । সন্তানের নাড়ি কাটার পর ছেলেকে মায়ের কাছে তুলে দিয়ে এক ছুটে বাহিরে এসে সবাইকে ফোন ;
" আম্মু আমি বাবা হয়েছি "
" প্রিন্স তুমি চাচ্চু হয়েছো "
" মামা তুমিতো নানা হয়ে গেলে "
" বস আপনেতো চাচ্চু হয়া গেলেন "
পাশ দিয়ে যারাই যাচ্ছে তারা হয়তো অবাক হয়ে তাকিয়ে ভাবছিলো, ব্যাটা পাগল হয়ে গেলো নাকি ! ব্যটা কাঁদে কেনো ?
ছেলের কানে কানে আজান দিয়ে বল্লাম " বাবালু, অনেক বড় মানুষ হও, অনেককক বড়"।

ক্যানবেরার এক বড় ভাই বল্লেন " ওয়েলকাম টু ফাদার্স ক্লাব ", তাই তো ! বাবা হয়ে গেলাম। সত্যি ? বিশ্বেষ হয় না।
আরিফ ভাই প্রশ্ন করলেন " সুমন, অনুভূতি কেমন?"। কঠিন, অনুভূতিটা প্রকাশ করে আসলেই কঠিন।
জীবনের আরেক স্বপ্নযাত্রা সবে শুরু হলো। অনেক দ্বায়িত্ব।

শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০০৮

আমার ব্লগের নতুন প্রজন্ম

৩টি মন্তব্য :

                                                             আজলান মাহবুব দিব্য

৮ অক্টোবর, ২০০৮ @ দূপুর ২:২৬; জীবন নামক উপন্যাসের আরেকটি নতুন অধ্যায়। আসলে বাবা হবার অনুভূতিটাই অন্যরকম। কি রকম সেটা ভাষায় প্রকাশ করা একরকম দূঃসাধ্যই আমার জন্য।
ছেলের নাম রেখেছি ” আজলান মাহবুব দিব্য “, তবে আরিফ জেবতিক ভাইয়ের মতো ডানোর কৌটা থিউরী প্রয়োগ করতে হতে পারে। দাদার বাড়ী- নানার বাড়ী থেকে এতো নাম আসছে যে, সবার মন যুগাতে গেলে সে নাম পৃথিবীর কোনো ফরমেই আঁটবে না।
অন্তর্জালিকে “আমার ব্লগেই” সর্বপ্রথম আমার সন্তানের ছবিটি প্রকাশ করছি।
আমার ব্লগের প্রতি আমার একটি কমিটমেন্ট হচ্ছে, এখানে যা কিছু লিখবো সেটা অন্য কোথায় লিখবো না। টাটকা আনকোড়া পোস্ট আসবে শুধুই আমার ব্লগের জন্য। এটা “আমার ব্লগের” প্রতি আমার আরেকটি ভালোবাসার চিহ্ন।
আমার ব্লগে টুটুল ভাইয়ের পোস্ট পড়ে আমি আপ্লুত, ধন্যবাদ বস।
তবে আপনার বিবাহ কোনদিন ?
পোস্টে যারা শুভকামনা জানিয়েছেন তাদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ।
সুশান্তদা আপনার দাবীর কাছে আমি পরাজিত, সন্তানের ছবি দিয়ে পোস্ট দিলাম।
অচুদা আপনার প্রতি আমি মোটেও বিরক্ত নই। মাঝে সাজে ক্ষেপে গেলেও পরে সেটা উপভোগ করি।

একই সাথে আমার ব্লগে প্রকাশিত