বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০০৮

ক্যানবেরার খেরোখাতা ১

ব্লগ জীবনের শুরুতে অনেকের দেখাদেখি আমিও প্রবাস জীবন নিয়ে কিছু লেখার চেস্টা করেছিলাম। ভেবেছিলাম অন্যসব লেখার মাঝে মাঝে নিত্যকার কিছু ঘটনা,অনুভূতি ব্লগের পাতায় লিখে রাখবো। তবে অস্থিরমনা অলস মানুষদের যা হয় আমারও সেই একই দশা। লেখা আর হয়ে উঠেনি। ভাবছি এখন থেকে আবঝাব কিছু লিখবো।



১.


গত ২২ এপ্রিল ছিলো জন্মদিন। সাধারনত বিশেষ কোন দিন তারিখ আমার মনে থাকে না, সেটা আমার জন্মদিন হলেও। বেশ কমাস আগে নিজের বাগদান দিবসের কথা ভুলে গিয়ে বউয়ের ধাতানি খেয়েছিলাম কিনা সেটা পাঠকদের বলে বিরক্ত করতে চাই না। এবারে অবশ্য ভুলতে চাইলেও পারিনি।

সকালে অফিসের গিয়ে কফির মগটা নিয়ে ব্লগের পাতা খুলেই দেখি ইরতেজার পোস্ট! আরে সেটা আবার আমার জন্মদিনকে নিয়ে !! কি লজ্জার কথা। এই বুড়ো বয়সে এই সব কি ? সবাইকে দেখলাম শুভকামনা জানাতে। আমি অবাক হয়ে দেখছিলাম আর সবার ভালোবাসার প্রকাশ দেখতে পেয়ে আবেগাপ্লুত হচ্ছিলাম। ধন্যবাদ ইরতেজা।

এর পর আমাগো প্রত্যুর পোস্ট, সেইরকম আবেগছোঁয়া। ধন্যবাদ বস। সত্যিকারের বন্ধু বলতে যা বোঝায় সেটা আপনি।

এরপর আমাকে নিয়ে কৌশিকদার ভোদকা কাহিনী। কৌশিকদা নেক্সট টাইম দেশে গেলে সবচাইতে ভালো ব্রান্ডের ভোদকা আপনার জন্য আনবোই আনবো।ভদ্রলোকের এক জবান।

আমার জন্মদিনকে নিয়ে স্ট্যানলি কুব্রিকের পোস্টখানি সেইরকম ভালো লেগেছে। পছন্দের পরশ ছোঁয়া। আমাকে নিয়ে অচেনা মানুষটির ভালোবাসা অবাক করেছে। ধন্যবাদ। গুড অন ইয়া মাইট।

প্রতিটি পোস্টেই অসংখ্য মানুষের শুভকামনা পেয়েছি। ব্লগে এত এত মানুষ আমাকে পছন্দ করে সেটা আগে জানতাম না। সবাইকেই অন্তর থেকে ধন্যবাদ।

ফেসবুকে অনেকের মেইল/ওয়ালে শুভকামনা দেখছিলাম আর মনে মনে অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছিলো। মানুষের ভালোবাসা কি জিনিস সেটা যে পেয়েছে সে ছাড়া অন্যকেউ উপলব্ধি করতে পারবে না। আমি অভিভূত।

সেলফোনে সংক্ষিপ্ত বার্তাগুলো আসছিলো আর মনটা ভালোলাগায় ভরে যাচ্ছিলো।

জন্মদিনের পুরোটাই অফিসে বসে ঝিমিয়াছি, কাজে কাজ কিছুই করি নাই। বিকেলে বাসা এসেই রান্নার সেইরকম আয়োজন। টোনা-টুনি মিলেই জন্মদিন উদযাপন। তেমন বিশাল কিছু আমি কখনোই করি না নিজের জন্য।
২.


ক্যানবেরায় আজ অলিম্পক টর্চ র‌্যালি হয়ে গেলো। অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র ক্যানবেরাতেই টর্চ ‌র‌্যালি হয়েছে, টর্চ এর পর যাবে জাপান। বেশ কদিন ধরেই সাজ সাজ রব। মুলত নিরাপত্তা নিয়েই যত মাথা ব্যাথা। তবে সমস্যা হয়নি যতটা হয়েছে অন্যসব দেশে। অস্ট্রেলিয়ার অন্যসব শহর হতে আসা বাসের পর বাস ভরা চায়নিজদের কাছে তিব্বতি ও তাদের সমর্থকরা সংখ্যায় ছিলো নগন্য, সাথে যুক্ত হয়েছিলো পুলিশের প্রচন্ড কড়াকড়ি। তারপরোও সামন্য কিছু আন্দোলন এবং ৮ জন গ্রেপ্তার। ভাবছি তিব্বতিদের এই সব প্রতিবাদ কি চায়নার প্রতি পশ্চিমাদের আতংক থেকে উদ্ভুত যেখানে তিব্বতিরা খেলার পুতুল।

আমার বাসার খুব কাছেই টর্চ র‌্যালি শুরু ও শেষ হবার জায়গা। এলার্ম সেট করেছিলাম খুব সকালেই। কিন্তু যাওয়া হলো না। টর্চ লাতটিং সেরেমনি, ফ্রি কম‌্যুনিটি ব্রেকফাস্ট, চায়নিজ ড্যান্স ট্রুপের নাচগান, বিশাল সব রঙ চঙে বেলুন, ওপেন এয়ার কনসার্ট, ফেস পেইন্টিং। কাজ হতে ছুটি নেয়া ছিলো , কিন্তু যাওয়া হলো না।গত রাত থেকেই শরীরটা ম্যাজ ম্যাজ করছিলো। রাতে জ্বর। সকালে আর ঘুম থেকে উঠতেই ইচ্ছে হলো না। শালা এটাকেই বলে দূঃভাগ্য।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।