রবিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০০৮

২য় বিবাহ বার্ষিকীর সালতামামী


২০০৬ এর ১০ ফেব্রুয়ারীর এক রোদ জ্বলা দুপূরে যে স্বপ্ন নিয়ে যে জীবন শুরু করেছিলাম আমরা দুজন তার দু বছর পুর্তি হোলো আজ। ঠিক এ মুহুর্তে ভাবছি, দুবছর আগে ঠিক এ সময়টুকুতে কি করছিলাম আমি বা আমার জীবন সংগিনী ! প্রথম বার্ষিকীতে দুজন পৃথিবীর দু গোলার্ধে থাকায় বিচ্ছেদের অসহ্য জ্বালায় জ্বলতে হলেও এবার আমার একই সাথে, একই ছাদের নীচে ছোট্ট এক বাসায় স্বপ্নের জাল বুননে নিম্গ্ন।

হাঁ, আজ আমাদের ২য় বিবাহ বার্ষিকী।

আজ তেমন কিছুই করা হলো না।
কিছুটা রেখে দিয়েছি আগামী বুধবারের জন্য। বুধবার যে পহেলা ফাল্গুন। হয়তো অস্ট্রেলিয়ায় আগুন জ্বালাবে না কোনো কৃষ্নচুড়া, হয়তো ‌ক্যাঙারুর দেশে বাসন্তি রঙের শাড়িপরা মেয়েদের কলকাকলী মিলবে না, তবুও বুধবার আমাদের পহেলা ফাল্গুন, বসন্ত বরণ। ফুল ফুটুক আর না ফুটুক সে দিন আমাদের বসন্ত।

প্রথমে খুব ইচ্ছে ছিলো বৃহস্পতিবার ভ্যালেন্টাইনস ডেতে এক সাথে কোন এক রেস্টুরেন্টে আলো আঁধারীতে একসাথে পেট পুজোয় নামবো, পরে অগাবগা এই সুমন বুঝতে পারলো সে দিন সব রেস্টুরেন্ট কপোত-কপোতিদের দ্বারা দখলকৃত!

আজও মালটিকালচারাল ফেস্টিভ্যাল এ গিয়েছি।
আজ ছিলো গ্রীক উৎসব।
LOUKOUMADES দিয়ে দুপুরের খাবার শুরু , পুর্তগীজ ফ্লেম গ্রীল চিকেন দ্বারা শেষ।
LOUKOUMADES হলো এক ধরনের গ্রীক মিস্টি, আগুন গরম তেলে ভাজা পাফ, পরে মধুতে ডোবানো, ওপরে ওয়ালনাট এবং দারুচিনি ছেটানো অসাধারন এক মিস্টি।

সিয়েরি লিওন ও ঘানার ড্রামের ডুম ডুম শব্দ শব্দে মনে হয়েছিলো আমি যেনো সেই আফ্রিকায় চলে গিয়েছি। সামোয়ান এক মেয়ের গান শুনে নস্টালজিক হয়ে পড়েছিলাম বেশ। ভাষার ব্যবধান থাকলেও সুর সে ব্যবধান ঘুছিয়ে দেয় সেটা বুঝতে পারলাম। জাপানিদের যুদ্ধ নৃত্য রক্তে আগুন দেবার মতো। বুলগেরিয়ানদের নাচ-গান দেখে তাদের মাঝে অটোমান সংস্কৃতির প্রভাব যে এখনো রয়েছে সেটা বোঝা যায়। শ্রীলংকানদের নাচ দেখে ফেরার পথে এক পলক চোখ বোলাবার চেষ্টা করলাম সুন্দরী গ্রিক তরুনীদের দিকে। সাথে বউ থাকাতে আর-চোখেই দেখতে হলো।

বলাই হয়নি, বাসার খুব কাছেই প্রতি রোববার একটি স্থানীয় বাজার বসে " ওল্ড বাস ডিপো মার্কেট"।স্থানীয় ক্যানবেরানদের হাতের কাজ ও ছোট্ট ব্যবসায়ীরা তাদের পসারা সাজিয়ে বসেন সেখানে। আজ সেখানে ছিলো ইন্টারন্যাশনাল ডে। সেখানেই একটু ঢুঁ মেরেছি। ইচ্ছে ছিলো কিছু কেনার তবে কেনা হয়নি।

বাসায় এখন রান্না হচ্ছে পোলাও-মুরগী (বার্ড ফ্লু মুক্ত)-ছাগলের মাংস। খাবারের সুবাস আমাকে পাগল করে দিচ্ছে। তর সইছে না। আর পারছি না বসে থাকতে।

আল বিদা।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।