বুধবার, ১৮ এপ্রিল, ২০০৭

মফিজের ভারত ভ্রমন- 3 (আলিগড়)


মহা সমস্যায় পড়ে গেলাম আলিগড় এসেই। আমার বন্ধু যে ঠিকানা নিয়ে এসেছিল তা ছিল ভুল ! কি আর করা, এ বাসা সে বাসা করে করে অবশেষে তার ঠিকানা খুঁজে পেলাম 2 ঘন্টা পর।আমারটা অবশ্য পেতে তেমন সমস্যা হয়নি।


বেশি দিন অবশ্য থাকিনি আলিগড় এ। প্রথম দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসে ভর্তির জন্য গেলাম, আমার ভর্তির সুযোগ মিলেছিল ফিজিক্সে এবং আমার কোনো আগ্রহই ছিল না ফিজিক্সে পড়াশোনা করার। তাই ভর্তি না হয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলাম। তবে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটিটা বেশ লেগেছিল। কেমন যেনো মুঘল মুঘল ভাব আছে, সব কিছুতেই প্রাচীনত্ব। বিলডিং গুলোতে ইসলামিক স্তাপত্যেকলার ছাপ।

প্রচন্ড গরম ছিল সে সময়। তাপমাত্রা 40-45 এ নাচা নাচি করছিল।

ম্যাংগো শেক ছিল শায়েস্তে খাঁর আমলের মতো সস্তা ! 5 রুপিতে বিশাল এক গ্লাস ! চিন্তা করলে এখনো অবাক লাগে। প্রচন্ড গরমে বরফ শীতল ম্যাংগো শেক ছিল আসাধারন।


আলিগড়েই জীবনে প্রথম বড় পদর্ায় হিন্দি মুভি দেখি, "বডর্ার " । শেষ দৃশ্যে ইন্ডিয়ান ফাইটারের আক্রমনে যখন পাকিস্তানীদের ট্যাংকগুলো উড়ে যাচ্ছিল তখন সে কি হাত তালি , যেনো দর্শক পারলে তখনি যুদ্ধে চলে যায় !

সন্ধ্যায় রাস্তার পাশে ধাবায় বসে হেবি আড্ডা দিয়েছি যে কদিন ছিলাম আলিগড়ে। চায়ের পর চা, সিগারেটের পর সিগারেট , সে এক অন্যরকম মজা।খাবার দাবারের দাম বেশ সস্তাই মনে হয়েছিল।আলিগড়ে তেমন একটা ঘুরে বেড়াইনি।

পুরোনো আলিগড় ফোর্ট আলিগড় আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি আর পুরোনো শহর,এই যা।

আলিগড়ের মানুষ দের কিছুটা রক্ষনশীল মনে হয়েছিল। ইউনিভার্সিটি তেও বেশ রক্ষনশীলতা দেখতে পেয়েছিলাম। একটা মজার কথা বল্লে সবাই বুঝতে পারবে, যতই বৃষ্টি হোক আর যতই রোদ উঠুক ছেলেদের ছাতা মাথায় দেয়া যাবে না !!মজার না ?

বাংলাদেশী ছাত্রদের মধ্যে দেশের মতো দলাদলি দেখেছি ওখানেও। ঢাকার ছেলে বনাম উত্তরবংগ গ্রপিং ছিল চরম। একবার নাকি তা পুলিশ কেসে গড়িয়ে ছিল। প্রচুর ছেলেকে ফেনসিডিলে আসক্ত দেখে খারাপ লেগেছিল । তবে বাংলাদেশর অনেক ছেলেই রেজালট ভালো করতো। আলিগড়েই প্রথম 24 ঘন্টা লাইব্ররী খোলা থাকতে দেখে অবাক হয়েছিলাম।

আলিগড়ের স্থানীয় কারো সাথে মেশার সুযোগ হয়নি। মোটের উপর আলিগড়ে ছিলাম 5/6 দিন।

নেক্সট ডেসটিনেশন ঃ আগ্রা ।

--------------

ছবি ঃ আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য পেলে খুশি হবো, সে যত তিক্তই হোক না কেনো।
পোস্টে মন্তব্যের দায়-দায়িত্ব একান্তই মন্তব্যকারীর। মন্তব্য মডারেশন আমি করি না, তবে অগ্রহনযোগ্য ( আমার বিবেচনায় ) কোনো মন্তব্য আসলে তা মুছে দেয়া হবে সহাস্য চিত্তে।